Post Updated at 8 May, 2024 – 9:42 AM

মুসাফির একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ : সফরকারী। এর বিপরীত শব্দ মুকিম, যার অর্থ (বাড়িতে বা নিজ এলাকায়) অবস্থানকারী। তবে যে কোনো দূরত্বে কেউ সফর করলেই তাকে শরিয়তের পরিভাষায় মুসাফির বলা হবে না। শরিয়তের আলোকে মুসাফির তিনি, যিনি নিজ গ্রাম বা শহর থেকে কমপক্ষে ৭৭.২৫ কিলোমিটার দূরে কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। মুসাফির থাকাকালে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো দুই রাকাত পড়তে হয় এবং যদি কষ্ট হয়, তবে মুসাফিরের জন্য রমজান মাসের রোজা না রেখে পরবর্তীতে কাজা করার অবকাশ আছে।

মুসাফির থাকার সময়সীমা

নিজ এলাকা থেকে কমপক্ষে ৭৭.২৫ কিলোমিটার দূরের গন্তব্যে কেউ যখন সফর শুরু করে তখন নিজ এলাকার সীমা অতিক্রম করার পর থেকে গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত সে মুসাফির থাকবে। সফর শুরু হবে নিজ গ্রাম বা শহরের সীমা অতিক্রম করার পর এবং গন্তব্য এলাকার (গ্রাম বা শহরের) সীমা পর্যন্ত দূরত্বের হিসাব করা হবে। সফরে শুরু ও গন্তব্য যাই হোক না কেন, যেমন কেউ বাড়ি থেকে চাকরির উদ্দেশ্যে দূরে কোথাও যাচ্ছে অথবা ঘুরাফেরার উদ্দেশ্যে, কিংবা চাকরিস্থল থেকে বাড়িতে ফিরছে, হতে পারে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে যাচ্ছে, যদি দুই এলাকার দূরত্ব ৭৭.২৫ কিলোমিটার হয় তবে পথে সে মুসাফির। সফর চলাকালীন মুসাফির অবস্থায় অথবা মুকিম অবস্থায় যানবাহনে অনেক সময়ই আমাদেরকে নামাজ পড়তে হয়। আমাদের ব্লগের এই পোস্ট থেকে যানবাহনে তথা বাসে, ট্রেনে, বিমানে ইত্যাদি যানবাহনে নামাজ আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাবে।

গন্তব্য এলাকায় গিয়ে যদি কেউ কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত করে তাহলে সেখানে সে মুকিম হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যদি পনের দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করে তাহলে সেখানে অবস্থানের পূর্ণ সময়ই সে মুসাফির।

কেউ কোথাও গিয়ে প্রথমে পনের দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করল, কিন্তু পরবর্তীতে তার সেখানে আরও কয়েকদিন থাকার প্রয়োজন দেখা দিল, তখন আবার সে পনের দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করল, এমন হলে পুরো সময়ই সে মুসাফির। এমনকি যদি এভাবে সময় বাড়াতে বাড়াতে বছরও হয়ে যায় তবুও সে মুসাফির। আর যদি একসঙ্গে পনের দিন থাকার নিয়ত করে তাহলে মুসাফিরের হুকুম বাতিল হয়ে যাবে এবং তখন থেকে সে মুকিম হিসেবে বিবেচিত হবে।

নিজের বাড়ি কিংবা বাসস্থানে পনের দিনের কম সময় থাকলেও মুকিম। একইভাবে লেখাপড়া চাকরিবাকরি কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে যদি কারও ভিন্ন কোনো নির্ধারিত থাকার জায়গা থাকে তাহলে সেখানেও সে মুকিম, সেখানে সে পনের দিনের কম থাকলেও মুকিম।

কোনো একটি গ্রামে বা একটি শহরে সফরে গিয়ে সেখানকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে মিলিয়েও যদি কেউ একনাগাড়ে পনের দিন থাকার নিয়ত করে তাহলে তাকে মুকিম হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।

আর যদি দুই গ্রাম বা দুই শহর কিংবা গ্রাম-শহর মিলিয়ে পনের দিন থাকার নিয়ত করে তাহলে মুসাফির বিবেচিত হবে।

বিয়ের পর বাবার বাড়িতে মেয়েদের বিধান

বিয়ের পর মেয়েদেরকে যখন উঠিয়ে নেয়া হয় তখন থেকে শ্বশুরালয়ই তার মূল নিবাস হিসেবে গণ্য হয়। তাই যদি কারও পিতৃলয় এবং শ্বশুরালয়ের মাঝে সফর পরিমাণ দূরত্ব থাকে, তাহলে বাবার বাড়িতে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্যে গেলে সে মুসাফির-ই থাকবে। একসঙ্গে এর বেশি সময় থাকার নিয়ত করলে তখন থেকে সে মুকিম।

সফরের অবস্থায় নামাজের বিধান জানতে  এ লেখাটি পড়ুন।

Comments
  1. Good article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ