Post Updated at 11 Apr, 2024 – 9:42 PM

রামাদানের রোজা ছাড়াও সারা বছর অনেকগুলো নফল রোজা রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম ফজিলতপূর্ণ নফল রোজা হচ্ছে আইয়ামে বীযের রোজা। প্রতি মাসে ৩ দিন আইয়ামে বিযের রোজা রাখলে তাতে পুরো মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। নবীজি (সা) সারা বছর এই রোজা রাখতেন। এর থেকে আইয়ামে বীজের ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আজকের এই পোস্টে আইয়ামে বীজের রোজা কবে, এর ফজিলত, বিধান ও মাসআলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব ইনশাআল্লাহ!

এ মাসের আইয়ামে বীজের রোজার তারিখ

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের তথা হিজরি ১৪৪৫ এর শাওয়াল মাস শুরু হয়েছে ১১ এপ্রিল ২০২৪ বৃহস্পতিবার থেকে। সে হিসাবে এ মাসের আইয়ামে বীজের ৩টি রোজা রাখতে হবে যথাক্রমে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার। অর্থাৎ ২২ তারিখ সোমবার দিবাগত রাতে সাহরি খেয়ে মঙ্গলবার থেকে রোজা শুরু করতে হবে।

 

রমজানের রোজা রাখার পর কেউ শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব দান করেন। তাই আসুন আইয়ামে বীজের ৩টি রোজার সাথে আরো অন্তত ৩টি রোজা রেখে শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পূর্ণ করি। কেউ যদি আইয়ামে বীজের ৩টি ও অপর ৬ দিনে ৬টি রোজা মোট ৯টি রোজা রাখেন তাহলে সেটি তো আরো ভাল!

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত ও প্রাসঙ্গিক মাসআলা জানতে আমাদের ব্লগের এই পোস্টটি পড়তে পারেন

আইয়ামে বীজের রোজা কাকে বলে? আইয়ামে বীজের রোজা কবে?

আইয়ামে বীজ আরবি দু’টি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। আইয়ামে অর্থঃ দিবসসমূহ। আর বীজ অর্থঃ শুভ্র, সাদা, শ্বেত, খাঁটি, নির্ভেজাল।

প্রতি হিজরি মাস বা চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীজ বলা হয়। কেননা এই তিনদিনের রাতের চাঁদ সবচেয়ে বেশি আলোকজ্জল বা শ্বেত-শুভ্র থাকে। আইয়ামে বীজ বলতে বুঝানো হয় চান্দ্র মাসের সবচেয়ে শুভ্র বা আলোকজ্জল তিনটি রাতের সাথে সংশ্লিষ্ট দিনকে।

আমরা জানি হিজরি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তাই প্রতি মাসের আইয়ামে বীজের রোজার তারিখ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়ে থাকে। আমাদের দেশের অনেকে না জানা বা না বুঝার কারণে আইয়ামে বীজের রোজা রাখেন কাগজে ছাপানো ক্যালেন্ডারে থাকা আনুমানিক হিজরি তারিখ হিসাবে। যা সঠিক বা ভুল উভয়টিই হতে পারে। অর্থাৎ ইংরেজি বছরের শুরুতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে ক্যালেন্ডার প্রকাশিত হয় সেখানে হিজরি তারিখ থাকে অনুমান নির্ভর। প্রতিটি ক্যালেন্ডারেই উল্লেখ থাকে যে, হিজরি তারিখগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তাই আমরা কাগজে ছাপানো ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভর করে আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে তা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আমাদের উচিত হিজরি মাসের চাঁদ ওঠার খবরের সাথে নিয়মিত আপডেট থাকা।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতি মাসে চাঁদ দেখা যাওয়ার ঘোষণা তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে থাকে। আর আপনার জীবনকে আরেকটু সহজ করতে ব্যবহার করতে পারেন আমাদের ডেভেলপ করা Muslims Day Android App. এই অ্যাপে আমরা প্রতি মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর নোটিফিকেশন আকারে পাঠিয়ে থাকি। পাশাপাশি অ্যাপে নিয়মিত হিজরি তারিখ আপডেট করা হয়। আমাদের অ্যাপ থেকে নিয়মিত ভাবে সারা বছর আইয়ামে বীজের রোজার রিমাইন্ডার পাঠানো হয় নোটিফিকেশন আকারে। তাই আপনি যদি আইয়ামে বীদ এর রোজা রাখতে চান তাহলে মুসলিমস ডে অ্যাপটি আপনাকে সারা বছর ইনশাআল্লাহ রোজা রাখতে সহযোগিতা করবে। আর আইয়ামে বীজের রোজার সাহরি ও ইফতারের সময়ও আমাদের অ্যাপ থেকেই জানা যাবে।

আইয়ামে বীজের রোজার বিধান

আইয়্যামে বীজের রোজা আমাদের উপর ফরজ নয়। এটি নফল রোজা। অর্থাৎ আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে সওয়াব আছে, কিন্তু না রাখলে গুনাহ নাই। ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের উচিত নফল ইবাদতেও মনযোগ দেয়া। কারণ ফরজ পালন করতে গিয়ে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি হলে বা কোনো ফরজ অনিচ্ছাকৃত ভাবে ছুটে গেলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের নফল আমলগুলোর মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করে দিতে পারেন। তাই বছরের বিভিন্ন সময়ে যে সকল নফল রোজা রয়েছে সেগুলো আদায়ে যত্নবান হওয়া উচিত।

অন্যান্য রোজার মত আইয়ামে বীজের রোজার ক্ষেত্রেও নিয়ত করা জরুরি। নিয়ত অর্থ অন্তর থেকে ইচ্ছা করা বা সংকল্প করা। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পাঠ করা জরুরি নয়। রোজার নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেন

আইয়ামে বীজের রোজার ফজিলত

প্রতি মাসে ৩ দিন বা আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে তাতে সারা মাস রোজা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। নিয়মিত ভাবে আইয়ামে বীজের ৩ দিন রোজা রাখা হচ্ছে সারা জীবন রোজা রাখার সমতূল্য। কেননা যে কোনো নেক আমল আল্লাহ তায়ালা ১০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকেন। আমরা যদি প্রতি মাসে নিয়মিত ভাবে ৩ দিন রোজা রাখি তাহলে ৩x১০=৩০ দিন রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। অর্থাৎ আমরা যদি প্রতি মাসেই ৩ দিন করে রোজা রাখি পুরো মাসটাই রোজা রাখার সওয়াব পাব। আর যত দিন বেঁচে আছি এভাবে রোজা রাখতে থাকলে আমরা ইনশাআল্লাহ সারা জীবন রোজা রাখার সওয়াব পাব। সুবহানাল্লাহ!

অনেক আলেম বলে থাকেন, কোনো একটা আমল কবুল হওয়ার আলামত হচ্ছে সে আমলটির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। আমরা যদি রমজানের রোজার পাশাপাশি অন্যান্য মাসেও কিছু নফল রোজা রাখতে পারি তাহলে সেটি হতে পারে আমাদের রমজানের রোজা কবুল হওয়ার আলামত। আর রমজানের সবচেয়ে বড় প্রশিক্ষণ হচ্ছে রোজা। রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি তাক্বওয়া, ভয় ও আনুগত্য করা। রোজা এমন একটা ইবাদত যা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই রাখা হয়। আর আল্লাহ নিজে এর প্রতিদান দিবেন। তাই রমজানের রোজার যে প্রশিক্ষণ আমরা নিয়েছি, সেটা সারা বছর কিছু কিছু করে প্র্যাক্টিস চলমান রাখা উচিত। রমজানে যেভাবে আমরা রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহমুখী হই। একই ভাবে আইয়ামে বীজের রোজার মাধ্যমেও প্রতি মাসে ৩টা দিন আমরা একান্তই আল্লাহর জন্য ৩টা রোজা রাখতে পারি।

পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবারও নবীজি (সা) গুরুত্ব সহকারে নিয়মিত রোজা রাখতেন। এখানে ক্লিক করে জেনে নিন নবীজি (সা) কেন প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন?

এত অল্প পরিশ্রমে আল্লাহ আমাদেরকে এত দিবেন! আমাদের মধ্যে কে এমন আছেন যিনি এই সুবর্ণ সুযোগকে হেলায় নষ্ট করবেন? আমার ধারণা এই লেখাটি পড়ার পর ইনশাআল্লাহ আপনি বাকি জীবন যতদিন সুস্থ্য আছেন নিয়মিত এই পুণ্যময় আমলটি করেই যাবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাসে ৩ দিন রোজা রাখার মাধ্যমে সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ হাদীস ১

ইবনু মিলহান আল-ক্বায়সী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আইয়ামে বীয অর্থৎ চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সওম পালনে আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এগুলো সারা বছর সওম রাখার সমতুল্য।
– আবু দাউদ ২৪৪৯, হাদীসের মানঃ সহীহ

আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ হাদীস ২

জারীর ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ
প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত।
– নাসায়ী ২৪২০, হাদীসের মানঃ হাসান

আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ফজিলতঃ হাদীস ৩

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন,
প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দুই রাকাত সালাতুদ দুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা।
– বুখারী ১৯৮১, হাদীসের মানঃ সহীহ

প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৪

‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি মাসের প্রথম দিকে তিনদিন সওম পালন করতেন।

– আবু দাউদ ২৪৫০, হাদীসের মানঃ হাসান

প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৫

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ

হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সালাত আদায় করে থাকো। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন করো আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আরো বেশী শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহ্‌র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম পালন করো, এর হতে বেশী করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্‌র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম !
– বুখারী ১৯৭৫, হাদীসের মানঃ সহীহ

প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৬

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন একজন স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে,
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্জ মাসের নয় দিন, আশুরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম পালন করতেন-মাসের প্রথম সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার।
– সুনানে নাসায়ী ২৪১৯, হাদীসের মানঃ সহীহ

আইয়ামে বীজ বা নফল রোজা সম্পর্কে কয়েকটি মাসআলা

  1. রমজানের রোজার মত আইয়ামে বীজের রোজার ক্ষেত্রেও সাহরি খাওয়া সুন্নাহ। কিন্তু সাহরি খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেকে ধারণা করে থাকেন সাহরি খাওয়া ছাড়া রোজা হয় না। সে ধারণাটি ভুল। সাহরির জন্য পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়। এক ঢোক পানি পান করলেও তাতে সাহরির সুন্নাহ আদায় হয়ে যাবে।
  2. আইয়ামে বীজ সহ যে কোনো নফল রোজার নিয়ত বা সংকল্প করা যাবে সর্বোচ্চ দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত। মধ্যভাগ হিসাব করতে হবে সাহরির শেষ সময় থেকে ইফতারের সময় পর্যন্ত যে সময় হয় তার অর্ধেক পর্যন্ত। সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত যদি ১৪ ঘন্টা সময় হয়ে থাকে তাহলে সাহরির শেষ সময়ের পর থেকে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত নিয়ত করলে রোজা শুদ্ধ হবে। এর পরে নিয়ত করলে রোজা হবে না। সাহরির পরে এই ৭ ঘন্টার মধ্যে নিয়ত করলেও শর্ত হচ্ছে সাহরি থেকে এই নিয়ত করার সময়ের মধ্যে রোজা ভঙ্গ হওয়ার মত কোনো কাজ করা যাবে না। অনেকের ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে সাহরির সময় উঠতে পারে নি পরে ফজরের সময় উঠেছে বা আরো পরে উঠেছে। এরপর চিন্তা করল আজকের দিনটি রোজা রেখে ফেলব। এরকম পরিস্থিতিতে কখন রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম সেটা হিসাব করে বের করা জরুরি। সহজ কথায় রোজাটি অর্ধেক পূর্ণ হওয়ার আগেই নিয়ত করতে হবে।
  3. আইয়ামে বীজের তারিখগুলোতে নারীদের পিরিয়ড চললে তখন ঐ দিনগুলোতে রোজা রাখা যাবে না। নারী-পুরুষ যে কারোরই যে কোনো সমস্যার জন্য আইয়ামে বীজের ৩ দিন রোজা না রাখতে পারলে মাসের অন্য যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলেও সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। কেননা মাসের যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলে সারা মাসের সওয়াব পাওয়া যাবে এটাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
  4. আইয়ামে বীজ বা কোনো নফল রোজা রাখা অবস্থায় যদি নারীদের পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে ঐ রোজাটি ছেড়ে দিবে। দিনের বাকি অংশ স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার কারণে নফল রোজা ভেঙে ফেললে দিনের বাকি অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি নয়। শুধুমাত্র রমজান মাসের ক্ষেত্রে রোজা অবস্থায় পিরিয়ড শুরু হলে ঐদিনটি ইফতার পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এটা রমজান মাসের সম্মানে। এরপর রমজানের বাকি দিনগুলোতে পিরিয়ড চলা অবস্থায় স্বাভাবিক পানাহার করতে পারবে। কিন্তু নফল রোজা রাখা অবস্থায় পিরিয়ড শুরু হলে তখন থেকেই পানাহার করা যাবে।
  5. আইয়ামে বীজের কোনো একটি রোজা শুরু করার পর যদি কোনো কারণে ভেঙে ফেলা হয় তাহলে পরবর্তীতে ঐ রোজাটির কাজা আদায় করতে হবে। রোজা শুরু করার পর ভেঙে ফেললে ঐ রোজার কাজা আদায় করা ওয়াজিব হয়।
  6. জিলহজ্জ মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত (ঈদ উল আযহা ও তার পর ৩ দিন) রোজা রাখা হারাম। তাই জিলহজ্জ মাসের ১৩ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা রাখা যাবে না। জিলহজ্জের ১০ থেকে ১৩ তারিখ ব্যতীত অন্য যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলেও সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে।
  7. আইয়ামে বীজের ৩ দিনের মধ্যে শুক্রবার পড়লে অনেকে দ্বিধান্বিত থাকেন যে শুক্রবার রোজা রাখা যাবে কিনা। হাদীস শরীফে শুধুমাত্র শুক্রবারকে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে (হারাম করা হয় নি, এটা মাকরুহে তানযিহী)। আর যদি শুক্রবারের সাথে আগে-পরে একদিন রোজা রাখা হয় তাহলে শুক্রবার রোজা রাখাতে কোনো অসুবিধা নাই। এক্ষেত্রে আগের নিরুৎসাহ দেয়ার হুকুম আরোপিত হবে না। একই ভাবে শুক্রবার যদি অন্য কোনো বিশেষ নফল রোজার দিন হয়, যেমনঃ আরাফার দিন বা আশুরার দিন। সেক্ষেত্রেও শুক্রবার রোজা রাখাতে কোনো অসুবিধা নাই।
আল্লাহ আমাদের সকলকে প্রতি চান্দ্র মাসের মাঝের তিন দিন আইয়ামে বীজের সিয়াম অথবা মাসের যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমীন।
দাওয়াহ এর নিয়তে চাইলে পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আমাদের কারো মাধ্যমে উক্ত আমলটি কেউ শুরু করলে ইনশাআল্লাহ আপনি এর দ্বারা সাদকায়ে জারিয়ার সওয়াব পেতে থাকবেন।
Comments
  1. Good advice

  2. ধন্যবাদ জানান, আল্লাহ্ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুক।

  3. Allahu Akbar

  4. আলহামদুলিল্লাহ

  5. আলহামদুলিল্লাহ। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ইনশাআল্লাহ এই হাদিস মতো আমল করার এবং আইয়াম বীজের সিয়াম পালন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।আমাদের মুসলিম ভাই বোনদের সবাই কে এই সিয়াম পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

  6. Masaallah onk sundor post

  7. আসসালামুয়ালাইকুম ভাই । নফল রোজা ভঙ্গ করলে কি কাযা করতে হয়?

    1. জ্বি, রোজা শুরু করার পর কোনো কারণে ভঙ্গ করলে কাজা করতে হবে

  8. Alhamdulillah..

  9. জাযাকাল্লাহ খয়রান

  10. Shawaler roja rakhar sathe Aiyame Bijer tarikh mile gace….ekhetre ki aiyame bijer roja gulo ki alada kore abar rakhte hobe?

    1. আইয়ামে বীজ ও শাওয়ালের রোজা একই দিনে রাখা হলে ইনশাআল্লাহ উভয়টির সওয়াব আমরা পেয়ে যাব। তবে আপনি আলাদা আলাদা রাখতে চাইলেও রাখতে পারেন। এতে বেশি রোজা রাখা হবে, অবশ্যই এর জন্য বেশি প্রতিদান পাওয়া যাবে।

  11. Alhamdulillah

  12. jajakallaho Khairan

  13. আমি ও প্রতি সোম ও বৃহঃবার রোজা রাখি,গত ৩ বছর যাবত,আর আইয়্যামের রোজা রাখার নিয়ত করছি,আজ থেকে,ইনশাল্লাহ

  14. চান্দ্র মাসের দিন গননা শুরু হবে সূর্য অস্তের পর থেকে কিন্তু app এ তা দেখতে পাই না।
    দুই আগে জানিয়ে দিলে খুব ভাল হয় ।

    1. অ্যাপের সেটিংস থেকে সূর্যাস্তের সাথে সাথে হিজরি তারিখ পরিবর্তনের ব্যবস্থা রয়েছে। কাইন্ডলি অ্যাপের সেটিংসটি চেক করুন।

  15. খুবই উপকারী ও অনুসরণীয় আলোচনা। জাজাকাল্লাহ খাইরান।

  16. আসসালামু আলাইকুম
    কুইজ এটাতে কিভাবে জয়েন করবো,,,কোন নোটিফিকেশন আসবে কি ফোনে,, কুইজের জন্য,,,

  17. Very good

  18. Very good

  19. আসসালামু আলাইকুম। আইয়ামে বীজ এর রোজা আর কাজা রোজার নিয়ত কি এক সাথে করা যাবে? জীবনে কত রোজা কাজা হয়ে গেছে এক আল্লাহ পাক জানেন। এখন কি উপায়??

    1. ওয়াআলাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
      আইয়ামে বীজের নফল রোজা রাখতে চাইলে স্বতন্ত্রভাবে রাখুন। কাজা রোজার সঙ্গে মিলিয়ে নয়।
      আর কাজা রোজার ক্ষেত্রে আপনার করণীয় হলো, আপনি সাধ্যমতো কাজা রোজা আদায় করতে থাকুন। যখন আপনার কাছে মনে হবে, কাজা রোজা আদায় করা শেষ হয়েছে, তখন আর রাখতে হবে না। এর আগপর্যন্ত কাজা আদায় করতে থাকুন। আর প্রতিটি কাজা রোজা আদায়ের ক্ষেত্রে এভাবে নিয়ত করুন- আমি জীবনের প্রথম (কিংবা শেষ) কাজা রোজাটি আদায় করছি। প্রতিটি রোজায় এভাবেই নিয়ত করুন।

  20. জাযাকাল্লাহু খয়রন।

  21. মাসে তিনটি রোজা কি বিরতি দিয়ে রাখা যায়??

    1. আইয়ামে বীজের রোজা রাখতে চাইলে হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখতে হবে। আইয়ামে বীজের এ ৩ দিন রাখতে না পারলে মাসের অন্য যে কোনো দিন রোজা রাখতে পারেন। বিরতি দেয়া বা না দেয়া ইচ্ছাধীন। ইচ্ছা হলে বিরতি দেয়া যাবে। একাধারেও রাখা যাবে।

  22. 𝐉𝐚𝐣𝐚 𝐤𝐚𝐥𝐥𝐚 𝐤𝐚𝐢𝐫𝐚𝐧

  23. 𝐭𝐧𝐱 𝐦𝐮𝐬𝐥𝐢𝐦𝐞 𝐝𝐚𝐲 𝐚𝐩𝐬

  24. আলহামদুলিল্লাহ জাযাকাল্লাহু খাইরান

  25. আলহামদুলিল্লাহ, মাসাআল্লাহ,জাযাকাল্লাহ খাইরান

  26. জাযাকাল্লাহ খাইরান

  27. জাযাকাল্লাহ

  28. এই রোজার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ত টা উল্লেখ করলে সুবিধা হতো আমাদের জন্য।

  29. আইয়ামে বীজের রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। রোজা রাখার নিয়ত করলাম। হে আল্লাহ আমাকে তৌফিক দান করুন।

  30. ধন্যবাদ

  31. I love you all for Allah & thanks for the muslims day app.,💌

  32. আলহামদুলিল্লাহ,,,,,,, হে আল্লাহ্! তুমি তোমার সব ভালো কাজ গুলো আমার দ্বারা করিয়ে নিও,,,,,,,,,,

  33. জাযাকাল্লাহ খাইরান 💗

  34. Aiame bizer 1ta roza ki rakha jai?

    1. হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজাকে আইয়ামে বীজের রোজা বলা হয়। এটি নফল রোজা। রাখলে সওয়াব আছে কিন্তু না রাখলে গুনাহ নাই। আপনি একটা রোজা রাখলে একটার সওয়াব পাবেন। বাকি ২টা না রাখার কারণে গুনাহ হবে না।

  35. পোস্টটি পড়ে অনেক জ্ঞান অর্জন হলো।
    আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

  36. Go forward
    Thanks

  37. I am really happy……… Muslimsday er Moto EKTA software feye…….I am really happy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ