Post Updated at 7 Apr, 2023 – 11:54 AM

রমযান মাস  রোজার মাস। প্রাপ্ত বয়স্ক সকল নারী-পুরুষের জন্য এ মাসে রোজা রাখা ফরজ। তবে যদি কোনো ওজরের কারণে রমযান মাসে রোজা রাখতে কেউ অসমর্থ হয়ে পড়ে, তবে রোজা না রাখার অনুমতিও তার আছে। এ ক্ষেত্রে পরবর্তীতে হয়তো রোজাটি কাজা করতে হবে, অথবা ফিদয়া আদায় করতে হবে। যাদের রোজা না রাখার অনুমতি আছে, তাদের বিবরণ নিচে উল্লেখ করা হলো :

১. মুসাফির

 

শরিয়তের পরিভাষায় মুসাফির তিনি, যিনি নিজ গ্রাম বা শহর থেকে কমপক্ষে ৭৭.২৫ কিলোমিটার দূরে কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। মুসাফিরের পরিচয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এ লেখাটি পড়ুন।

* মুসাফিরের জন্য সফরের হালতে রোজা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে অস্বাভাবিক কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম। আর অস্বাভাবিক কষ্ট হলে রোজা রাখা মাকরূহ। এ অবস্থায় রোজা না রেখে পরে তা কাযা করবে।- মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ৯০৬৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩

* সফরের হালতে রোজা রাখা শুরু করলে তা আর ভাঙ্গা জায়েয নয়। কেউ ভেঙ্গে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফফারা আসবে না। শুধু কাজাই যথেষ্ট।- ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩১

* মুসাফির সফরের কারণে রোজা রাখেনি, কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই মুকিম হয়ে গেল। তাহলে দিনের অবশিষ্ট সময় রমযানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তবে পরবর্তী সময়ে এ রোজার কাজা অবশ্যই করতে হবে।- মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ৯৪৩৬-৯৪৩৭

* রমযানের দিনে হায়েয-নেফাস থেকে পবিত্র হলে অবশিষ্ট দিন রমযানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তবে উক্ত ওযরে ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর সাথে এ দিনের রোযাও কাযা করবে।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৯৪৩২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪২৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯১

২. অসুস্থ ব্যক্তি

রোযার কারণে যে রোগ বৃদ্ধি পায় বা রোগ-ভোগ দীর্ঘ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে সে রোগে রোজা ভাঙ্গার অবকাশ আছে এবং পরবর্তীতে এ রোজা কাজা করতে হবে। উল্লেখ্য, আশঙ্কা যদি সুস্পষ্ট হয় তাহলে তো কথা নেই। নতুবা একজন অভিজ্ঞ ও দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামতের প্রয়োজন হবে।-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২২

৩. গর্ভবতী

রোজা রাখার কারণে গর্ভবতী মহিলা নিজের কিংবা সন্তানের প্রাণহানি বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা করলে তার জন্য রোজা ভঙ্গ করা জায়েয। পরে এ রোযা কাজা করে নিবে। গর্ভবতী মহিলা রোজা না রেখে এর পরিবর্তে ফিদয়া আদায় করে দিলে যথেষ্ট হবে না। -আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২২

৪. দুগ্ধদানকারিনী

দুগ্ধদানকারিনী মা রোজা রাখলে যদি সন্তান দুধ না পায় আর ঐ সন্তান অন্য কোনো খাবারেও অভ্যস্ত না হয়, ফলে দুধ না পাওয়ার কারণে

সন্তানের মৃত্যুর বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা হয়, তাহলে তিনি রোজা ভাঙ্গতে পারবেন এবং পরে কাজা করে নিবেন। -ইলাউস সুনান, ৯/১৫৫, আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২২

৫. দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি

বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা রাখতে সক্ষম না হলে রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। এক্ষেত্রে তাকে ফিদয়া আদায় করতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক রোজার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। -সূরা বাকারা : ১৮৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭

উপরোক্ত মাসআলাগুলোসহ রোজার আরও মাসআলা দলিলসহ জানতে মাসিক আলকাউসার পত্রিকার এই লেখাটি পড়তে পারেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ