Post Updated at 7 May, 2023 – 7:41 AM
‘যখন আমি ইবরাহীমকে বায়তুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়ে বলেছিলাম আমার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না, আর আমার ঘরকে পবিত্র রেখো তওয়াফকারীদের জন্যে, যারা নামাজে দাঁড়িয়ে থাকে তাদের জন্যে আর রুকু-সেজদাকারীদের জন্যে। এবং তুমি মানুষের মাঝে তুমি হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকট চলে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে চড়ে, সেগুলো আসবে দূর-দূরান্তের পথ মাড়িয়ে। যেন তারা তাদের কল্যাণগুলো প্রত্যক্ষ করতে পারে এবং আল্লাহ তাদের যে গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু দান করেছেন নির্ধারিত দিনগুলোতে সেগুলো জবাই করার সময় তারা তাঁর নাম স্মরণ করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে নিজেরা আহার করো আর দুস্থ ও অভাবগ্রস্তকে খেতে দাও। এরপর যেন তারা তাদের শরীরের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, নিজেদের মান্নত পূর্ণ করে আর সংরক্ষিত ঘরের তওয়াফ করে।…’ [সুরা হজ, আয়াত : ২৬-২৯]
মহান নবী হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহ তায়ালার আদেশে পবিত্র কাবা শরীফ নির্মাণ করেছিলেন। এ কাবাঘরই বায়তুল্লাহ আল্লাহর ঘর। ঘর নির্মাণ শেষ হলে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে আবারও আদেশ করলেন তুমি এবার মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা করে দাও। আদেশমাফিক তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পাহাড়ের চূড়ায় চড়ে জনমানবহীন মককার মরুপ্রান্তরেই তিনি হজের আহ্বান জানিয়েছিলেন। উপরে পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতিতে এই আহ্বানের কথাই বলা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে মককার মরুপ্রান্তরমুখী হাজী সাহেবদের এই যে স্রোত, তা মূলত সেই আহ্বানেরই সাড়া। ‘লাব্বাইক-আল্লাহুম্মা লাব্বাইকÑ হাজির প্রভু হাজির’ বলে মিনা-আরাফা-মুযদালিফায় তাদের ছুটে বেড়ানো সেই ইবরাহীমি আহ্বানকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ঘর আল্লাহর, তিনিই তাঁর নবীকে আদেশ করেছেন মানুষকে সেই ঘরে আমন্ত্রণ জানাতে। এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করা আল্লাহবিশ্বাসী প্রতিটি মুমিনের নিকটই এক পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। মুমিনমাত্রই অন্তরে লালন করে সেই কাবাঘরমুখী হজের সফরে বেরিয়ে পড়ার স্বপ্ন। জীবনে একবার হলেও কাফনের কাপড় পরার আগে ইহরামের কাপড় পরার স্বপ্ন।
সারা জীবনের চাওয়া-পাওয়ার এই যে হজ, এখানে আল্লাহ পাকের যে দাসত্বের প্রকাশ বান্দারা ঘটিয়ে থাকে, অন্য কোনো ক্ষেত্রে তা নেই। হজের প্রতিটি বিধানই এমন, যেখানে যুক্তি দিয়ে মেলানোর কোনো অবকাশ নেই। প্রভুর প্রেমে পাগল হয়ে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সঁপে দিতে হয় এখানে। এই হজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। মনের গভীরে দীর্ঘদিনের পোষা স্বপ্ন যখন বাস্তবতায় রূপ নেয়, তখন সামান্য কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ রাখলে এ মহান ইবাদতটি যেমন আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, তেমনি এগুলোর অনুপস্থিতি মাটি করে দিতে পারে হজের যাবতীয় কল্যাণ।
ইখলাস
ইখলাস ও নিয়তের বিশুদ্ধতা হলো সকল ইবাদতের প্রাণ। ইবাদত তো হবে কেবলই আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি কামনায়। এখানে লৌকিকতা জাতীয় কোনো বিষয় থাকার সুযোগ নেই। হজের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কারণ, হজ একদিকে যেমন সারা জীবনের ইবাদত, সারা জীবনের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন, তেমনি নিজের হজের বিষয় মানুষের মাঝে প্রচারের মানসিকতাও অন্যান্য ইবাদতের তুলনায় অনেক বেশি। খ্যাতি অর্জন কিংবা ‘হাজী’ জাতীয় কোনো পরিচয় গ্রহণের মতো লৌকিকতাপূর্ণ মানসিকতা যদি কারও থাকে, তাহলে তার হজ তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হয় না। অথচ সকল ইবাদত কবুল হওয়ার জন্যে নিয়তের বিশুদ্ধতা একটি সাধারণ বিষয়। ইখলাস ছাড়া কোনো ইবাদতই আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। আল্লাহ তায়ালা তো বলেই দিয়েছেন : (তরজমা) ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহ ইবাদত করতে তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্টভাবে। [সুরা বায়্যিনাহ, আয়াত : ৫] আর হজের জন্যে তো বিশেষভাবে বলা হয়েছেÑ ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরা পরিপূর্ণরূপে পালন করো।’ [সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৬]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : যে ব্যক্তি প্রচারের উদ্দেশ্যে কোনো নেক আমল করে আল্লাহ তায়ালা তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা মানুষকে শুনিয়ে দেন, আর যে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো আমল করে, আল্লাহ তায়ালা তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা মানুষকে জানিয়ে দেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৪৯৯]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পুরনো বাহন আর চার দিরহামেরও কম মূল্যের একটি পশমি বস্ত্রে হজ পালন করেছিলেন। তিনি তখন এই দোয়া করেছিলেন : ‘হে আল্লাহ! আমাকে এমন হজের তৌফিক দিন, যাতে মানুষকে দেখানো আর শোনানোর কোনো আকাঙ্ক্ষা থাকবে না।’ [সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস : ২৮৯০]
খাটি মনে তওবা
হজের একটি বড় প্রাপ্তি- এতে গোনাহ মাফ হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে হজ পালন করে, এরপর কোনো অশ্লীলতায় জড়ায় না, কোনো পাপে লিপ্ত হয় না, সে সদ্য ভূমিষ্ট নিষ্পাপ শিশুর মতো বাড়িতে ফিরে আসে। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৫২১] গোনাহ মাফের এই যে ইলাহি আয়োজন, এখান থেকে কল্যাণ হাসিল করতে চাইলে তো অবশ্যই নিজের গোনাহের জন্যে খাঁটি মনে আল্লাহ তায়ালার দরবারে তওবা করতে হবে। আর খালেস তওবার জন্যে আবশ্যকীয় শর্ত হলো, গোনাহ থেকে প্রথমে ফিরে আসা। কোনো পাপে লিপ্ত থেকে তো আর সেই পাপ থেকে তওবা করা যায় না। এজন্যে হজে যাওয়ার আগে প্রত্যেকেরই উচিতÑ খাঁটি মনে তওবা করা। সব রকম পাপকাজ থেকে ফিরে আসা এবং ভবিষ্যতে আর কখনো সে পাপ না করার সংকল্প করা। হজের মধ্যে গোনাহ মাফ হয়Ñ এ কথা ঠিক। কিন্তু কেউ কোনো অন্যায় কাজে ডুবে থেকে যদি সেই অন্যায় থেকে মাফ চায় তাহলে এ মাফ চাওয়ার তো কোনো অর্থ থাকে না।
হালাল রিজিক
যে কোনো ইবাদত কবুল হওয়ার জন্যে পূর্বশর্ত হলো হালাল রিজিক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির কথাপ্রসঙ্গে বলছিলেন : দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ধূলিমলিন এক মুসাফির, আকাশের দিকে দুই হাত উঁচু করে সে ডাকেÑ ইয়া রাব্বি ইয়া রাব্বি হে আমার প্রভু! কিন্তু তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম, হারাম দিয়েই তার দেহ গঠিত। এমন অবস্থায় তার দোয়া কবুল হবে কীভাবে! [সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১০১৫]
হজই এমন একটি ইবাদত যেখানে শরীর ও অর্থ দুই-ই লাগে। সাধারণ দোয়া কবুলের ক্ষেত্রেই যখন হারাম রিজিক বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে হজের মতো একটি আর্থিক ইবাদত যদি হারাম উপার্জন দিয়ে করা হয় তাহলে তা কি আর কবুল হওয়ার আশা করা যায়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো স্পষ্টই বলেছেন : আল্লাহ কেবল হালাল (সম্পদ)ই কবুল করে থাকেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৪১০]
সন্তুষ্টচিত্তে অর্থ ব্যয়
সন্তুষ্টচিত্তে হজ করাও এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হজে যাওয়ার সময় যদি কেউ চিন্তা করে- কতগুলো টাকা এখানে শেষ হয়ে যাচ্ছে! তাহলে এ হজ তো সন্তুষ্টচিত্তে করা হজ নয়, বরং এটা আইনের মুখে পড়ে করা হজ। শুধু হজ নয়, যে কোনো ইবাদতই সন্তুষ্টচিত্তে করা উচিত। কুরআন অবতরণের কালেই আরবের বেদুইনদের কেউ কেউ জাকাতকে নিজেদের জন্যে জরিমানা মনে করত। তাদের অন্তরে ঈমান ছিল না, কেবল মুখে মুখে তারা ঈমানের কথা প্রকাশ করত। মুখে মুখে ঈমানের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে তারা মুসলমানদের সঙ্গে নামাজও পড়ত, জাকাতও দিত। সঙ্গতকারণেই তারা জাকাতকে অর্থদ- বিবেচনা করত আর অপেক্ষায় থাকতÑ মুসলমানদের ওপর কোনো বিপদ এসে যদি তাদের শেষ করে দিত, তাহলে আর এ জরিমানা গুণতে হতো না। তাদের কথা কুরআনে এসেছে এভাবে ‘বেদুইনদের কেউ কেউ নিজেদের অর্থ ব্যয় করাকে জরিমানা বলে গণ্য করে এবং তোমাদের ওপর দুর্দিন নেমে আসার অপেক্ষায় থাকে…’ [সুরা তওবা, আয়াত : ৯৮] আর যারা সন্তুষ্টচিত্তে দান করত তাদের কথা উল্লেখিত হয়েছে এভাবেÑ ‘আর বেদুইনদের কেউ কেউ এমন, যারা আল্লাহর ওপর ও শেষ দিবসের ওপর ঈমান আনে এবং যা কিছু তারা ব্যয় করে তা আল্লাহর নৈকট্য ও রাসূলের দোয়া লাভের উপায় বলে গণ্য করে। জেনে রেখো, নিশ্চয়ই তা তাদের ক্ষেত্রে নৈকট্য। আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অন্তর্ভুক্ত করবেন। সত্যি, তিনি ক্ষমাশীল করুণাময়।’ [সুরা তওবা, আয়াত : ৯৯]
যারা উদারমনে দান করে তাদের আরেকটি বর্ণনা- ‘পূণ্য তো এই, কোনো ব্যক্তি আল্লাহ পরকাল ফেরেশতাকুল কিতাব এবং নবীদের প্রতি ঈমান আনে, সন্তুষ্টচিত্তে নিকটাত্মীয় ইয়াতিম মিসকিন মুসাফির ভিক্ষুককে দান করে…।’ [সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৭]
এর বিপরীতে যারা দানকে জরিমানা মনে করে, নামাজ পড়ে বাধ্য হয়ে, তাদের কথা আল্লাহ তায়ালা এভাবে প্রকাশ করেছেন : তারা নামাজ পড়ে অলসভঙ্গিতে, দান করে মনে অসন্তোষ নিয়ে। [সুরা তওবা, আয়াত : ৫৪]
মুমিন মাত্রই এ বিশ্বাস করে, টাকা-পয়সা সহায়-সম্পদ সবই আল্লাহর দান। এ বিশ্বাস মুমিনের কাছে তার ঈমানের দাবি। এ বিশ্বাস যার যত মজবুত হবে, আল্লাহর আদেশ মেনে তাঁর পথে সম্পদ ব্যয় করতে সে ততই আনন্দিত হবে। সম্পদ জমিয়ে নয়, সম্পদ ব্যয় করেই তখন সে তৃপ্ত হবে। মুমিনের চিন্তা তো হবে এমনÑ সম্পদ দিয়েছেন আল্লাহ, তিনি যেভাবে খরচ করতে বলেছেন খরচ করব। চিন্তা যার এমন, সে তো জীবনে একবার মাত্র নয়, সাধ্য থাকলে সে বারবার ছুটে যায় আল্লাহ পাকের ঘরের জিয়ারতে, লাব্বাইক-লাব্বাইক বলে বারবার বেরিয়ে যায় হজ-ওমরার সফরে। আর সাধ্য যদি নাও থাকে, তবুও মককা-মদীনার কথা শুনলেই তার মনের গহীন থেকে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস- হায়, আবার যদি যেতে পারতাম!
দোয়া
হজ একটি কষ্টকর ইবাদত। এজন্যে দোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে প্রতিটি মুমিনেরই আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করা উচিতÑ তিনি যেন ইবাদত করার তৌফিক দেন, ইবাদত বেশি পরিমাণে করার তৌফিক দেন এবং সঠিক নিয়মে ইবাদত করার তৌফিক দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কত চমৎকার দোয়া শিখিয়ে গেছেনÑ হে আল্লাহ, তোমার জিকির তোমার শোকর ও কৃতজ্ঞতা আর সুন্দরভাবে তোমার ইবাদত করতে তুমি আমাকে সাহায্য করো। ইবাদত করতে পারা এবং ইবাদত করার পর আল্লাহর দরবারে তা গৃহীত হওয়ার জন্যে বরাবরই আমাদের আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করা উচিত। এ তো সাধারণ সময়ের কথা। আর হজ যেহেতু একটি কষ্টসাধ্য ইবাদত, তাই এর শুরু থেকেই দোয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। হজের ইহরাম থেকেই শুরু। বান্দা যখন বলেন হে আল্লাহ! আমি হজের নিয়ত করলাম, তখনই তাকে দোয়া শেখানো হয়েছে ‘হে আল্লাহ, তুমি তা আমার জন্যে সহজ করে দাও এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করে নাও।’ এজন্যে হজের সফর শুরু করার আগে থেকেই এ দোয়ায় যত্নবান হওয়া উচিত আল্লাহ তায়ালা যেন হজের আমলগুলো সহজ করে দেন এবং হজ কবুল করে নেন। এ দোয়া নিজেও বেশি বেশি করা উচিত, অন্যদের কাছেও দোয়া চাওয়া উচিত। বিশেষত যদি বাবা-মা বেঁচে থাকেন, তাহলে তাদের আন্তরিক দোয়া নিয়ে হজের সফরে বের হওয়া উচিত। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তিনটি দোয়া এমন, যেগুলো কবুল হওয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এক. মজলুমের দোয়া, দুই. মুসাফিরের দোয়া, তিন. সন্তানের জন্যে বাবার দোয়া। [সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস : ৩৮৬২]
সবর
হজ হলো সবরের পাঠশালা। আল্লাহ তায়ালার কী সুস্পষ্ট ঘোষণা হজে কোনোরূপ ঝগড়াবিবাদ করা যাবে না। [সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭] সফরসঙ্গীদের পক্ষ থেকে কিংবা হজের কাফেলাপ্রধানের পক্ষ থেকে অনাকাক্সিক্ষত কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। তখন ঝগড়ার ন্যায়সঙ্গত অধিকারটুকুও ছেড়ে দিয়ে সবর ও ধৈর্যের আশ্রয় নিতে হবে। কিছু সংকট তো এমন থাকে, যেখানে আমাদের কাফেলাপ্রধান মুয়াল্লিম কিংবা এজেন্সির মালিকদের করার কিছুই থাকে না। তখনো বুঝে-না বুঝে আমরা তাদের সঙ্গেই বিবাদে ঝড়িয়ে পড়ি। হজের বরকত হাসিল করতে চাইলে এরকম বিবাদ এড়িয়ে চলা জরুরি।
সঙ্গী নির্বাচন
হজের সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সঙ্গী নির্বাচন। এটি হজ কবুলের সঙ্গে যদিও সরাসরি সম্পর্কিত নয়, কিন্তু হজ কবুলের জন্যে এটি বড় সহায়ক। সঙ্গী যদি ভালো হয় তাহলে পুরো সফরে আল্লাহ পাকের হুকুম তামিল করা সহজ হয়। নামাজের কথাই ধরুন। সফরের অবস্থায় সামান্য গাফিলতির কারণে যদি আপনার এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে তো হজের প্রাণটুকুই শেষ করে দিলেন। একজন সৎ সঙ্গী এক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
Leave a Reply