Post Updated at 8 Apr, 2023 – 3:14 PM
আসছে বহুল প্রতীক্ষিত রমজান মাস। বিশ্বের সকল মুসলিমরা যেন এই এক মাসের অপেক্ষায় থাকে। মুত্তাকী হবার জন্য, আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য। হিজরি ১৪৪৪ বা ২০২৩ সালের রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ২৪ মার্চ ২০২৩। এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। সে হিসাবে ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতর উদযাপন হতে পারে ২২ এপ্রিল ২০ ২৩ ইং। চাঁদ দেখা গেলে আমাদের ডেভেলপ করা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মাধ্যমে তা জানা যাবে এবং সারা বছরই তাতে নামাজ ও রোজার সময়সূচী পাওয়া যাবে।
চান্দ্র মাসের নিয়মানুযায়ী এই রমজান শুরু ও ঈদের তারিখ গত বছরের চেয়ে ১০ দিন এগিয়ে আসবে। গত বছর ২০২২ সালে রোজা শুরু হয়েছিল এপ্রিলের ৩ তারিখে। এই লেখায় রমাদানের সময়সূচী ও অন্যান্য কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করা হবে ইনশাআল্লাহ!
শবে মেরাজ ২০২৩ কবে? শবে মেরাজের আমল কী?
শবে মেরাজ ঠিক কোন তারিখে সংঘটিত হয়েছিল সেটি নিশ্চিত ভাবে হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় না। শবে মেরাজের তারিখ সম্পর্কে অনেকগুলো মত রয়েছে। কোনোটিই সন্দেহাতীত ভাবে নির্ভরযোগ্য নয়। আমাদের দেশে ২৭ রজবকে শবে মেরাজ হিসাবে পালন করা হয়।
সাহাবীগণের নিকট শবে মেরাজের শিক্ষা ও সেটি বিশ্বাস করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের সমাজে যে রকম ভাবে প্রতি বছর বছর ঘটা করে শবে মেরাজ পালন করা হয়। মসজিদে আলোকসজ্জা করে সাজানো হয়, বিশেষ আলোচনা-মাহফিল হয়। কেউ কেউ এ উপলক্ষ্যে বিশেষ নামাজ-রোজা আদায় করেন। এগুলোর কোনোটিই নবীজির (সা) সময়ে ছিল না। তারা প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট দিনকে “শবে মেরাজ” হিসাবে উদযাপন করতেন না। শবে মেরাজ সংঘটিত হবার তারিখটি জানা আমাদের জন্য জরুরি নয়। তাই এই তারিখটি সাহাবীগণ সংরক্ষণ করেন নি।
তাই আমরাও বছরের কোনো একটি দিনকে শবে মেরাজ বলে আখ্যায়িত করব না। কোনো মনগড়া ও বিদআতকে আমাদের আমলের মাঝে যুক্ত করব না। এজন্য সচেতন ভাবেই আমাদের সমাজে কথিত শবে মেরাজের তারিখটি এই লেখায় উল্লেখ করা হচ্ছে না।
শবে মেরাজ সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারনা ও বিদআত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ব্লগের এই লেখাটি পড়তে পারেন।
শবে বরাত ২০২৩ কবে? শবে বরাতের আমল কী?
২০২৩ সাল মোতাবেক ১৪৪৪ হিজরির লাইলাতুন নিসফ মিন শাবান তথা শবে বরাতের তারিখ ৭ মার্চ, ২০২৩ ইং তারিখ মঙ্গলবার দিবাগত রাত। অর্থাৎ মঙ্গলবার দিন পার হয়ে মাগরিবের নামাজের পর থেকে মধ্য শাবানের রজনী তথা শবে বরাত শুরু হবে। এ রাতেই আল্লাহ তায়ালা শিরককারী ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দিবেন বলে সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ৮ মার্চ ২০২৩ বুধবার শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে।
কুরআন সুন্নাহের আলোকে মধ্য শাবানের রজনী বা শবে বরাতের ফজিলত ও আমলের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে এই লেখাটি থেকে।
রমজান ২০২৩ কবে থেকে শুরু?
আমরা সবাই জানি এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তারপরেও আমরা শুধু অনুমান করতে পারি। ২০২৩ সালের রামাদান মাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখ। কিন্তু শা’বান মাস যদি ২৯ দিনে হয় তাহলে রামাদান শুরু হবে ২৩ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখে। উভয়টিই একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
ঈদুল ফিতর ২০২৩ কবে?
রমজান ২০২৩ এর পর আসবে ঈদুল ফিতর ২০২৩। ঈদুল ফিতর ২০২৩ এর সম্ভাব্য তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ।
রমজানের সময়সূচী ২০২৩
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ঢাকা জেলার জন্য প্রযোজ্য রমজান ক্যালেন্ডার ২০২৩ নিচে তুলে ধরা হলো।
ঢাকা জেলার সাহরি ও ইফতারের সময়সূচীঃ
উপরের সময়সূচী থেকে প্রতি জেলার জন্য হিসাব করে প্রতিদিন সাহরি-ইফতারের সময় সূচী বের করা অনেকের জন্যই বেশ কঠিন। আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। সেখানে আপনার জেলা সেট করে নিলেই অটোমেটিক ভাবে সাহরি ইফতারের সময় দেখাবে।
সারা বছরের নামাজ ও রোজার সময় তথা নামাজ রোজার চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডারের জন্য আমাদের অনেককেই অনেক ঝামেলা করতে হয়। বেশির ভাগ চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডারেই বছরের প্রতিটা দিনের সময়সূচী সকল জেলার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে দেয়া থাকে না। আবার তাতে নামাজের ওয়াক্তগুলোর শুরুর সময় উল্লেখ থাকলেও নামাজের শেষ সময় উল্লেখ থাকে না। তাই যারা নামাজের শেষ সময় সংক্রান্ত মাসআলা জানেন তারাই ঐসব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারেন।
সাহরি-ইফতার ও নামাজের শুরুর ওয়াক্ত, শেষ ওয়াক্ত এবং নামাজের নিষিদ্ধ সময় জানার জন্য; ২০১৫ সাল থেকে আমরা একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপ করে আসছি। এই Android App এ আমরা যুক্ত করেছি সারা বছরের নামাজের সময় সূচী। আপনি যদি আজকের সেহরির শেষ সময় ও আজকের ইফতারের সময় জানতে চান তাহলে সেই সময়টি অ্যাপের হোম পেজ থেকেই জানতে পারবেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যে কোনো দেশের সাহরি-ইফতার, ৫ ওয়াক্ত নামাজের ওয়াক্ত এবং নফল নামাজের ওয়াক্তও এখান থেকে জানা যাবে।
এই অ্যাপটিতে ঢুকলে হোম পেজেই পাওয়া যাবে আজকের ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী অর্থাৎ যে দিন অ্যাপটি ওপেন করা হবে সেই দিনের ওয়াক্তগুলো দেখা যাবে। ঐ দিনের নামাজের নিষিদ্ধ সময়গুলোও জানা যাবে। একই সাথে আজকের সেহরির শেষ সময় ও ইফতারের সময়ও দেখা যাবে। হোম পেজেই দেখা যাবে এই মুহূর্তে কোন ওয়াক্ত চলছে আর এই ওয়াক্ত শেষ হতে আর কতক্ষণ বাকি। একই ভাবে সাহরি ও ইফতারের সময়ের কাউন্ট ডাউনও দেখানো হয় হোম পেজে।
রমজানের প্রস্তুতি
রোজার বিভিন্ন মাসয়ালা, যেমন রোজা ভঙ্গের কারণ, কী কী কাজ করলে রোজা শুদ্ধ হয় না, কী কী কারণে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না, রোজার খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি তথ্যাদি আমরা সাধারণত রোজা শুরু হওয়ার পর খুঁজতে শুরু করি। তাই আমরা যারা রমজান মাসকে সবচেয়ে ভাল ভাবে কাজে লাগাতে চাই তারা আগে থেকে এ বিষয়গুলো জানার জন্য অ্যাপটি ইন্সটল করতে পারেন। আমরা রমজানের প্রস্তুতি মানে ধরেই নিই কী কী খাব, কয় কেজি বেসন কিনব, কয় কেজি ছোলা-মুড়ি কিনব, ঈদে কয়টা ড্রেস কিনব ইত্যাদিকে। এমন কি এই ভোগ-বিলাসিতাকে নেক আমল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে একটা বানোয়াট হাদীস বানিয়ে তার উপর আমল করে অনেকে। বানোয়াট জাল হাদীসটি হচ্ছে রমজান মাসে কোনো কিছু কিনলে সেই পরিমাণ টাকা সদকা করার সওয়াব পাওয়া যায়। নাউজুবিল্লাহ! একজনের ব্যাপারে শুনেছিলাম ২০-২৫ হাজার টাকা দামের স্মার্টফোন তিনি রমজান মাসে কিনেছেন উক্ত ফজিলত হাসিল করার জন্য! যারা ভোজনরসিক তারা প্রচার করে বেড়ায় রমজানে সাহরি আর ইফতারে যত খুশি খাওয়া যাবে। এসবের কোনো হিসাব দিতে হবে না।
আসলে রমজানের জন্য প্রস্তুতি হওয়া উচিত আগে থেকেই কিছু কিছু করে নফল রোজা রাখা। একটু বেশি নফল-সুন্নত নামাজ পড়া। আল্লাহর রাসূল (সা) রমজানের আগের দুই মাসে অধিক নফল রোজা ও ইবাদত করতেন। নিচে রমজানের আগের দুই মাস রজব ও শা’বান মাসে নফল রোজা রাখা বিষয়ক কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলো।
উসামাহ বিন যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,
‘একদা আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকে শাবান মাসে যত সিয়াম রাখতে দেখি তত অন্য কোন মাসে তো রাখতে দেখি না, (এর রহস্য কী)?’ উত্তরে তিনি বললেন, “এটা তো সেই মাস, যে মাস সম্বন্ধে মানুষ উদাসীন, যা হল রজব ও রমযানের মাঝে। আর এটা তো সেই মাস; যাতে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালকের নিকট আমলসমূহ পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, সিয়াম রাখা অবস্থায় আমার আমল (আল্লাহর নিকট) পেশ করা হোক।
(আহমাদ ২১৭৫৩, নাসাঈ ২৩৫৭, সহীহ তারগীব ১০০৮, তামামুল মিন্নাহ ৪১২পৃঃ)
উসমান ইবনু হাকীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ)-কে রজব মাসের সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনবরত সওম পালন করতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি এ মাসে সওম বর্জন করবেন না। আবার তিনি অনবরত সওম বর্জন করতেন, এমনকি আমরা বলতাম তিনি (হয়তো) আর সওম রাখবেন না।
(সুনানে আবু দাঊদ ২৪৩০)
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,
আমি শা’বান ও রমযান ছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটানা দু’মাসের রোযা পালন করতে দেখিনি।
(সহীহ ইবনু মাজাহ ১৩৪৮)
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সালামার সূত্রে আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শা’বান মাসের অনুরূপ অন্য কোন মাসে এত বেশি (নফল) রোযা পালন করতে দেখিনি। কিছু অংশ ছাড়া এ মাসের পুরো মাসটাই, বলতে কি সারা মাসটাই তিনি (নফল) রোযা রাখতেন।
(হাসান সহীহ, তিরমিজি ৭৩৭)
এ হাদীস প্রসঙ্গে ইবনুল মুবারাক বলেছেন, যদি কোন লোক মাসের বেশিরভাগ দিন রোযা পালন করে তবে আরবী বাগধারা অনুযায়ী বলা যায় সে লোক সারা মাসই রোযা পালন করেছে। যেমন আরবরা বলে থাকে, অমুক লোক সম্পূর্ণ রাত (নামাযে) দাঁড়িয়েছিল। অথচ সে লোক রাতের খাবারে এবং অন্যান্য প্রয়োজনে কিছু সময় ব্যয় করেছে। ইবনুল মুবারাক এর প্রেক্ষিতে মনে করেন, হাদীস দুটির তাৎপর্য একই। হাদীসটির তাৎপর্য হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট মাসের বেশিরভাগ দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করতেন। আবূ ঈসা বলেন, সালিম আবূ নাযর এবং আরও অনেকে আবূ সালামার সূত্রে আইশা হতে মুহাম্মাদ ইবনু আমরের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শা’বান মাসের অর্ধেক বাকী থাকতে তোমরা আর রোযা পালন করো না।
(সহীহ, ইবনু মাজাহ ১৬৫১)
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই শব্দে এ সূত্র ছাড়া আর কোন বর্ণনা আছে কি না তা আমাদের জানা নেই। কোন কোন আলিমদের মতানুযায়ী এই হাদীসটি সে সব লোকের জন্য প্রযোজ্য যে সাধারণতঃ (শা’বানের) রোযা পালন করে না, কিন্তু শা’বান মাসের কিছু দিন বাকী থাকতেই রমযানের সম্মানার্থে রোযা পালন শুরু করে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্ত অভিমতের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি হাদীস আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর মারফতেও বর্ণিত আছে। তা এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (শা’বানের) রোযা রেখে তোমরা রমযানকে স্বাগত জানাবে না। তবে কারো নির্ধারিত দিনগুলোর রোযার সাথে এই দিনের রোযার মিল পড়ে গেলে ভিন্ন কথা। এ হাদীস হতে জানা গেল যে, কোন ব্যক্তির রমযানকে স্বাগত জানানোর জন্য (শা’বানের) রোযা রাখা মাকরূহ।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“তোমাদের কেউ যেন রমযান মাসের এক বা দু’দিন আগে (শা’বানের শেষে) রোযা পালন শুরু না করে। অবশ্য সেই ব্যক্তি রোযা রাখতে পারে, যে ঐ দিনে রোযা রাখতে অভ্যস্ত।”
(সহীহুল বুখারী ১৯১৪, মুসলিম ১০৮২, তিরমিযী ৬৮৪, ৬৮৫, নাসায়ী ২১৭২, ২১৭৩, আবূ দাউদ ২৩৩৫, ইবনু মাজাহ ১৬৫০, আহমাদ ৭১৫৯, ৭৭২২, ৮৩৭০, ৯০৩৪, ৯৮২৮, ১০২৮৪, ১০৩৭৬, ২৭২১১, ২৭৩১৭, দারেমী ১৬৮৯)
এ সকল হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে রমজান আসার আগের দুই মাসে আমাদের উচিত কিছু নফল রোজা রাখা। রজব ও শা’বান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখা এমনিতেই সুন্নাহ। আবার প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নাহ। একই সাথে হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা রাখাও সুন্নাহ। তাই চলুন আমরা রজব ও শা’বান মাসের আইয়ামে বীজের রোজাগুলো অন্তত রাখার চেষ্টা করি। তাতে ইনশাআল্লাহ রজব-শা’বানের বিশেষ ফজিলত ও আইয়ামে বীজের ফজিলত উভয়টিই হাসিল হয়ে যাবে। একই রকম ভাবে সোম-বৃহস্পতি রোজা রাখার মাধ্যমেও এই দুটি ফজিলত হাসিলের সুযোগ রয়েছে।
রোজা আসার আগে থেকেই চলুন মানসিক ভাবে প্রিপারেশন নিই যে, এই রোজায় আগের মত ফেসবুক ইউটিউবে অযথা সময় নষ্ট করব না। এই রোজায় প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় কুরআন পড়ব। কয়েক আয়াতের তাফসীর সহ পড়ব। প্রিপারেশনের অংশ হিসাবে এখন থেকে চলুন প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট কুরআন পড়ার জন্য ব্যয় করি। তাতে যে অভ্যাস হবে সেটা রমজান মাসে আমাদের অনেক সাহায্য করবে। আজই সিদ্ধান্ত নিন আমাদের বাজে একটা ট্র্যাডিশন এইবার ব্রেক করার জন্য। তা হচ্ছে ইফতারে হরেক রকমের ভাজা-পোড়া খেয়ে শরীর নষ্ট করা। রোজা রেখে আমাদের শারীরিক যেই উপকার হওয়ার কথা তার পুরোটাই বলা যায় নষ্ট হয় এই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে। তাই কম খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন এখন থেকেই।
যারা ধুমপান করেন, তাদের জন্য রমজান হতে পারে এটা থেকে মুক্তির মাস। এখন থেকেই ধুমপানের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে রমজান মাসে ছেড়ে দিন একেবারে। আপনি বিষ খেয়ে নিজের ক্ষতি করলে আল্লাহর কাছে আপনার ব্যাপারে শুধু কৈফিয়ত দিতে হবে। কিন্তু আপনি ধুমপান করে আপনার ও আপনার আশেপাশের অসংখ্য মানুষের ক্ষতি করছেন। তাদের সকলের ক্ষতি করার দায় কিয়ামতের দিন কি আপনি এড়াতে পারবেন? কোনো একজন ব্যক্তির হক্ব নষ্ট করলে তার ব্যাপারে কিয়ামতের দিন ধরা হবে। কিন্তু সরকারী তথা জাতীয় কোনো সম্পদ নষ্ট করা বা পুরো জাতীর হক্ব যারা নষ্ট করে কিয়ামতের দিন কিন্তু সকলের হক্বই আদায় করতে হবে। অন্যথায় সকলের গুনাহের বোঝা নিজ ঘাড়ে নিতে হবে। তাই আসুন আমরা নিজের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকি। ধুমপানের মাধ্যমে আমাদের বা প্রতিবেশীর গর্ভবতী মায়ের পেটে থাকা সন্তানের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকি।
আমাদের Muslmis Day অ্যপের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করে থাকি সমসাময়িক ও প্রাসঙ্গিক ইসলামী বিষয়গুলো নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানাতে। যেমন সামনের কোন দিন রোজা রাখা বিশেষ ফজিলতের সেটা আমরা ঐ দিনের ২-৩ দিন আগেই অ্যাপে নোটিফিকেশন পাঠিয়ে দেই। এছাড়াও ইসলামের বিভিন্ন আমল ও আক্বিদা, বিভিন্ন ভুল ধারণা ও বিদআতের নিরসনে আমরা ধারাবাহিক ভাবে নোটিফিকিশেনের মাধ্যমে দাওয়াতী কাজ করে থাকি। তাই আমাদের অ্যাপটি শুধুমাত্র একটি গতানুগতিক নামাজের সময়সূচী বা সেহরি ইফতারের সময়সূচীর এপ নয়। বরং একজন মুসলিমের নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুল
আল্লাহ আমাদেরকে রমজান মাসের যথাযথ প্রস্তুতি নেয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ এই রমজানকে আমাদের জীবন পরিবর্তন করে দেয়ার উপলক্ষ্য বানিয়ে দিন। এই রমজানে ভোগ-বিলাসিতা, পাপ কাজ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দিন। রমজানে আমাদের সকলকে পুরো কুরআন পড়ে শেষ করার তাওফিক দান করুন। এই রমজানে বেশি বেশি ইসলামের জ্ঞান অর্জন করে সে অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিক্বাফ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদের জীবনে বারবার লাইলাতুল ক্বদরের পূর্ণ ফজিলত দান করুন।
Comments (2)
Ahsansays:
March 5, 2023 at 1:21 PMThanks
Nasima Begum Talukdarsays:
February 26, 2024 at 4:47 AMYaa allah