Post Updated at 23 Apr, 2024 – 9:37 PM

নামায একটি ফরয ইবাদত। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রতিটি মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর যেমন নামায পড়া ফরয, তেমনি এ নামায  নির্ধারিত সময়ে আদায় করাও ফরয।

প্রতিদিন আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করি।

 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন :

اِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ كِتٰبًا مَّوْقُوْتًا ۝۱۰۳

অর্থ : নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মুমিনদের ওপর ফরয। [সূরা নিসা, ৪ : ১০৩]

একটি ভুল ধারণা

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি কেউ কোনো নামায আদায় করতে না পারে, তবে এ নামায সে পরবর্তীতে কাযা করবে। সময়মতো যদি কেউ কোনো নামায আদায় না করে, তবে পরবর্তীতে তা কাযা করাও ফরয। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নামায কাযা হয়ে যায় কখন? কেউ কেউ মনে করেন, জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করতে না পারলেই নামায কাযা হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ ভাবেন, আজানের কাছাকাছি সময়ে নামায পড়তে হবে। বেশি দেরি করা যাবে না। দেরি করলেই কাযা হয়ে যাবে। এসব ভাবনার কোনোটিই সঠিক নয়।

নামায কাযা হয় কখন

আসল কথা হলো, প্রতিটি নামাযেরই একটি শুরুর সময় থাকে, একটি শেষ সময় থাকে। এর মধ্যকার সময়টাই হচ্ছে সে নামাযের মূল সময়। আরেকটা হলো সে নামাযের উত্তম সময়। কোনো কোনো নামাযের মাকরুহ সময়ও রয়েছে। আবার মসজিদে জামাআতের জন্যও প্রতিটি নামাযের নির্ধারিত সময় রয়েছে। কেউ যদি জামাআতে শরিক হতে না পারে, তবে একাকীই নামায পড়ে নেবে। লক্ষ রাখতে হবে, যেন মাকরুহ সময় চলে না আসে। আর যদি মাকরুহ সময় হয়েই যায়, তবে সে তখনও নামায যথীরীতি আদায় করবে।

উদাহরণস্বরূপ ইশার নামাযের কথা বলা যায়। ইশার নামাযের সময় শুরু হয় যখন মাগরিবের সময় শেষ হয়। সূর্যাস্তের প্রায় ৭০-৮০ মিনিট সময় পর ইশার সময় শুরু হয়। তবে এ নামায একটু বিলম্বিত করে পড়া মুসতাহাব, পছন্দনীয়। নামাযের সময় থাকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত। তবে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত ইশার নামায বিলম্বিত করা মাকরূহ। আবার এর জামাতেরও একটি সময় থাকে, যা মসজিদ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

এখন কেউ যদি ইশার জামাতে শরিক হতে না পারে, তবে সে মধ্যরাত হওয়ার আগেই অর্থাৎ মাকরুহ সময় আসার আগেই ইশার নামায পড়ে নেবে। মহিলারা যারা একাকী নামায আদায় করবে, তারা মসজিদের জামাতের আগেই নিজেদের নামায আদায় করতে পারবে। এমনকি নামাযের সময় শুরু হয়ে গেলে, মসজিদে আজান না হলেও নামাজ পড়া যাবে। আর যদি কোনো কারণে কেউ মধ্যরাতের পূর্বে ইশার নামায আদায় করতে না পারে, তবে মধ্যরাতের পর হলেও সে ইশার নামায আদায় করবে। এর সীমা সুবহে সাদিক পর্যন্ত। সুবহে সাদিকের আগে যদি কেউ ইশার নামায আদায় করে, তবে তার নামায মাকরুহ সময়ে আদায় হলেও তা কাযা হয়নি।

বিষয়টি অন্য নামাযের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করতে না পারলেও নামাজের মূল সময়ের মধ্যে তা আদায় করে নেয়া জরুরি। তাহলে নামাযটি আর কাযা হবে না। মূল সময়ের মধ্যে নামায আদায় করতে পারলে তা কাযা বলে বিবেচিত হবে না। যারা মনে করেন, জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করতে না পারলে তা কাযা হয়ে গেল কিংবা নামাজের উত্তম সময় চলে গেলে বা মাকরুহ সময় চলে এলে নামায কাযা হয়ে গেল, তাদের এ ধারণা সঠিক নয়।

এ ভুল ধারণার ভিত্তিতে অনেকে নামায কাযা করে দেয়। জামাত ছুটে  গেলে তারা নামাযটিই ছেড়ে দেয়। অথচ নামাযের মূল সময়ের ভেতর যদি কোনো নামায আদায় করা হয়, তবে তা কাযা হয় না। তাই নামাযের মূল সময়ের বিষয়ে আমাদের পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। জামাতে কোনো কারণে শরিক হতে না পারলেও সময়ের মধ্যে একাকী পড়ে নিতে হবে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মূল সময় ও উত্তম সময় জানার জন্য আমাদের ব্লগে প্রকাশিত এ লেখাটি পড়ুন। মূল সময় জানতে মুসলিমস ডে অ্যাপটিও ডাওনলোড করতে পারেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ