Post Updated at 27 Mar, 2024 – 7:14 PM

তারাবীর নামাযের ফজিলত

রমযান মাসের বিশেষ একটি আমল—তারাবীর নামায আদায় করা। এ নামায কেবল রমযান মাসেই সুন্নত, বছরের অন্য কোনো মাসে নয়। এ নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদা। হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

 

مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

অর্থ : যে রমযান মাসে ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় নামাযে দাঁড়িয়ে থাকে, তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। [সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৯]

ইমাম নববী রহ. (মৃত্যু ৬৭৬ হি.) বলেছেন : وَالْمُرَادُ بِقِيَامِ رَمَضَانَ صَلَاةُ التَّرَاوِيحِ অর্থাৎ (এ হাদীসে) কিয়ামু রমযান বা রমযানের নামায বলে তারাবীর নামায উদ্দেশ্য। [শারহুন নববী লি সহীহি মুসলিম, ৭৫৯ নং হাদীসের আলোচনা]

তারাবীর নামায পুরো রমজান মাস জুড়েই আদায় করতে হয়। যদি কেউ কোনো ওযরের কারণে রোজা রাখতে না পারে, কিন্তু সে তারাবীর নামায পড়তে সক্ষম, তবে তাকেও তারাবীর নামায আদায় করতে হবে। অনেকে আবার খতমে তারাবীতে কুরআন খতম হয়ে যাওয়ার পর কিংবা সাতাশতম রাতের তারাবীর পর তারাবী পড়া ছেড়ে দেন। এটা কিছুতেই সমীচীন নয়। রমজানের প্রতি রাতেই তারাবীর নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আর তারাবীর নামাযে কুরআন খতম করা ভিন্ন আরেকটি সুন্নত।

তারাবীর রাকাতসংখ্যা

তারাবীর নামায বিশ রাকাত। প্রতি চার রাকাতের পর একটু সময় বিশ্রাম করে করে এ নামায শেষ করা হয়। সে হিসেবেই এ নামাযের নামকরণ হয়েছে সালাতুত তারাবীহ (তারাবীহ শব্দটি আরবি তারবীহা শব্দের বহুবচন, এর অর্থ বিশ্রাম)।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান সময়ে তারাবীর নামাযের রাকাতসংখ্যা নিয়ে অপ্রয়োজনীয় একটি বিতর্কে আমাদের জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। প্রতিদিন আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করি, সে নামাযগুলোতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফরজ ও সুন্নত রয়েছে। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। বিতর্ক হলো তারাবীর নামাযের রাকাতসংখ্যা নিয়ে। যারা বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, তাদের বক্তব্য হলো—তারাবীর নামায বিশ রাকাত নয়, আট রাকাত। তাদের দাবি—‘আট রাকাত তারাবী সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। আর এত শক্তিশালী দলিল থাকতে কেন আমরা তা বাদ দিয়ে বিশ রাকাত তারাবী পড়ব?!’

আমরাও বলি—নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি আট রাকাত তারাবী পড়েছেন বলে প্রমাণিত হয়, তবে তো তা-ই শিরোধার্য। ফজরের দুই রাকাত সুন্নতকে যেমন চার রাকাত আদায় করার সুযোগ নেই, ঠিক তেমনি আট রাকাত তারাবী প্রমাণিত হলে বিশ কেন, দশ রাকাত পড়ারও সুযোগ থাকবে না। কথা হলো, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আট রাকাত তারাবী পড়েছেন—এ দাবি কতটা সঠিক? যদি তা প্রমাণিত না হয়, তবে কেন এ বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা?

আমরা এখানে মোটা দাগের দুটি বিষয় আলোচনা করব—এক. আমরা কেন বিশ রাকাত তারাবী পড়ি? দুই. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আট রাকাত তারাবী পড়েছেন—বিষয়টি প্রমাণিত নয়।

আমরা কেন বিশ রাকাত তারাবী পড়ি

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কত রাকাত তারাবী পড়েছেন, তাঁদের জীবদ্দশায় তারাবী নামায কত রাকাত পড়া হতো, এ নিয়ে স্স্পুষ্ট কোনো সহীহ হাদীস নেই। হাদীসের গ্রন্থাবলিতে যা পাওয়া যায়—দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর রা. এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো। হাদীস ও ফিকহের কিতাবাদিতে এর পরবর্তী নানা যুগের নানা সময়ের কথা বর্ণিত আছে—তারাবী নামায বিশ রাকাতই পড়া হতো। হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর পরবর্তী হাজার বছরের ইতিহাসে পৃথিবীর কোনো প্রান্তেই আট রাকাত তারাবীর প্রচলন ছিল না। ফজরের দুই রাকাত আর জোহরের চার ও দুই রাকাত সুন্নতের মতোই সর্বস্বীকৃত কথা ছিল—তারাবীর নামায বিশ রাকাত। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক ছিল না। আট রাকাত তারাবীর সূচনা সম্পর্কে জানতে এ লেখাটি পড়ুন

এর অর্থ এও নয়—হযরত উমর রা. বিশ রাকাত তারাবীর সূচনা করেছেন। কেউ কেউ তো এভাবে বলেন—‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবু বকর রা.এর যুগে তারাবী আট রাকাত পড়া হতো। হযরত উমর রা.এর শাসনামলের শুরুর দিকেও আট রাকাত পড়া হতো। তিনিই পরবর্তীতে বিশ রাকাত তারাবীর সূচনা করেন।’ কিন্তু বিষয়টি মোটেও এমন নয়। কারণ—

এক.

নামাযের রাকাতসংখ্যা নির্ধারণ করা কিংবা পরিবর্তন করার অধিকার কোনো সাহাবীর ছিল না। এর কোনো নজিরও নেই। তাই এটা নিঃসন্দেহ—বিশ রাকাত তারাবীর সূচনা হযরত উমর রা. করেননি। বরং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই এ রাকাতসংখ্যা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।

দুই.

উমর রা. তারাবীর বিক্ষিপ্ত জামাতগুলোকে এক জামাত করে দিয়েছিলেন এবং হযরত উবাই রা.কে সে জামাতের ইমাম নির্ধারণ করেছিলেন। উবাই রা. সে জামাতে বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। পড়ুন, আবুল আলিয়ার বর্ণনা—

عن أبي بن كعب أن عمر أمر أبيا أن يصلي بالناس في رمضان فقال إن الناس يصومون النهار ولا يحسنون أن يقرؤا فلو قرأت القرآن عليهم بالليل فقال يا أمير المؤمنين هذا شيء لم يكن فقال قد علمت ولكنه أحسن فصلى بهم عشرين ركعة

অর্থ : হযরত উবাই ইবনে কাব রা. থেকে বর্ণিত, উমর রা. উবাই রা.কে আদেশ করেছিলেন, তিনি যেন রমযান মাসে লোকদের নিয়ে জামাতে নামায আদায় করেন। তিনি বলেছিলেন, লোকেরা তো দিনভর রোযা রাখে, তবে তারা সুন্দরভাবে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারে না। তুমি যদি তাদেরকে কুরআন পড়ে শোনাতে! উবাই রা. তখন বললেন : আমীরুল মুমিনীন! এ তো এমন এক কাজ, যা ইতিপূর্বে করা হয়নি! উমর রা. বললেন, আমি তা জানি, তবে তা উত্তম হবে। তখন উবাই রা. লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত নামায আদায় করলেন। [যিয়াউদ্দীন মাকদিসী আলহাম্বালী, আলআহাদীসুল মুখতারা, হাদীস ১১৬১। এর সনদ হাসান]

দেখা যাচ্ছে, উমর রা. এখানে নতুন যে কাজটি করেছেন তা হলো—ভিন্ন ভিন্ন জামাতকে তিনি একত্রিত করে দিয়েছিলেন, রাকাতসংখ্যা তিনি নতুনভাবে নির্ধারণ করেননি। এজন্যেই তো খোদ হযরত উবাই রা. এভাবে এক জামাত করার বিষয়ে আপত্তি করছেন। কারণ এর আগে এভাবে আমল ছিল না। কিন্তু তিনি এবং অন্য কোনো সাহাবীই বিশ রাকাত তারাবীর বিষয়ে কোনো আপত্তি করেননি। অথচ তারাবীর বিশ রাকাত যদি আগে থেকে চলে না আসত, তবে তো হযরত উবাই রা. এ নিয়েও অবশ্যই আপত্তি করতেন। বোঝা গেল, বিশ রাকাত তারাবী হযরত উমর রা.এর আবিষ্কার নয়, এটা বরং হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরই সুন্নত।

তিন.

হযরত উমর রা. এর যুগে বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো—এ মর্মে গ্রহণযোগ্য সনদে অনেক বর্ণনা রয়েছে। সেসব বর্ণনার কোথাও আছে—তার যুগে বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো, কোথাও আছে—তিনি বিশ রাকাত তারাবী পড়তে আদেশ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, মুয়াত্তা মালেকের ২৫২ নং হাদীস, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকের ৭৭৩৩ নং হাদীস, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বার ৭৭৬৪ ও ৭৭৬৬ নং হাদীস, বায়হাকীর আসসুনানুল কুবরার ৪৮০১ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

চার.

আমরা ইতিপূর্বে বলে এসেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবু বকর রা.এর যুগে তারাবী কত রাকাত পড়া হতো, তা সুস্পষ্টরূপে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়নি। তবে হাদীস ও ইতিহাসের সূত্রে এ কথা প্রমাণিত—হযরত উমর রা.এর যুগে বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো। এ বিশ রাকাতের বিষয়ে সাহাবীদেও কেউ কোনোরূপ আপত্তি করেছেন—এমন কোনো তথ্য নেই। সৌদি আরবের প্রধান মুফতী ও প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম রহ. লিখেছেন এভাবে—

عمر رضي الله عنه لما جمع الناس على أُبي بن كعب كان يصلي بهم عشرين ركعة، وكان هذا بمحضر من الصحابة، فيكون كالإِجماع

অর্থাৎ উমর রা. যখন লোকদেরকে উবাই ইবনে কাব রা.এর পেছনে একত্রিত করে দিলেন, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত নামায পড়তেন। আর তা ছিল সাহাবীদের উপস্থিতিতেই। ফলে তা ইজমার মতোই হয়ে যায়। [ফাতাওয়া ওয়া রাসায়েল, ২/১৯৬, শামেলা সংস্করণ]

পাঁচ.

বায়হাকীর আসসুনানুল কুবরার ৪৮০১ নং হাদীসের কথা আমরা ইতিপূর্বে বলে এসেছি। সেখানে হযরত উমর রা.এর যুগের বিশ রাকাত তারাবীর কথা আছে। এ কথাও আছে—হযরত উসমান রা.এর যুগে লোকেরা অনেকে নামায দীর্ঘ হওয়ার কারণে লাঠিতে ভর করে দাঁড়াতেন। এ থেকে বোঝা যায়, হযরত উসমান রা.এর যুগেও বিশ রাকাত তারাবীই পড়া হতো।

ছয়.

হযরত উবাই ইবনে কাব রা.কে হযরত উমর রা. তারাবীর জামাতের ইমাম বানিয়ে দিয়েছিলেন আর তিনি বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন—এতটুকু কথা আগেই বলা হয়েছে। হযরত উবাই রা.এর বিশ রাকাত তারাবীর বিষয়েও সাহাবীগণের কোনো দ্বিমত ছিল না। মালেকী মাযহাবের বরেণ্য ইমাম ইবনে আবদুল বার রহ. লিখেছেন—

وهو الصحيح عن أبي بن كعب من غير خلاف من الصحابة

অর্থাৎ এটাই (অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবী) হযরত উবাই ইবনে কাব রা. থেকে সহীহভাবে প্রমাণিত। এ নিয়ে সাহাবীগণের কোনো দ্বিমত নেই। [আলইসতিযকার, ২/৫৫, শামেলা সংস্করণ]

সাত.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ও বায়হাকীর আসসুনানুল কুবরা-তে হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রা.সহ কয়েকজন তাবেয়ীর আমলও বর্ণিত আছে—তারা বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন।

আট.

মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারা তো শুরু থেকেই ইসলামের উৎসভূমি, প্রাণকেন্দ্র। এ দুই শহরের বাইরে সাহাবী ও তাবেয়ীগণের যুগেই যে শহরগুলো ইলমী চর্চায় বিখ্যাত ছিল সেসবের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কুফা বসরা ও বাগদাদ। হযরত আলী রা.এর দারুল খিলাফাহ ছিল কুফায়। কথা হলো, এ পাঁচটি শহরেই সাহাবী ও তাবেয়ীগণের যুগে বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো।

ইমাম শাফেয়ী রহ. ছিলেন মক্কার অধিবাসী। তিনি বলেছেন, আমাদের শহর মক্কায় আমি লোকদেরকে এমনই পেয়েছি যে, তারা বিশ রাকাত তারাবীর নামায আদায় করেন। [জামে তিরমিযী, ৮০৬ নং হাদীসের আলোচনা]

কুফায় হযরত আলী রা. বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.ও কুফায় বসবাস করতেন। তিনিও বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। [দলিলসহ নামাযের মাসায়েল-এর সূত্রে, কিয়ামুল লাইল, পৃ. ৯১]

এ দুই সাহাবীর শিষ্য সুয়াইদ ইবনে গাফালা বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। বিখ্যাত তাবেয়ী সাঈদ ইবনে জুবায়ের, আলী ইবনে রবীয়া প্রমুখও বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। কুফার খ্যাতিমান মুহাদ্দিস ও মুজতাহিদ ফকীহ সুফিয়ান সাওরী রহ. এবং ইমাম আবু হানীফা রহ.। তারাও বিশ রাকাত তারাবীর ফতোয়া দিয়েছেন।

বসরা শহরের শীর্ষ তাবেয়ীরাও বিশ রাকাত বা এর বেশি তারাবী পড়াতেন। বাগদাদে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ.এর বাস ছিল। তিনি বিশ রাকাতের ফতোয়া দিয়েছেন। আমীরুল মুমিনীন ফিল হাদীস আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ.ও বিশ রাকাতের মত অবলম্বন করেছেন। তাদের বিপরীত মত অবলম্বন করেছিলেন মদীনাবাসীগণ এবং ইমাম মালিক রহ.।

মক্কা মুকাররমায় যখন বিশ রাকাত তারাবী পড়া হতো, তখন মদীনা মুনাওয়ারায় পড়া হতো ৩৬ রাকাত। প্রতি চার রাকাত পর পর যে বিশ্রাম, সে সময়টাতে মক্কাবাসীরা বায়তুল্লাহে তাওয়াফ করতেন। এ কারণে মদীনার লোকেরা উক্ত বিশ্রামের সময়গুলোতে (তাওয়াফের পরিবর্তে) আরও চার রাকাত নামায আদায় করতেন। এভাবে তাদের নামায হয়ে যেত মোট ৩৬ রাকাত। কেউ আরও দুই রাকাত যোগ করত। ফলে তা ৩৮ রাকাত এবং বিতিরসহ ৪১ রাকাত হতো। পরবর্তীতে মদীনাতেও বিশ রাকাত তারাবীই প্রচলিত হয়। (বিগত ২০২০ সালের করোনা মহামারীর আগপর্যন্ত মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে বিশ রাকাত তারাবীই পড়া হতো। করোনা-পরিস্থিতিতে নানা বিধিনিষেধের সঙ্গে সেখানকার প্রশাসন তারাবীর নামাযও দশ রাকাত করে দেয়। সে ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালেও হারামাইনে দশ রাকাত তারাবী পড়া হচ্ছে।)

নয়.

তারাবীর নামায কত রাকাত—এ নিয়ে এভাবে একটু মতভিন্নতার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ কারও মতে বিশ রাকাত, কারও মতে ৩৬ বা ৩৮ রাকাত। ইমাম তিরমিযী রহ. এ দুটো মতই উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বিশ রাকাতের কম তারাবীর নামাযর কোনো মত তিনি উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন : তারাবীর নামায নিয়ে আলেমদের মতভিন্নতা রয়েছে। তাদের কেউ কেউ বিতিরসহ ৪১ রাকাতের কথা বলেছেন। এটা মদীনাবাসীদের বক্তব্য। আর অধিকাংশ আলেমের মত সেটাই, যা হযরত উমর আলী রা.সহ অন্যান্য সাহাবী থেকে বর্ণিত। অর্থাৎ বিশ রাকাত। এটাই সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারক ও শাফেয়ী রহ.এর মত। [৮০৬ নং হাদীসের আলোচনা]

দশ.

সবশেষে শাইখুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া রহ.এর বক্তব্য উল্লেখ করছি। যারা হাদীস মানার দোহাই দিয়ে মাযহাব অনুসরণের স্বীকৃত সরল পদ্ধতিকে অস্বীকার করতে চান, তারা অনেক ক্ষেত্রেই ইমাম ইবনে তায়মিয়া রহ.এর কথা বলে থাকেন। তিনি অবশ্য তারাবীর নির্দিষ্ট রাকাতসংখ্যাকেই অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন :

وَالْأَفْضَلُ يُخْتَلَفُ بِاخْتِلَافِ أَحْوَالِ الْمُصَلِّينَ، فَإِنْ كَانَ فِيهِمْ احْتِمَالٌ لِطُولِ الْقِيَامِ، فَالْقِيَامُ بِعَشْرِ رَكَعَاتٍ وَثَلَاثٍ بَعْدَهَا. كَمَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي لِنَفْسِهِ فِي رَمَضَانَ وَغَيْرِهِ هُوَ الْأَفْضَلُ، وَإِنْ كَانُوا لَا يَحْتَمِلُونَهُ فَالْقِيَامُ بِعِشْرِينَ هُوَ الْأَفْضَلُ، وَهُوَ الَّذِي يَعْمَلُ بِهِ أَكْثَرُ الْمُسْلِمِينَ، فَإِنَّهُ وَسَطٌ بَيْنَ الْعَشْرِ وَبَيْنَ الْأَرْبَعِينَ، وَإِنْ قَامَ بِأَرْبَعِينَ وَغَيْرِهَا جَازَ ذَلِكَ وَلَا يُكْرَهُ شَيْءٌ مِنْ ذَلِكَ. … وَمَنْ ظَنَّ أَنَّ قِيَامَ رَمَضَانَ فِيهِ عَدَدٌ مُوَقَّتٌ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُزَادُ فِيهِ وَلَا يَنْقُصُ مِنْهُ فَقَدْ أَخْطَأَ،

অর্থ : মুসল্লিদের অবস্থা অনুসারে বিবেচিত হবে—কোনটা উত্তম। তারা যদি দীর্ঘ সময় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, তবে দশ রাকাত তারাবী ও তিন রাকাত বিতির পড়বে, যেমনটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে রমযানে ও রমযানের বাইরে পড়তেন। এটাই তখন উত্তম হবে। আর যদি এটা তারা না পারে, তবে বিশ রাকাত পড়াই উত্তম। অধিকাংশ মুসলমান এর ওপরই আমল করে। কেননা এটা দশ ও চল্লিশের মাঝামাঝি। আর যদি চল্লিশ রাকাত বা এর কমবেশি পড়ে, তবে তাও জায়েয। এর কোনোটাই মাকরুহ নয়। … আর যে মনে করে, রমযানের তারাবীর রাকাতসংখ্যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমনভাবে নির্দিষ্ট, যা কমবেশি করা যাবে না, তবে সে ভুল করল। [আলফাতাওয়াল কুবরা, ২/১২০]

তারাবীর রাকাতসংখ্যা নির্দিষ্ট না থাকার এ বক্তব্য সাহাবী-তাবেয়ীগণের এবং তাদের পরবর্তী ফকীহ-মুজতাহিদগণের কর্মপন্থা ও ফতোয়ার পরিপন্থী। তবে শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ.এর অনুসরণে যারা তারাবীর নামায আট রাকাতই পড়তে হবে, এর বেশি পড়া যাবে না—এ ফতোয়া দিয়ে থাকেন, ইবনে তায়মিয়া রহ.এর বক্তব্যটি তাদের চিন্তার দুয়ার খুলে দিতে পারে।

সার কথা, সাহাবী-তাবেয়ীদের আমল ও ফতোয়া, মুজতাহিদ ইমামগণের ফতোয়া, বিখ্যাত ইলমী শহরগুলোর আমলের বর্ণনা, শত শত বছর ধরে মুসলমানদের মধ্যে চর্চিত কর্মপন্থা—এ সবকিছুর আলোকেই প্রমাণিত হয়, তারাবীর নামায বিশ রাকাত এবং এ রাকাতসংখ্যা পরোক্ষভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই প্রমাণিত। বিশ রাকাত তারাবী কেবলই হানাফী মাযহাবের মাসআলা নয়। বরং পুরো পৃথিবীজুড়ে চার মাযহাবের একটাই মত—তারাবী বিশ রাকাত।

অনেক মাসআলাতেই সাহাবায়ে কেরামের মধ্যেই মতভিন্নতা পাওয়া যায় এবং এর সূত্র ধরে পরবর্তীতে মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যেও সে মতভিন্নতা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তারাবীর রাকাতসংখ্যা বিষয়ে সাহাবীদেরও কোনো মতভিন্নতা নেই, পরবর্তীকালের মুজতাহিদ ও গবেষক আলেমদেরও কোনো মতভিন্নতা নেই। আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস এমনই।

পরবর্তী আলোচনা : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আট রাকাত তারাবী পড়েছেন—বিষয়টি প্রমাণিত নয়

আট রাকাতের দলিল :

যারা আট রাকাত তারাবীর কথা বলে থাকেন, তাদের বিখ্যাত দলিল সহীহ বুখারীর ২০১৩ নং হাদীস। হাদীসের ভাষ্য নিম্নরূপ :

عن أبي سلمة بن عبد الرحمن أنه سأل عائشة ، رضي الله عنها ، كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم في رمضان فقالت ما كان يزيد في رمضان ، ولا في غيرها على إحدى عشرة ركعة يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي ثلاثا

অর্থ : হযরত আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা রা.কে জিজ্ঞেস করেছেন, রমযানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায কেমন ছিল? তিনি বলেছেন : তিনি রমযানে এবং রমযানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি নামায পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, তুমি এ রাকাতগুলোর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জানতে চেয়ো না। এরপর আবার চার রাকাত পড়তেন। তুমি এগুলোর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতার কথা জিজ্ঞেস করো না। এরপর তিনি তিন রাকাত (বিতির) পড়তেন। (সহীহ বুখারী, ২০১৩)

এ হাদীস দিয়ে দুইভাবে আট রাকাত তারাবী প্রমাণ করা যেতে পারে।

এক. হযরত আয়েশা রা.কে রমযানের রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পরই তিনি আট রাকাত নামাযের কথা বলেছেন। আর বলাবাহুল্য, রমযানের রাতের বিশেষ নামায তো তারাবীর নামায-ই।

দুই. ইমাম বুখারী রহ. এ হাদীস বর্ণনা করেছেন তারাবীর নামায শীর্ষক পরিচ্ছেদে। ফলে কেউ সহজেই এ হিসাব মিলাতে পারে—রমযানের রাতে আট রাকাত তারাবী পড়ার বিষয়টি সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই প্রমাণিত। তাই যদি হয়, তবে আমরা বিশ রাকাত পড়ব কেন? প্রশ্নটি এভাবেও করা যায়—রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আট রাকাত তারাবীর এমন সহীহ বর্ণনা থেকে থাকে, তবে কী করে তাঁর পরবর্তীতে সাহাবী-তাবেয়ীগণ কোনোপ্রকার মতবিরোধ ছাড়াই বিশ রাকাত তারাবী মেনে নিলেন? পরবর্তীতেও কীভাবে হাজার বছরের অধিক কাল ধরে বিশ রাকাত তারাবীর আমল চর্চিত হয়ে আসছে? এমন স্পষ্ট সহীহ হাদীসের এমন বিরোধিতা কি কল্পনা করা যায়!

এ হাদীসের মূল মর্ম

একটু গভীর দৃষ্টিতে দেখলেই বোঝা যাবে—এ হাদীস আট রাকাত তারাবীর দলিল হতে পারে না। এখানে বরং তাহাজ্জুদের নামাযের কথা বলা হয়েছে। লক্ষ করুন—

এক.

হযরত আয়েশা রা. স্পষ্টই বলেছেন—রমযানে ও রমযানের বাইরে তিনি এগার রাকাতের বেশি পড়তেন না। বোঝা গেল, এটা এমন কোনো নামায হবে, যা সারা বছরই পড়া হয়, শুধুই রমযানে নয়। আর তা হলো তাহাজ্জুদের নামায, তারাবীর নামায নয়।

দুই.

এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একাকী নামাযের বিবরণ রয়েছে। একাকী বিতির পড়ার বিবরণ রয়েছে। অথচ তারাবীর নামায জামাতে পড়া হয়, তারাবীর পর বিতিরও জামাতে পড়া হয়। একাকী পড়া হয় তাহাজ্জুদের নামায।

তিন.

আট রাকাত তারাবীর পক্ষে যদি এত সুস্পষ্ট দলিল থাকত, তবে সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে হাজার বছরের ইতিহাসে এমন অনেক ফকীহ ও মুজতাহিদ থাকতেন, যারা আট রাকাত তারাবীর কথা বলতেন এবং বিশ রাকাত তারাবীকে প্রত্যাখ্যান করতেন। কিন্তু কোনো সাহাবী-তাবেয়ী, কোনো ফকীহ-মুজতাহিদ আট রাকাতের মত ব্যক্ত করেননি। তারা বরং প্রায় সকলেই বিশ রাকাতের কথা বলেছেন। কেউ কেউ অবশ্য ৩৬ বা ৩৮ রাকাতের কথাও বলেছেন। বোঝা গেল, তাদের দৃষ্টিতে এ হাদীস তারাবীর নয়, তাহাজ্জুদের।

চার.

এ হাদীসটি যেমন সহীহ, তেমনি প্রসিদ্ধও। হাদীসের বিখ্যাত অনেক কিতাবেই তা উদ্ধৃত হয়েছে। ইমাম বুখারী রহ.এর পাশাপাশি ইমাম মালিক, ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী, আবদুর রাযযাক, দারিমী, আবু আওয়ানা, ইবনে খুযায়মা রহ. প্রমুখ এ হাদীসটিকে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তারা কেউই একে কিয়ামু রমাযান বা তারাবীর অধ্যায়ে উল্লেখ করেননি। বরং তারা এ হাদীস তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। [উল্লেখ্য, তারাবীর নামাযের শিরোনাম হচ্ছে কিয়ামু রমাযান আর তাহাজ্জুদের শিরোনাম কিয়ামুল্লাইল বা সালাতুল্লাইল।]

একমাত্র ইমাম বুখারী রহ. এ হাদীসকে তারাবীর অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। তিনি অবশ্য হাদীসটিকে তাহাজ্জুদের অধ্যায়েও উল্লেখ করেছেন। হাদীসের ছাত্রদের কাছে বিষয়টি অজানা নয়—ইমাম বুখারী রহ. খুব সামান্য মুনাসাবাত বা সম্পর্কের ভিত্তিতেও কোনো শিরোনামের অধীনে হাদীস উল্লেখ করেছেন। তাই এখানে এমনও হতে পারে, তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রমযানে তারাবীর নামায তো যা পড়ার পড়বেই। এরপর তাহাজ্জুদও পড়া উচিত। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা বছরই এ তাহাজ্জুদের নামায আদায় করতেন।

পাঁচ.

এ হাদীস যদি তারাবীর নামায সংক্রান্ত হতো, তবে সাহাবায়ে কেরামের পক্ষে এর বিপরীতে গিয়ে একমত হয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। তারা কেউ না কেউ এর প্রতিবাদ করতেনই। হযরত আয়েশা রা.এর চোখের সামনেই তো বিশ রাকাত তারাবী পড়া হলো প্রায় ৪০ বছর। কিন্তু কোনো প্রতিবাদ তিনিও করলেন না। সাহাবীগণ সম্পর্কে যাদের সামান্য জানাশোনাও আছে, তারা জানেন, শরিয়তের ক্ষেত্রে তারা কতটা কঠোর ছিলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাবিরোধী কোনো কিছু তারা কখনোই মেনে নিতে পারতেন না।

ছয়.

আহলে হাদীস ঘরানার আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান রহ. বলেছেন : لم يأت تعيين العدد في الروايات الصحيحة المرفوعة অর্থাৎ সহীহ মারফু হাদীসে (তারাবীর নামাযের) রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। [আলইনতিকাদুর রাজীহ, পৃ. ৬১ এর সূত্রে, দলিলসহ নামাযের মাসায়েল, পৃ. ৪৪০] আট রাকাতের উপরোক্ত হাদীস যদি তারাবীর নামাযের হাদীসই হতো, তবে এমন সহীহ মারফু হাদীস থাকার পরও নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান রহ. কেন এমন কথা বলবেন?

উপরোক্ত বিষয়গুলো সামনে রেখে নির্দ্বিধায় এ কথা বলা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আট রাকাত তারাবী পড়েছেন—বিষয়টি আদৌ প্রমাণিত নয়। আট রাকাতের এ হাদীস তাহাজ্জুদের নামাযের হাদীস, তারাবীর নামাযের নয়।

[লেখাটি ইতিমধ্যে অনেক বড় হয়ে যাওয়ায় আপাতত এখানেই তা শেষ করছি। সাদামাটা বর্ণনায় আমরা এখানে বিষয়টি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। এখানে শাস্ত্রীয় অনেক আলোচনা রয়েছে। সাধারণ পাঠকের জন্যে উপযোগী নয় মনে করে আমরা তা এড়িয়ে গেছি। কথাও সংক্ষিপ্ত করেছি। যারা বিষয়টি আরও বিস্তারিত জানতে চান, বিশ রাকাত তারাবীর দলিলসমূহের ওপর আরোপিত অভিযোগসমূহের পর্যালোচনা জানতে চান, আট রাকাত তারাবীর পক্ষে উপস্থাপিত আরও দলিল এবং সেসবের দলিলনির্ভর জবাব জানতে চান, এককথায় যারা তারাবীর রাকাতসংখ্যা বিষয়ক সংশয় দূর করতে চান, তারা বিদগ্ধ হাদীস গবেষক মাওলানা আবদুল মতীন হাফিযাহুল্লাহ রচিত দলিলসহ নামাযের মাসায়েল বইটি থেকে ‘তারাবী বিশ রাকাত পড়া সুন্নত’ শীর্ষক আলোচনাটি পড়ুন। গুগল প্লে স্টোর থেকেও বইটি ডাউনলোড করতে পারেন]

Comments
  1. You are Right

  2. 100 ভাগ যুক্তিক

  3. 100% rights

  4. আপনাদের ৮আর ২০ এর গুতাগুতিতে আমরা সাধারণ মানুষ চিরে চ্যাপ্টা। এখন আমাদের অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে হয় আমরা তারাবির নামাজই পড়বো না,নয়তো আট বিশ বাদ দিয়ে আমাদের ইচ্ছা মত পড়বো।

    1. জ্বি, হাজার বছর ধরে যেই আমল অব্যাহত রয়েছে। অজস্র সাহাবীগণ ২০ রাকাতের আমল করে গেছেন। বাংলাদেশেও বহুকাল যাবত সাহাবীগণের ধারা অনুসরণে ২০ রাকাত পড়া হয়ে আসছে। কারা এই বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য ৮ রাকাতের দাওয়াত দেয়া শুরু করলো? কেন এই ফিতনা শুরু করলো? এই প্রশ্নটা কি কখনো মাথায় এসেছে? কারা এই বলে ফিতনা সৃষ্টি করলো যে “হানাফীদের নামাজই হয় না!”? সাহাবীগণের আমলকে কারা নির্দ্বিধায় বিদআত বানিয়ে দেয়? তাদের অপবাদের জবাব দিতে গেলে দুটি কথা তো হবেই। নইলে তো যারা ২০ পড়ছেন তারা ভাববেন আসলেই বুঝি বিদআত হচ্ছে। ফিতনা সৃষ্টিকারীদের দাওয়াতের প্রভাব এখন মসজিদে মসজিদে। ৮ রাকাতের পর মসজিদের মুসল্লি হয়ে যায় অর্ধেক। এই বিভ্রান্তিগুলো তেনারা না ছড়ালেও পারতেন।

  5. পিওর মাজহাবী পোস্ট, এইরকম আর্টিকেল লিখে অনেক কিছুই প্রমান(!) করা যায়।

    1. আমরা তো স্পষ্টই বলি আমরা হানাফী মাযহাব অনুসরণ করি এবং হানাফী মাযহাব অনুসারে বিভিন্ন আর্টিকেল পোস্ট মাসআলা ইত্যাদি লিখে থাকি । যারা অন্য কোন মাযহাব অনুসরণ করেন তাদেরকেও শ্রদ্ধা করি। আর যারা মাজহাব অস্বীকারের নাম করে প্রকারান্তরে উম্মাহর স্বীকৃত সর্বজনশ্রদ্ধেয় বরেণ্য ইমামদেরকে আঘাত করতে চান তাদের প্রত্যাখ্যান করি।

  6. আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের এতো সুন্দর ইসলামের খেদমত দেখে অন্তর থেকে দুয়া চলে আসে ভাই🤍❤️
    এই উম্মাহ এর জন্য আপনাদের সহযোগিতার সীমা নেই, এগিযান ভাই এরা।
    আপনারাই তো মুত্তাকী।

  7. শুকরান যাঝাকাল্লাহ।

    তবে অধিকাংশ মাসজিদেই তারাবিহ নামাজে তারতিল সহকারে কুরআন তিলাওয়াত করা হয় না। যার কারনে বিশ রাকাত নামাজের আসল মজাটাই পাওয়া যায় না।

    এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ