Post Updated at 3 Dec, 2024 – 10:13 PM
‘সূরা মুমিনূন’ এর শুরুতে আল্লাহ তাআলা সফল মুমিনের যে গুণাবলি উল্লেখ করেছেন, আগের পর্বে সেসব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সূরা মুমিনূন ছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তাআলা সফল মুমিনের আরো কিছু গুণের উল্লেখ করেছেন।
প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য, আল্লাহ তাআলা পুরো কুরআনে সফল মুমিনের যে গুণাবলিসমূহ উল্লেখ করেছেন তার সবগুলোই নিজের মাঝে পরিপূর্ণভাবে ধারণ করা। কুরআনে উল্লেখিত সফল মুমিনের আরও কতিপয় গুণাবলি নিয়ে আলোচনা করা হবে এই পর্বে।
১. তাকওয়া অবলম্বন করা
তাকওয়া মুমিনের অন্যতম প্রধান গুণ। তাকওয়াই সকল কল্যাণের মূল। বিভিন্ন প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের আড়াই শতাধিক স্থানে তাকওয়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
‘এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় করে চল, যাতে তোমরা সফল হতে পার।’ [সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৯, সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩০]
তাকওয়া মানে খোদাভীতি। তাকওয়া বা খোদাভীতি অবলম্বনের অর্থ হলো- অন্তরে সর্বদা এই চেতনা জাগ্রত রাখা যে, একদিন আল্লাহ তাআলার দরবারে আমাকে আমার সমস্ত কর্মের জবাবদিহি করতে হবে। কাজেই আমার এমন কোনো কাজ করা উচিত হবে না, যা তাঁর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে। এই ভয় ও চেতনার নামই তাকওয়া। যার অন্তরে এই চেতনা জাগ্রত থাকবে সে আল্লাহ তাআলার নির্দেশিত অতি সামান্য বিষয়ও খুব যত্নের সাথে মেনে চলবে। আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন এমন অতি সামান্য বিষয় থেকেও খুব সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকতে সচেষ্ট হবে। এরপর এমন ব্যক্তির সফল হতে আর বাধা কীসের?
তাকওয়া অবলম্বনকারীর সফলতা উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُعْظِمْ لَهُ أَجْرًا
‘আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে চলবে, আল্লাহ তার পাপরাশি মার্জনা করবেন এবং তাকে দিবেন মহা পুরস্কার।’ [সূরা তালাক, আয়াত : ৫]
২. সৎ কাজ করা
সফল মুমিনের অন্যতম গুণ সৎ কাজ। ঈমানের পরে আল্লাহর নির্দেশিত সৎকাজের মাধ্যেমেই সে সফলতার পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَأَمَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَعَسَىٰ أَن يَكُونَ مِنَ الْمُفْلِحِينَ
‘তবে (মুশরিকদের মধ্যে) যারা তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, পূর্ণ আশা রাখা যায় তারা সফল হবে।’ [সূরা কাসাস, আয়াত : ৬৭]
আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশের উত্তম পন্থা হলো সৎ কাজ। সৎ কাজের মাধ্যমেই মুমিনগণ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং সফলতা অর্জন করেন। সৎকাজের কয়েকটি নমুনা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা এ ঘোষণাই দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَآتِ ذَا الْقُرْبَىٰ حَقَّهُ وَالْمِسْكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ ۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ يُرِيدُونَ وَجْهَ اللَّهِ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
‘সুতরাং আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্তকে ও মুসাফিরকেও। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে তাদের জন্য এটাই শ্রেয়। তারাই সফল।’ [সূরা রুম: ৩৮]
যে মুমিন সৎ কাজ করবে আল্লাহ তাআলার ওয়াদা- তিনি তাকে দুনিয়ায় পবিত্র ও উত্তম জীবন দান করবেন। আল্লাহ বলেন :
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً
‘যে মুমিন সৎ কাজ করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী- আমি অবশ্যই তাকে পবিত্র জীবন দান করব।’ [সূরা নাহল, আয়াত : ৯৭]
আর আখেরাতে তার জন্য রয়েছে সফলতার সর্বোচ্চ পুরস্কার- আল্লাহ তাআলার সাক্ষাৎ লাভ। যেমনটি এসেছে অপর আয়াতে :
فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
যে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন সৎ কাজ করে এবং স্বীয় রবের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে। [সূরা কাহ্ফ: ১১০]
৩. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বাধা প্রদান
সূরা আলে ইমরানে আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
‘তোমাদের মধ্যে যেন এমন একটি বিশেষ দল থাকে যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎকাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজে বাধা দেবে। এরাই সফল।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪]
আয়াতে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানকারী মুমিনদেরকে সফল বলা হয়েছে। কারণ, যখন কেউ মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎ কাজের আদেশ করবে এবং তাদেরকে অসৎ কাজ থেকে বাধা দেবে তখন তার জন্য মন্দ ও পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। কমপক্ষে চক্ষুলজ্জার কারণে হলেও সে অসৎ ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। মন্দ ও পাপের কাজে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি হলেও তার বিবেকই তাকে তা থেকে বাধা দিবে। সে তখন নিজেকে প্রশ্ন করবে : আমি নিজে অন্যকে এ সমস্ত কাজ থেকে বাধা দিয়ে থাকি; এমতাবস্থায় আমিই আবার কী করে এ কাজে জড়াই?
একইসাথে এ কাজ তাকে সৎ ও পূণ্য কাজে উদ্বুদ্ধ করবে। সে যে সত্যিই তার আদেশে সত্যবাদী, তার আদেশকৃত কাজটি যে অবশ্যই করা উচিৎ- সেটা বোঝানোর জন্য হলেও দুয়েকবার নিজ থেকে সে সেই কাজটি করতে চাইবে। এভাবে একসময় ভালো কাজ করা তার জন্য সহজ হয়ে যাবে। যারা অন্যকে সৎকাজের আদেশ করে অথচ নিজেরা সেই কাজ থেকে বিরত থাকে কুরআনে তাদের নিন্দা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ
‘তোমরা কি লোকদের সৎকাজের আদেশ কর আর নিজেদের ভুলে যাও?’ [সূরা বাকারা, আয়াত : ৪৪]
তবে জরুরি বিষয় হচ্ছে- শরিয়তের মানদণ্ডে কোন কাজটি সৎ আর কোন কাজটি অসৎ সে সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান হাসিল করে নেয়া। অন্যথায় দেখা যাবে, সৎকে অসৎ আর অসৎকে সৎ ভেবে অপরকে আদেশ-নিষেধ করে গোলমাল পাকিয়ে ফেলবে। শেষে সে সমাজে ফাসাদসৃষ্টিকারী সাব্যস্ত হবে। এ কাজ তার জন্যে সফলতার বদলে ব্যর্থতা বয়ে আনবে।
৪. আল্লাহর পথে জিহাদ করা
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বাধা প্রদানের অন্যতম মাধ্যম ও প্রকাশক্ষেত্র হচ্ছে- আল্লাহর পথে জিহাদ করা। কুরআনি পরিভাষায় এর অর্থ, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শত্রুর সঙ্গে লড়াই করা; এর মাধ্যমে আল্লাহর বান্দাদেরকে তাঁর প্রতি ঈমানের আহ্বান করা হয় এবং তাদেরকে তাঁর হুকুমের অনুগামী করা হয়। সফল মুমিন আল্লাহর পথে জিহাদেও থাকে অগ্রগামী। আর এর মাঝেই তার সফলতা নিহিত। আল্লাহ তাআলা বলেন :
لَٰكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ جَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ وَأُولَٰئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
‘কিন্তু রাসূল এবং যে সকল লোক তার সঙ্গে ঈমান এনেছে তারা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। তাদেরই জন্য সর্বপ্রকার কল্যাণ এবং তারাই সফল।’ [সূরা তাওবা, আয়াত : ৮৮]
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ اللَّهِ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ
‘যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি মর্যাদাবান এবং তারাই সফল।’ [সূরা তাওবা: ২০]
উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ে দেখতে পাই, যে সকল মুমিন আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য দুটি বিশেষ ঘোষণা দিয়েছেন। এক. তাদেরই জন্য সর্বপ্রকার কল্যাণ, দুই. তারা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি মর্যাদাবান। যে মুমিন সর্বপ্রকার কল্যাণ লাভ করল এবং আল্লাহর কাছে অনেক মর্যাদার অধিকারী হলো তার সফলতার আর কী-ই বা বাকি আছে! সে তো অবস্থান করছে সফলতার শীর্ষ চূড়ায়।
এছাড়া ‘জিহাদ’ শব্দটির দ্বিতীয় একটি অর্থ রয়েছে, যা অতি ব্যাপক। দীনের ওপর চলার লক্ষ্যে যে কোনো প্রকারের চেষ্টাকেই জিহাদ বলা হয়। কুরআনে কারীমে এ অর্থেও জিহাদ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাদের জন্যও রয়েছে সুসংবাদ। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا
‘যারা আমার পথে সাধনা করবে আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথসমূহের দিশা দেব।’ [সূরা আনকাবূত, আয়াত : ৬৯]
অর্থাৎ যারা আল্লাহর রাস্তায় মেহনত করে, দুঃখ-কষ্ট বরণ করে এবং বিভিন্ন রকম সাধনায় লিপ্ত থাকে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এক বিশেষ অন্তর্দৃষ্টি দান করেন এবং স্বীয় নৈকট্য ও সন্তুষ্টি ও জান্নাতের পথের বুঝ-সমঝ দান করেন। [তাফসীরে উসমানী]
৫. সবর করা
উল্লিখিত গুণাবলি অর্জনে সবরের বিকল্প নেই। নিজে সৎ কাজ করতে, অপরকে সৎ কাজের আদেশ দানে ও মন্দ কাজ থেকে বাধা প্রদানে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে গিয়ে মুমিন ব্যক্তি পদে পদে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হবে। সেই সব ক্ষেত্রে সবরের পরিচয় দিতে হবে সুনিপুণভাবে, নয়তো পা পিছলে পদচ্যুত হবার আশংকা অনেক। তাই সবরকেও সফল মুমিনের অন্যতম গুণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
‘হে মুমিনগণ, সবর অবলম্বন করো, শত্রুর মোকাবেলায় অটল অবিচল থাকো এবং সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত থাকো। আর অল্লাহকে ভয় করে চলো, যাতে তোমরা সফল হতে পার।’ [সূরা আল ইমরান: ২০০]
আয়াতে ‘সবর’ শব্দের মর্ম অতি ব্যাপক। এর বিভিন্ন স্তর ও প্রকার রয়েছে। যেমন : আল্লাহর আনুগত্যে অবিচল থাকতে সবর করা, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য মনের ইচ্ছা ও চাহিদাকে দমন করতে সবর করা এবং জীবনে চলার পথে বিভিন্ন দুঃখ-কষ্টে সবর করা। এখানে এই তিন প্রকার সবরই উদ্দেশ্য। শত্রুর মোকাবেলায় অটল অবিচল এবং ইসলাম ও মুসলমানের সীমান্ত রক্ষায় সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে সবরের আদেশ করেছেন। সবরের মাধ্যমে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেন। সাথে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি সবরকারীদের সাথেই আছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
‘হে মুমিনগণ, সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবরকারীদের সঙ্গে আছেন।’ [সূরা বাকারা, আয়াত : ১৫৩]
এর দুই আয়াত পরই আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে আগাম বলে দিয়েছেন- দুনিয়ার জীবনে তিনি তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষার সম্মুখীন করবেন। সেই সব পরীক্ষায় যারা ধৈর্যের প্রমাণ দিতে পারবে তাদেরকে স্বয়ং তিনিই সুসংবাদ দিয়েছেন। বাতলে দিয়েছেন সেই সময়ের করণীয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ () الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব (কখনও) কিছুটা ভয়-ভীতি দ্বারা, (কখনও) ক্ষুধা দ্বারা এবং (কখনও) জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। সুসংবাদ শোনাও তাদেরকে, যারা (এরূপ অবস্থায়) সবরের পরিচয় দেয়। যারা তাদের কোনো মুসিবত দেখা দিলে বলে ওঠে, আমরা সকলে আল্লাহরই এবং আমাদেরকে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ [সূরা বাকারা: ১৫৫, ১৫৬]
উল্লেখ্য, উপরোক্ত গুণাবলি মূলত তাকওয়ারই অংশ। যে মুমিন বান্দার হৃদয়ে সত্যিকার অর্থেই তাকওয়া ও খোদাভীতির চেতনা জগ্রত থাকবে সেই এ গুণাবলি নিজের মাঝে পরিপূর্ণভাবে ধারণ করতে পারবে। তার জন্য এ গুণাবলি অর্জন ও তাতে অবিচল থাকা অতি সহজ হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন। তাকওয়ার দাবি পূরণে এবং সংশ্লিষ্ট গুণগুলোও নিজেদের মাঝে ধারণে সর্বোচ্চ সচেষ্ট হবার তাওফিক দান করুন। পরিশেষে আমাদেরকে সফল মুমিন ও তাঁর প্রিয় বান্দারূপে কবুল করে নিন। আল্লাহর দরবারে আমাদের এই আরজি।
[লেখাটি প্রস্তুতি করেছেন মাওলানা সাকিব মাহমুদ, শিক্ষক, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা]
Leave a Reply