Post Updated at 27 Sep, 2024 – 11:54 AM
ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত সার্বজনীন এক জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের প্রতিটি অঙ্গনে রয়েছে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। এমনিভাবে ইসলাম পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। তন্মধ্যে গুরত্বপূর্ণ একটি বিধান হলো, পুরুষের জন্য টাখনুর উপর কাপড় পরিধান করা।
পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা ইসলামে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানের ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
من جر ثوبه خيلاء لم ينظر الله اليه يوم القيامة
অর্থ: যে ব্যাক্তি অহংকারবশত নিজ কাপড় জমিনে টেনে-হেঁচড়ে চলে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দিকে তাকাবেন না। (বুখারী, হাদীস নং – ৫৭৮৪ )
টাখনুর নিচে কাপড় পরিহিত অংশ জাহান্নামে যাবে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ما أسفل من الكعبين من الإزارففي النار
অর্থ: পুরুষের পাজামা-লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা জাহান্নামে যাবে। (বুখারী, হাদীস নং – ৫৭৮৭ )
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান অহংকারের আলামত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
واياك و إسبال الازار فانه من المخيلة وان الله لا يحب المخيلة
অর্থ: তোমরা টাখনুর নিচে পাজামা বা লুঙ্গি পরিধান করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা এটা অহংকারের আলামত। আর আল্লাহ তায়ালা অহংকারকে পছন্দ করেন না। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৪০৮৪ )
উপরের বর্ণনাগুলো থেকে একথা সহজেই বুঝা যায় যে,পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা অত্যন্ত ভয়াবহ গুনাহ। আল্লাহ না করুন! একজন মুসলিমকে এই বিধান লঙ্ঘনের কারণে জাহান্নামেও যেতে হতে পারে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, অধিকাংশ মানুষ ইসলামের এই গুরত্বপূর্ণ বিধানের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপই করেন না। কিছু মানুষ নামাজের আগে কেবল টাখনুর উপর কাপড় উঠানোকে জরুরী মনে করেন। অথচ নামাজের ভিতরে বাইরে সর্বাস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টাখনুর উপর কাপড় পরতে আদেশ করেছেন।
একটি ভুল ধারনা: অহংকারের নিয়ত না থাকলে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা যায়
ইতিপূর্বে আমরা বর্ণনা করে এসেছি যে, হাদীস শরীফে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করাকে স্বয়ং অহংকারের আলামত বলা হয়েছে।
আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
وحاصله أن الاسبال يستلزم جر الثوب و جر الثوب يستلزم الخيلاء, ولم يقصد اللابس الخيلاء
অর্থ: টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করলে কাপড় টেনে ধরে চলা আবশ্যক হয়। আর কাপড় টেনে চলাফেরা করলে কাপড় পরিধানকারী অহংকারের ইচ্ছা পোষণ না করলেও অন্তরে অহংকার চলে আসে। (ফাতহুল বারী – ১০/৩২৫, কিতাবুল লিবাস)
প্রকৃতপক্ষে মানুষ তার নফসের কাছে এতটাই অসহায় যে, নফস কখন তার মাঝে অহংকারের বীজ বপন করবে আর কখন করবেনা সেটা নিয়ন্ত্রন করা বা জানা মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তাই টাখনুর নিচে কাপড় পরলে অহংকার আসবে না এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবেনা। অতএব অহংকার না থাকলে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানে কোন সমস্যা নেই- এমন দৃষ্টিভঙ্গি শরিয়তসম্মত নয়। যৌক্তিকও নয়।
অহংকারের নিয়ত না থাকলেও পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা জায়েয নয়। অহংকারের নিয়ত থাকলে তো আরো মারাত্মক গুনাহ। বরং হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা অহংকারের আলামত। তাই সর্বাবস্থায় প্রত্যক মুমিন-মুসলমানের জন্য ইসলামের এই মহা-গুরত্বপূর্ণ বিধান মেনে চলা একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা সকলকে এই বিধান মেনে চলার তাওফীক দান করুন।
Comments (2)
এ.কে.এম.মিজানূর রহমানsays:
August 7, 2024 at 2:31 pmমুসলিম ডে একটি অসাধারণ আ্যপ।
দৈনন্দিন জীবনে আ্যপটির গুরত্ব অপরিসীম যারা এটি অক্লান্ত পরিশ্রম করে ডেভেলপ করেছেন তাঁদের সবাইকেই অভিনন্দন ।
নজরুল ইসলামsays:
September 1, 2024 at 5:07 amআপনাদের ধন্যবাদ