Post Updated at 30 Jan, 2025 – 10:47 AM
তিন পর্ব ব্যাপী ‘কুরআনের ভাষায় সফল মুমিনের পরিচয়’ শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে কুরআনে বর্ণিত একজন সফল মুমিনের গুণাবলি উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিবন্ধে আমাদের আলোচ্য বিষয় সফল মুমিনের পুরষ্কার। মানুষ যখন কোনো বিষয়ের উপকারিতা ও শুভ পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারে তখন সেই বিষয়ে আগ্রহী হয়। যখন কোনো বিষয়ের অপকারিতা ও অশুভ পরিণতি সম্পর্কে জানা থাকে তখন ঐ বিষয় থেকে বিরত থাকাও সহজ হয়। তাই পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও আগ্রহের সাথে যেন আমরা সফল মুমিন হওয়ার পথে অগ্রসর হতে পারি এবং সেই চেষ্টায় রত থাকতে পারি, সেজন্যই এই বিষয়ের অবতারনা।
উভয় জীবনেই সুসংবাদ
সফল মুমিনের জন্য একাধিক পুরস্কারের ঘোষণা এসেছে কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে। তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত- উভয় জীবনেই দেওয়া হয়েছে সুসংবাদ। আল্লাহ তাআলা বলেন:
الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ كَانُوْا یَتَّقُوْنَ – لَهُمُ الْبُشْرٰی فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ فِی الْاٰخِرَةِ ؕ لَا تَبْدِیْلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
তারা সেই সব লোক যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। তাদের জন্যে দুনিয়ার জীবনেও রয়েছে সুসংবাদ এবং আখেরাতেও। আল্লাহর কথায় কোনো পরিবর্তন হয় না। এটাই মহাসাফল্য। [সূরা ইউনুস, আয়াত : ৬৩, ৬৪]
লক্ষণীয় যে, উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা শুধুমাত্র সুসংবাদ দিয়েই শেষ করেননি। বরং সেই সুসংবাদের ওপর জোর তাগিদ দিয়েছেন এই বলে- ‘আল্লাহর কথায় কোনো পরিবর্তন হয় না।’ যদিও তাঁর সকল বক্তব্যই অকাট্য সত্য ও অপরিবর্তনীয়।
অপর আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
لٰكِنِ الرَّسُوْلُ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ ؕ وَ اُولٰٓىِٕكَ لَهُمُ الْخَیْرٰتُ ؗ وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
কিন্তু রাসূল এবং যে সকল লোক তার সঙ্গে ঈমান এনেছে, তারা নিজেদের জান-মাল দ্বারা জিহাদ করেছে। তাদেরই জন্যই রয়েছে সর্বপ্রকার কল্যাণ এবং তারাই সফল। [সূরা তাওবা, আয়াত : ৮৮]
‘তাদের জন্যই রয়েছে সর্বপ্রকার কল্যাণ’- আল্লাহ তাআলার এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন- এখানে উদ্দেশ্য হলো, দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণ প্রকৃত পক্ষে তাদেরই জন্য।
দুনিয়ার জীবনে সুসংবাদের স্বরূপ
সফল মুমিনের জন্য দুনিয়ার জীবনে যে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তার বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে কুরআনের নানা আয়াতে এবং অনেক হাদীসে।
উপরে সূরা ইউনুসের যে আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে তার আগের আয়াতেই আল্লাহ তায়ালা বলেন:
اَلَاۤ اِنَّ اَوْلِیَآءَ اللّٰهِ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
স্মরণ রেখো, যারা আল্লাহর বন্ধু তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিত হবে না। [সূরা ইউনুস, আয়াত : ৬২]
বিখ্যাত মুফাসসির ইবনে কাছীর রহ. বিভিন্ন হাদীসের আলোকে আয়াতের এ ব্যাখ্যা করেছেন যে, ‘পরকালে হাশরের ময়দানে বিভিষীকাময় অবস্থার সম্মুখীন হওয়ার কোনো ভয় আল্লাহর ওলীদের থাকবে না এবং দুনিয়া হাতছাড়া হওয়াতে তারা দুঃখিত হবেন না।’ এ মর্ম পরের আয়াত থেকেও প্রতীয়মান হয়, যেখানে বলা হয়েছে- দুনিয়া-আখেরাত উভয় জীবনেই তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
পরের আয়াতের আল্লাহর ওলীদের পরিচয় দেয়া হয়েছে। তাদের পরিচয়ে সফল মুমিনের অন্যতম গুণ- তাকওয়ার উল্লেখ এসেছে। নিঃসন্দেহে এটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য সবচেয়ে বড় সুসংবাদ, যা দুনিয়াতেই তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপরে উল্লেখিত সূরা ইউনুসের ৬৪ নম্বর আয়াতের ব্যাখায় তাফসীরে উসমানীতে বলা হয়েছে-
‘আল্লাহর ওলীদের জন্য দুনিয়াতে কয়েক ধরনের সুসংবাদ রয়েছে। যেমন, আল্লাহ তাআলা নবীদের মুখে لا خوف عليهم ইত্যাদি ইরশাদ করে তাদের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। ফেরেশতাগণ মৃত্যুর সময় তাঁদের বলে থাকেন- أبشروا بالجنة التي كنتم توعدون (তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো সেই বেহেশতের, যার ওয়াদা তোমাদের সঙ্গে করা হয়েছিল।) এছাড়া তাঁরা নিজেরা অনেক সত্য ও বরকতময় স্বপ্ন দেখে থাকেন বা তাঁদের সম্বন্ধে অন্য বান্দাদের দেখানো হয়ে থাকে। আর এরূপ শুভ স্বপ্ন সহীহ হাদীস (বুখারী, ২২৬৩) অনুযায়ী নবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। এটাও بشری তথা সুসংবাদের অন্তর্ভুক্ত যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা বিশেষ রকমের সাহায্য-সহযোগিতা লাভ করে থাকেন, এবং বিশেষ লোকদের মাঝে এবং কখনো সর্বসাধারণের মধ্যেও তাঁরা সমাদৃত হয়ে থাকেন। আর লোকেরা তাঁদের প্রশংসা ও গুণকীর্তন করে থাকে। এ সবকিছুই পর্যায়ক্রমে পার্থিব সুসংবাদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে; কিন্তু অধিকাংশ রেওয়ায়েতে لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَيَوةِ الدُّنْيَا এর তাফসীর করা হয়েছে শুভ স্বপ্নের দ্বারা (মুসনাদে আহমদ, বর্ণনা ২৭৫১০)। আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।’
আখেরাতের জীবনে সুসংবাদের স্বরূপ
সফল মুমিনের জন্য আখেরাতের জীবনে যে সুসংবাদের ঘোষণা এসেছে তাও কুরআনের আলোকে কয়েকটি শিরোনামে বিন্যস্ত করা যায়-
ক্ষমার ঘোষণা
কেয়ামতের দিন যখন সবাই থাকবে আতঙ্কিত সে সময়ে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমার ঘোষণা। তাদের সকল গুনাহ আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেবেন। আল্লাহ বলেন :
وَ مَنْ یُّؤْمِنْۢ بِاللّٰهِ وَ یَعْمَلْ صَالِحًا یُّكَفِّرْ عَنْهُ سَیِّاٰتِهٖ وَ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا ؕ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
আর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার নিচে নহর প্রবাহিত হতে থাকবে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহাসাফল্য। [সূরা তাগাবুন, আয়াত : ৯]।
আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি লাভ
কেয়ামতের দিনের সেই বিভিষীকাময় পরিস্থিতিতে তারা আল্লাহ তাআলার রহমত লাভে ধন্য হবেন। মহান আল্লাহ তাদেরকে নিজ রহমের চাদরে আবৃত করে নেবেন। আল্লাহ বলেন :
فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فَیُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِیْ رَحْمَتِهٖ ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْمُبِیْنُ
সুতরাং যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তো তাদের প্রতিপালক নিজ রহমতে প্রবেশ করাবেন। এটাই সুস্পষ্ট সফলতা। [সূরা জাছিয়াহ, আয়াত : ৩০]
তারা লাভ করবে মুমিনের পরম আরাধ্য- আল্লাহর সন্তুষ্টি। ফলস্বরুপ আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্ত করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাতে তারা চিরকাল থাকবে।
সবগুলো বিষয়ের ঘোষণা এসেছে সূরা তাওবার কয়েকটি আয়াতে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ هَاجَرُوْا وَ جٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ ۙ اَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللّٰهِ ؕ وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ یُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِّنْهُ وَ رِضْوَانٍ وَّ جَنّٰتٍ لَّهُمْ فِیْهَا نَعِیْمٌ مُّقِیْمٌ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا
যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি মর্যাদাবান এবং তারাই সফল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে রহমত, সন্তুষ্টি ও এমন উদ্যানসমূহের সুসংবাদ দিচ্ছেন, যার ভেতর তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী নেয়ামত। তারা তাতে সর্বদা থাকবে। [সূরা তাওবা, আয়াত : ২০- ২২]
লক্ষণীয় যে, এখানে এও বিবৃত হয়েছে- ‘তারা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি মর্যাদাবান।’ যার মর্যাবান হওয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন দুনিয়া-আখেরাতে তার আর চিন্তার কী আছে!
আল্লাহ কেয়ামতর দিন ঘোষণা দেবেন:
قَالَ اللّٰهُ هٰذَا یَوْمُ یَنْفَعُ الصّٰدِقِیْنَ صِدْقُهُمْ ؕ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا ؕ رَضِیَ اللّٰهُ عَنْهُمْ وَ رَضُوْا عَنْهُ ؕ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
আল্লাহ বলবেন, এটা সেই দিন যেদিন সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতা উপকৃত করবে। তাদের জন্য রয়েছে এমন সব উদ্যান, যার তলদেশে নহর প্রবহমান। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটাই মহাসাফল্য। [সূরা মায়িদা, আয়াত : ১১৯]
সে দিন যে ব্যক্তি থেকেই সে শাস্তি দূরীভূত করা হবে, তার প্রতি আল্লাহ বড়ই দয়া করলেন। আর এটাই স্পষ্ট সফলতা। [সূরা আনআম, আয়াত :১৬]
সফল মুমিনের এমন পুরস্কারের ঘোষণা আরও এসেছে সূরা তাওবার ৮৯ ও ১১১ নং আয়াতে, সূরা সফ্ এর ১২ নং আয়াতে, সূরা হাদীদ এর ১২ নং আয়াতে এবং সূরা বুরুজ এর ১১ নং আয়াতে।
সফল মুমিন যে জান্নাত লাভ করবেন
সফল মুমিনগণ যে জান্নাত লাভ করবেন তা হচ্ছে, জান্নাতুল ফিরদাউস- সর্বোচ্চ জান্নাত। কারণ তারা দুনিয়াতে সর্বোচ্চ গুণাবলির অধিকারী হতে পেরেছেন। সূরা মুমিনূনে আল্লাহ তাআলার ঘোষণা-
اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْوٰرِثُوْنَ () الَّذِیْنَ یَرِثُوْنَ الْفِرْدَوْسَ ؕ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
এরাই হলো উত্তরাধিকারী। যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তরাধিকার লাভ করবে, তারা তাতে অনন্তকাল থাকবে।’ [সূরা মুমিনূন, আয়াত : ১০, ১১]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেন : ‘যখন তোমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইবে তখন তোমরা জান্নাতুল ফিরদাউস চাও। কেননা তা হচ্ছে সর্বোচ্চ জান্নাত। সেখান থেকেই জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। আর তার উপরে রয়েছে রহমানের আরশ।’ [তিরমিযী, হাদীস: ২৫৩০]
সফল মুমিন জান্নাতে যা লাভ করবেন
সফল মুমিন জান্নাতে কেমন নেয়ামত লাভ করবে তার একটু বিশদ বিবরণ এসেছে সূরা যুখরুফে। আল্লাহ বলেন:
মুত্তাকীগণ অবশ্যই নিরাপদ স্থানে থাকবে। উদ্যানরাজি ও ঝরণামালার মাঝে। তারা মিহি ও পুরু রেশমী পোশাক পরে একে অন্যের মুখোমুখি হয়ে বসে থাকবে। তাদের সাথে এ রকমই ব্যবহার করা হবে। আমি ডাগর চোখবিশিষ্ট হুরদের সাথে তাদের বিয়ে দেব। সেখানে তারা অত্যন্ত নিশ্চিন্তে সব রকম ফলের ফরমায়েশ করবে। (দুনিয়ায়) তাদের যে মৃত্যু প্রথমে এসেছিল, তা ছাড়া সেখানে (জান্নাতে) তাদেরকে মৃত্যুর কোনো স্বাদ গ্রহণ করতে হবে না। এবং আল্লাহ তাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন, তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে অনুগ্রহস্বরুপ। (মানুষের জন্য) এটাই মহা সাফল্য। [সূরা দুখান, আয়াত : ৫১-৫৭]
মুমিনগণ জান্নাতে যে সমস্ত নেয়ামত লাভ করবেন তার মধ্য সর্বোচ্চ নেয়ামত হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার দীদার বা দর্শন লাভ। তারা সেদিন সরাসরি পরম করুণময় আল্লাহ তাআলার সাক্ষাত লাভে ধন্য হবেন। কুরআনের বর্ণনা :
وُجُوْهٌ یَّوْمَىِٕذٍ نَّاضِرَةٌ اِلٰى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ
সেদিন অনেক চেহারা উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। [সূরা কিয়ামাহ, আয়াত : ২২, ২৩]
হাদীসে শরীফে এর বিশদ বিবরণ রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমরা কি কেয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাবে? তিনি বললেন: মেঘমুক্ত পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দিহান? তারা বলল: না, হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন: মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে তোমাদের কি সন্দেহ আছে? সবাই বললেন: না। তখন তিনি বললেন: নিঃসন্দেহে তোমরা আল্লাহকেও তেমনিভাবে দেখতে পাবে। [বুখারী, হাদীস: ৮০৬]
দুনিয়াতে মুমিন বান্দা না দেখে যে রবের প্রতি অগাধ বিশ্বাস স্থাপন করেছে, যে রবের সন্তুষ্টি তালাশে জীবনের প্রতি পদে তার হুকুম মান্য করে চলেছে, যে রবকে পাওয়ার তাড়নায় দুনিয়ার সকল মোহ ত্যাগ করেছে কেয়ামতের দিন যখন সেই রবের দর্শন লাভ করবে আহা তখন কেমন হবে তার অনুভূতি! এর চেয়ে মহাসৌভাগ্য কি আর হতে পারে!
***
আল্লাহ তাআলার দরবারে বিনীত আরজি- আমরা সকলেই যেন তাঁর বাতলে দেওয়া পথ অনুসরণ করতে পারি। শামিল হতে পারি সফল মুমিনের মোবারক কাফেলায়। স্নাত হতে পারি তাঁর রহমতের বারিধারায়। ধন্য হতে পারি তাঁর সন্তুষ্টি লাভে। দাখেল হতে পারি তার প্রস্তুতকৃত জান্নাতে। শরীক হতে পারি সেই মজলিসে যাতে তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদের নিজ দর্শন লাভে ধন্য করবেন। ওগো মাবুদ! আমাদের সকলকেই সে তাওফীক দান করুন।
Leave a Reply