Post Updated at 21 Sep, 2023 – 7:28 AM
রামাদানের রোজা ছাড়াও সারা বছর অনেকগুলো নফল রোজা রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম ফজিলতপূর্ণ নফল রোজা হচ্ছে আইয়ামে বীযের রোজা। প্রতি মাসে ৩ দিন আইয়ামে বিযের রোজা রাখলে তাতে পুরো মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। নবীজি (সা) সারা বছর এই রোজা রাখতেন। এর থেকে আইয়ামে বীজের ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আজকের এই পোস্টে আইয়ামে বীজের রোজা কবে, এর ফজিলত, বিধান ও মাসআলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব ইনশাআল্লাহ!
এ মাসের আইয়ামে বীজের রোজার তারিখ
বাংলাদেশে ২০২৩ সালের তথা হিজরি ১৪৪৫ এর রবিউল আউয়াল মাস শুরু হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রবিবার থেকে। এ মাসের আইয়ামে বীজের ৩টি রোজা রাখতে হবে যথাক্রমে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ রোজ শুক্র, শনি ও রবিবার। অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সাহরি খেয়ে শুক্রবার রোজা শুরু করতে হবে। এরপর শনি-রবি সহ মোট ৩ দিন আইয়ামে বীজের রোজা রাখতে হবে।
রবিউল আউয়াল মাসকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে অনেক আয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে ১২ রবিউল আউয়ালকে নবীজি সা. এর জন্মদিন হিসাবে অনেকে পালন করেন। কোনো কোনো গোষ্ঠী এই দিনকে সকল ঈদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ঈদ বলে আখ্যা দেয়। কোনো বিদআতের অনুসারীরা এই দিনে ঈদ পালন করাকে ফরজ মনে করে। কেউ বা মনে করে এই দিনে ঈদ পালন করলে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়া যাবে। এসকল কথাই ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও দ্বীনের মাঝে আবিষ্কৃত বিদআত। নবীজি সা. এর জন্মদিনে ঈদ উদযাপন সাহাবীগণ করেন নি, তাবেয়ীগণ করেন নি, হাদীস বা ফিকহের কোনো ইমামগণ করেন নি। তাই এই দিনকে ঈদ হিসাবে উল্লেখ করা, এই দিনকে বিশেষ আমলের দিন হিসাবে পালন করা, এই দিনকে পালন করা ফরজ মনে করা, এই দিনকে উদযাপন করলে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়া যাবে এমনটি মনে করা নিঃসন্দেহে বিদআত ও গোমরাহী। আল্লাহ আমাদেরকে রাসূলের সা. ভালবাসা প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে তাঁর সুন্নাতের অনুসরণের তাওফিক দান করুন। সমাজে প্রচলিত নব আবিষ্কৃত এই বিদআত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেন।
আইয়ামে বীজের রোজা কাকে বলে? আইয়ামে বীজের রোজা কবে?
আইয়ামে বীজ আরবি দু’টি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। আইয়ামে অর্থঃ দিবসসমূহ। আর বীজ অর্থঃ শুভ্র, সাদা, শ্বেত, খাঁটি, নির্ভেজাল।
প্রতি হিজরি মাস বা চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীজ বলা হয়। কেননা এই তিনদিনের রাতের চাঁদ সবচেয়ে বেশি আলোকজ্জল বা শ্বেত-শুভ্র থাকে। আইয়ামে বীজ বলতে বুঝানো হয় চান্দ্র মাসের সবচেয়ে শুভ্র বা আলোকজ্জল তিনটি রাতের সাথে সংশ্লিষ্ট দিনকে।
আমরা জানি হিজরি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তাই প্রতি মাসের আইয়ামে বীজের রোজার তারিখ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়ে থাকে। আমাদের দেশের অনেকে না জানা বা না বুঝার কারণে আইয়ামে বীজের রোজা রাখেন কাগজে ছাপানো ক্যালেন্ডারে থাকা আনুমানিক হিজরি তারিখ হিসাবে। যা সঠিক বা ভুল উভয়টিই হতে পারে। অর্থাৎ ইংরেজি বছরের শুরুতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে ক্যালেন্ডার প্রকাশিত হয় সেখানে হিজরি তারিখ থাকে অনুমান নির্ভর। প্রতিটি ক্যালেন্ডারেই উল্লেখ থাকে যে, হিজরি তারিখগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তাই আমরা কাগজে ছাপানো ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভর করে আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে তা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আমাদের উচিত হিজরি মাসের চাঁদ ওঠার খবরের সাথে নিয়মিত আপডেট থাকা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতি মাসে চাঁদ দেখা যাওয়ার ঘোষণা তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে থাকে। আর আপনার জীবনকে আরেকটু সহজ করতে ব্যবহার করতে পারেন আমাদের ডেভেলপ করা Muslims Day Android App. এই অ্যাপে আমরা প্রতি মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর নোটিফিকেশন আকারে পাঠিয়ে থাকি। পাশাপাশি অ্যাপে নিয়মিত হিজরি তারিখ আপডেট করা হয়। আমাদের অ্যাপ থেকে নিয়মিত ভাবে সারা বছর আইয়ামে বীজের রোজার রিমাইন্ডার পাঠানো হয় নোটিফিকেশন আকারে। তাই আপনি যদি আইয়ামে বীদ এর রোজা রাখতে চান তাহলে মুসলিমস ডে অ্যাপটি আপনাকে সারা বছর ইনশাআল্লাহ রোজা রাখতে সহযোগিতা করবে। আর আইয়ামে বীজের রোজার সাহরি ও ইফতারের সময়ও আমাদের অ্যাপ থেকেই জানা যাবে।
আইয়ামে বীজের রোজার বিধান
আইয়্যামে বীজের রোজা আমাদের উপর ফরজ নয়। এটি নফল রোজা। অর্থাৎ আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে সওয়াব আছে, কিন্তু না রাখলে গুনাহ নাই। ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি আমাদের উচিত নফল ইবাদতেও মনযোগ দেয়া। কারণ ফরজ পালন করতে গিয়ে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি হলে বা কোনো ফরজ অনিচ্ছাকৃত ভাবে ছুটে গেলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের নফল আমলগুলোর মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করে দিতে পারেন। তাই বছরের বিভিন্ন সময়ে যে সকল নফল রোজা রয়েছে সেগুলো আদায়ে যত্নবান হওয়া উচিত।
আইয়ামে বীজের রোজার ফজিলত
প্রতি মাসে ৩ দিন বা আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে তাতে সারা মাস রোজা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। নিয়মিত ভাবে আইয়ামে বীজের ৩ দিন রোজা রাখা হচ্ছে সারা জীবন রোজা রাখার সমতূল্য। কেননা যে কোনো নেক আমল আল্লাহ তায়ালা ১০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকেন। আমরা যদি প্রতি মাসে নিয়মিত ভাবে ৩ দিন রোজা রাখি তাহলে ৩x১০=৩০ দিন রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। অর্থাৎ আমরা যদি প্রতি মাসেই ৩ দিন করে রোজা রাখি পুরো মাসটাই রোজা রাখার সওয়াব পাব। আর যত দিন বেঁচে আছি এভাবে রোজা রাখতে থাকলে আমরা ইনশাআল্লাহ সারা জীবন রোজা রাখার সওয়াব পাব। সুবহানাল্লাহ!
অনেক আলেম বলে থাকেন, কোনো একটা আমল কবুল হওয়ার আলামত হচ্ছে সে আমলটির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। আমরা যদি রমজানের রোজার পাশাপাশি অন্যান্য মাসেও কিছু নফল রোজা রাখতে পারি তাহলে সেটি হতে পারে আমাদের রমজানের রোজা কবুল হওয়ার আলামত। আর রমজানের সবচেয়ে বড় প্রশিক্ষণ হচ্ছে রোজা। রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি তাক্বওয়া, ভয় ও আনুগত্য করা। রোজা এমন একটা ইবাদত যা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই রাখা হয়। আর আল্লাহ নিজে এর প্রতিদান দিবেন। তাই রমজানের রোজার যে প্রশিক্ষণ আমরা নিয়েছি, সেটা সারা বছর কিছু কিছু করে প্র্যাক্টিস চলমান রাখা উচিত। রমজানে যেভাবে আমরা রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহমুখী হই। একই ভাবে আইয়ামে বীজের রোজার মাধ্যমেও প্রতি মাসে ৩টা দিন আমরা একান্তই আল্লাহর জন্য ৩টা রোজা রাখতে পারি।
পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবারও নবীজি (সা) গুরুত্ব সহকারে নিয়মিত রোজা রাখতেন। এখানে ক্লিক করে জেনে নিন নবীজি (সা) কেন প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন?
এত অল্প পরিশ্রমে আল্লাহ আমাদেরকে এত দিবেন! আমাদের মধ্যে কে এমন আছেন যিনি এই সুবর্ণ সুযোগকে হেলায় নষ্ট করবেন? আমার ধারণা এই লেখাটি পড়ার পর ইনশাআল্লাহ আপনি বাকি জীবন যতদিন সুস্থ্য আছেন নিয়মিত এই পুণ্যময় আমলটি করেই যাবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাসে ৩ দিন রোজা রাখার মাধ্যমে সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ হাদীস ১
ইবনু মিলহান আল-ক্বায়সী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আইয়ামে বীয অর্থৎ চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সওম পালনে আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এগুলো সারা বছর সওম রাখার সমতুল্য।– আবু দাউদ ২৪৪৯, হাদীসের মানঃ সহীহ
আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ হাদীস ২
জারীর ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃপ্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত।– নাসায়ী ২৪২০, হাদীসের মানঃ হাসান
আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ফজিলতঃ হাদীস ৩
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন,প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দুই রাকাত সালাতুদ দুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা।– বুখারী ১৯৮১, হাদীসের মানঃ সহীহ
প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৪
‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি মাসের প্রথম দিকে তিনদিন সওম পালন করতেন।
– আবু দাউদ ২৪৫০, হাদীসের মানঃ হাসান
প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৫
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আমর ইব্নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ
হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সালাত আদায় করে থাকো। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন করো আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আরো বেশী শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহ্র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম পালন করো, এর হতে বেশী করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্র নবী দাউদ (আঃ)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম !– বুখারী ১৯৭৫, হাদীসের মানঃ সহীহ
প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৬
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন একজন স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে,রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্জ মাসের নয় দিন, আশুরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম পালন করতেন-মাসের প্রথম সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার।– সুনানে নাসায়ী ২৪১৯, হাদীসের মানঃ সহীহ
আইয়ামে বীজ বা নফল রোজা সম্পর্কে কয়েকটি মাসআলা
- রমজানের রোজার মত আইয়ামে বীজের রোজার ক্ষেত্রেও সাহরি খাওয়া সুন্নাহ। কিন্তু সাহরি খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেকে ধারণা করে থাকেন সাহরি খাওয়া ছাড়া রোজা হয় না। সে ধারণাটি ভুল। সাহরির জন্য পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়। এক ঢোক পানি পান করলেও তাতে সাহরির সুন্নাহ আদায় হয়ে যাবে।
- আইয়ামে বীজ সহ যে কোনো নফল রোজার নিয়ত বা সংকল্প করা যাবে সর্বোচ্চ দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত। মধ্যভাগ হিসাব করতে হবে সাহরির শেষ সময় থেকে ইফতারের সময় পর্যন্ত যে সময় হয় তার অর্ধেক পর্যন্ত। সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত যদি ১৪ ঘন্টা সময় হয়ে থাকে তাহলে সাহরির শেষ সময়ের পর থেকে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত নিয়ত করলে রোজা শুদ্ধ হবে। এর পরে নিয়ত করলে রোজা হবে না। সাহরির পরে এই ৭ ঘন্টার মধ্যে নিয়ত করলেও শর্ত হচ্ছে সাহরি থেকে এই নিয়ত করার সময়ের মধ্যে রোজা ভঙ্গ হওয়ার মত কোনো কাজ করা যাবে না। অনেকের ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে সাহরির সময় উঠতে পারে নি পরে ফজরের সময় উঠেছে বা আরো পরে উঠেছে। এরপর চিন্তা করল আজকের দিনটি রোজা রেখে ফেলব। এরকম পরিস্থিতিতে কখন রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম সেটা হিসাব করে বের করা জরুরি। সহজ কথায় রোজাটি অর্ধেক পূর্ণ হওয়ার আগেই নিয়ত করতে হবে।
- আইয়ামে বীজের তারিখগুলোতে নারীদের পিরিয়ড চললে তখন ঐ দিনগুলোতে রোজা রাখা যাবে না। নারী-পুরুষ যে কারোরই যে কোনো সমস্যার জন্য আইয়ামে বীজের ৩ দিন রোজা না রাখতে পারলে মাসের অন্য যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলেও সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। কেননা মাসের যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলে সারা মাসের সওয়াব পাওয়া যাবে এটাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
- আইয়ামে বীজ বা কোনো নফল রোজা রাখা অবস্থায় যদি নারীদের পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে ঐ রোজাটি ছেড়ে দিবে। দিনের বাকি অংশ স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার কারণে নফল রোজা ভেঙে ফেললে দিনের বাকি অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি নয়। শুধুমাত্র রমজান মাসের ক্ষেত্রে রোজা অবস্থায় পিরিয়ড শুরু হলে ঐদিনটি ইফতার পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এটা রমজান মাসের সম্মানে। এরপর রমজানের বাকি দিনগুলোতে পিরিয়ড চলা অবস্থায় স্বাভাবিক পানাহার করতে পারবে। কিন্তু নফল রোজা রাখা অবস্থায় পিরিয়ড শুরু হলে তখন থেকেই পানাহার করা যাবে।
- আইয়ামে বীজের কোনো একটি রোজা শুরু করার পর যদি কোনো কারণে ভেঙে ফেলা হয় তাহলে পরবর্তীতে ঐ রোজাটির কাজা আদায় করতে হবে। রোজা শুরু করার পর ভেঙে ফেললে ঐ রোজার কাজা আদায় করা ওয়াজিব হয়।
- জিলহজ্জ মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত (ঈদ উল আযহা ও তার পর ৩ দিন) রোজা রাখা হারাম। তাই জিলহজ্জ মাসের ১৩ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা রাখা যাবে না। জিলহজ্জের ১০ থেকে ১৩ তারিখ ব্যতীত অন্য যে কোনো ৩ দিন রোজা রাখলেও সারা মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে।
- আইয়ামে বীজের ৩ দিনের মধ্যে শুক্রবার পড়লে অনেকে দ্বিধান্বিত থাকেন যে শুক্রবার রোজা রাখা যাবে কিনা। হাদীস শরীফে শুধুমাত্র শুক্রবারকে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে (হারাম করা হয় নি, এটা মাকরুহে তানযিহী)। আর যদি শুক্রবারের সাথে আগে-পরে একদিন রোজা রাখা হয় তাহলে শুক্রবার রোজা রাখাতে কোনো অসুবিধা নাই। এক্ষেত্রে আগের নিরুৎসাহ দেয়ার হুকুম আরোপিত হবে না। একই ভাবে শুক্রবার যদি অন্য কোনো বিশেষ নফল রোজার দিন হয়, যেমনঃ আরাফার দিন বা আশুরার দিন। সেক্ষেত্রেও শুক্রবার রোজা রাখাতে কোনো অসুবিধা নাই।
Saidul
April 27, 2023 at 8:14 pmGood advice
মো:আসিক
April 29, 2023 at 4:37 amধন্যবাদ জানান, আল্লাহ্ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুক।
Sanowar Hossain
April 29, 2023 at 4:32 pmAllahu Akbar
আলমগীর
April 30, 2023 at 8:21 amআলহামদুলিল্লাহ
আশরাফুর রহমান
May 2, 2023 at 11:29 amআলহামদুলিল্লাহ। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ইনশাআল্লাহ এই হাদিস মতো আমল করার এবং আইয়াম বীজের সিয়াম পালন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।আমাদের মুসলিম ভাই বোনদের সবাই কে এই সিয়াম পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
Md Latiful Islam
May 2, 2023 at 9:51 pmMasaallah onk sundor post
Md Minhaz
May 3, 2023 at 5:25 amআসসালামুয়ালাইকুম ভাই । নফল রোজা ভঙ্গ করলে কি কাযা করতে হয়?
Muslims Day Admin
May 3, 2023 at 11:09 amজ্বি, রোজা শুরু করার পর কোনো কারণে ভঙ্গ করলে কাজা করতে হবে
Md. Mostafa Kamal
May 4, 2023 at 6:40 amAlhamdulillah..
Jannatu Ferdous
May 5, 2023 at 4:11 amজাযাকাল্লাহ খয়রান
Lucky
May 5, 2023 at 12:01 pmShawaler roja rakhar sathe Aiyame Bijer tarikh mile gace….ekhetre ki aiyame bijer roja gulo ki alada kore abar rakhte hobe?
Muslims Day Admin
May 5, 2023 at 12:21 pmআইয়ামে বীজ ও শাওয়ালের রোজা একই দিনে রাখা হলে ইনশাআল্লাহ উভয়টির সওয়াব আমরা পেয়ে যাব। তবে আপনি আলাদা আলাদা রাখতে চাইলেও রাখতে পারেন। এতে বেশি রোজা রাখা হবে, অবশ্যই এর জন্য বেশি প্রতিদান পাওয়া যাবে।
Monowar Hussain
May 11, 2023 at 9:53 amAlhamdulillah
মুহাররম মাস : ফজিলত ও আমল - Muslims Day
July 13, 2023 at 10:41 pm[…] এবং হিজরি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের আইয়ামে বীজের সুন্নত রোজাগুলো রাখি। কারণ মুহাররম আল্লাহর মাস। আর রোজাও […]
Asif
August 29, 2023 at 9:38 pmjajakallaho Khairan
অলিউল্লাহ
August 29, 2023 at 10:05 pmআমি ও প্রতি সোম ও বৃহঃবার রোজা রাখি,গত ৩ বছর যাবত,আর আইয়্যামের রোজা রাখার নিয়ত করছি,আজ থেকে,ইনশাল্লাহ
মোজাহারুল হক
August 30, 2023 at 9:02 pmচান্দ্র মাসের দিন গননা শুরু হবে সূর্য অস্তের পর থেকে কিন্তু app এ তা দেখতে পাই না।
দুই আগে জানিয়ে দিলে খুব ভাল হয় ।
Muslims Day Desk
August 30, 2023 at 10:05 pmঅ্যাপের সেটিংস থেকে সূর্যাস্তের সাথে সাথে হিজরি তারিখ পরিবর্তনের ব্যবস্থা রয়েছে। কাইন্ডলি অ্যাপের সেটিংসটি চেক করুন।
মোঃ আব্দুল্লাহ শফিক
September 20, 2023 at 10:00 pmখুবই উপকারী ও অনুসরণীয় আলোচনা। জাজাকাল্লাহ খাইরান।