Press ESC to close

আখেরী চাহার সোম্বা ও সফর মাসের অন্যান্য বিদআত

Post Updated at 25 Aug, 2023 – 6:26 PM

হিজরি ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস সফর। আমাদের সমাজে সফর মাসকে কেন্দ্র করে অনেক কুসংস্কার, কুপ্রথা ও বিদআত প্রচলিত রয়েছে। যার মধ্যে আখেরি চাহার সোম্বা নামক ভিত্তিহীন একটি বিদআত অন্যতম। উক্ত দিবসকে কেন্দ্র করে যে গল্পটি প্রচলিত তা মুহাদ্দিসীনে কেরামের মতে ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যাচার বৈ কিছু নয়। আজকের এই লেখায় কথিত আখেরি চাহার সোম্বা ও সফর মাসের অন্যান্য কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা সম্পর্কে জানব ইনশাআল্লাহ।

আখেরি চাহার সোম্বা – ভিত্তিহীন ও বানোয়াট একটি গল্প

আমাদের দেশের মুসলিম সমাজে মকসুদুল মুমিনীন, বারো চান্দের ফজিলত ইত্যাদি অনির্ভরযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য কিছু বই প্রচলিত রয়েছে। এ ধরনের বইপুস্তকে ইসলামের নামে বিভিন্ন রেওয়াজ-রসম বর্ণনা করা হয়েছে, যার কোনো ভিত্তি নাই। আখেরি চাহার সোম্বা বিষয়ে মকসুদুল মুমিনীন টাইপের কিছু বইতে যে বানোয়াট গল্পটি লিখা হয় তা অনেকটা নিম্নরূপ:

নবীজি  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যুর পূর্বে সফর মাসের শেষে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সফর মাসের শেষ বুধবারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানিকটা সুস্থতা বোধ করেন এবং এই দিনে ৭ মশক পানি দ্বারা গোসল করেন। উক্ত রোগমুক্তির ঘটনায় সাহাবীগণ যারপরনাই আনন্দিত হন এবং বিশেষ  দোয়া, মুনাজাত, ইবাদত করেন। সকল সাহাবী প্রচুর দান সাদাকাহ করেন।

হযরত উসমান রা. তাঁর খামারের ৭০ টি উট জবাই করে গরীবদের মাঝে বিলি করেন। হযরত আবু বকর রা. ৭ হাজার  দিনার, হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা. ৫ হাজার  দিনার, হযরত ওসমান রা. ১০ হাজার দিনার, হযরত আলী রা. ৩ হাজার দিনার এবং হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা. ১০০ উট ও ১০০ ঘোড়া আল্লাহর ওয়াস্তে দান করেন। এরপর থেকে মুসলিমগণ সাহাবীগণের নীতি অনুকরণ ও অনুসরণ করে উক্ত দিনে দান-সাদাকাহ করে আসছেন।

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের  এই দিনের গোসলই জীবনের শেষ গোসল ছিল। এরপর আর তিনি জীবিতকালে গোসল করতে পারেন নি। তাই সকল মুসলিমের জন্য এই দিনে ওজু-গোসল করে ইবাদত বন্দেগি করা উচিৎ এবং হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করে সওয়াব রেছানী করা উচিত।

উক্ত গল্পটির কোনো গ্রহণযোগ্য ভিত্তি বা প্রমাণ হাদীস শরীফের বিশাল ভাণ্ডারে পাওয়া যায় না। কতিপয়  অসতর্ক বক্তা বানোয়াট এ গল্পটি বিভিন্ন ওয়াজে-বক্তব্যে প্রচার করেছেন। এর কোনো ভিত্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো হাদীস অথবা সাহাবীগণের কোনো হাদীস অথবা তাবেয়ী-তাবে তাবেয়ীগণের কোনো বক্তব্যে বিশুদ্ধ সূত্রে পাওয়া যায় না।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে অনেকবার রোগমুক্তি ও বিপদমুক্তির ঘটনা ঘটেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ইহুদির জাদু থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। হিজরতের মতো একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহর রহমতে নিরাপদে মদীনায় পৌঁছেছেন। বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেছেন। এরকম অসংখ্য বিপদমুক্তির ঘটনা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে রয়েছে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় বা তাঁর ইন্তিকালের পরে কোনো সাহাবী বা তাবেয়ী-তাবে তাবেয়ী উক্ত বিপদমুক্তির দিবসগুলো বছর বছর পালন করেছেন? হাদীসের বিশাল ভাণ্ডারে এমন নজির পাওয়া যায় না।

কথিত আখেরি চাহার  সোম্বা নিয়ে কত গল্প ও কত আমল আমাদের সমাজে প্রচলিত। সরকারিভাবে এই দিন উদযাপন করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই দিন উপলক্ষে বিশেষ ছুটি দেয়া হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত মনগড়া ও বানোয়াট দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে বিশেষ “মিলাদ মাহফিল” এর আয়োজন করা হয়। প্রতিটি পত্র-পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে এই দিবসকে কেন্দ্র করে বিশেষ অনুষ্ঠান ও ফিচার প্রকাশ করা হয়। কেউ কেউ উক্ত দিনের ঘটনা বর্ণনা করে লম্বা ওয়াজ-নসিহত করেন। ইউটিউবে শত শত ভিডিও রয়েছে এই দিবস কেন্দ্রিক।  অনেকগুলো  ভিডিও এমন ব্যক্তিদের, যাদের নামের সঙ্গে শোভা পায় “মাওলানা”, “ডক্টর”, “মাদরাসার অধ্যক্ষ” ইত্যাদি শব্দ। দুঃখজনক হলেও সত্য, উক্ত বক্তাগণ আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করেন। কিন্তু আখেরি চাহার সোম্বা বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য হাদীসও তারা উল্লেখ করতে পারেন না

আল্লাহ তাআলা এরকম অজ্ঞতা ও ভ্রান্তি থেকে আমাদের  হেফাজত করুন। আমীন।

আখেরি চাহার সোম্বার নামাজ ও অন্যান্য বিদআত আমল

সফর মাসের শেষ বুধবারের কোনো প্রকার বিশেষত্ব হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। এ দিনে কোনোরূপ ইবাদত, নামাজ, রোজা, যিকির, দোয়া, দান, সাদাকা ইত্যাদি পালন করলে অন্য কোনো দিনের চেয়ে বেশি বা বিশেষ কোনো সাওয়াব বা বরকত লাভ করা যাবে বলে ধারণা করা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা।

তাযকিরাতুল আখেরাত, মকছুদুল মুমিনীন, বারো চান্দের আমল এজাতীয় কিছু বইয়ে আখেরি চাহার সোম্বার বিশেষ নামাজ ও কিছু বিশেষ আমলের উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আখেরী চাহার সোম্বার নামাজের নিয়ম হিসাবে বলা হয়ে থাকে- সফর মাসের শেষ বুধবার সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। সে নামাজের উভয় রাকাতে সূরা ইখলাস ১১ বার করে পড়তে হবে এবং নামাজ শেষে ৭০ বার বিশেষ দরূদ ও দোয়া পড়তে হবে।

উক্ত নামাজ সম্পর্কে আল্লামা আব্দুল হাই লখনভী রহ. লিখেছেন, সফর মাসের শেষ বুধবারে যে বিশেষ নফল নামাজ বিশেষ কিছু সুরা, আয়াত ও দোয়া পাঠের মাধ্যমে আদায় করা হয়, তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এছাড়াও আখেরি চাহার সোম্বার দিন বিশেষ দোয়া পড়ে পানিতে ভিজিয়ে পান করা ও সেই পানি দিয়ে গোসল করার একটি রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে। এটিও মনগড়া, বানোয়াট একটি রেওয়াজ।

সফর মাসকে অশুভ ও বালা মুসিবতের মাস মনে করা একটি জাহেলি কুসংস্কার

কোনো স্থান, সময়, বস্তু বা কর্মকে অশুভ বা অমঙ্গলময় বলে মনে করা ইসলামি বিশ্বাসের পরিপন্থি একটি কুসংস্কার। আরবের মানুষরা জাহেলি যুগ থেকে ‘সফর’ মাসকে অশুভ ও বিপদাপদের মাস বলে বিশ্বাস করত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এই ভুল ধারণা খণ্ডন করেছেন। হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

لاَ عَدْوَى وَلاَ صَفَرَ وَلاَ هَامَةَ

অর্থ : রোগের কোনো সংক্রমন নেই, সফরের কোনো কুলক্ষণ নেই, পেঁচার মধ্যেও কোনো কুলক্ষণ নেই। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৭১৭]

আরেক হাদীসে আছে, জাহিলী যুগে লোকেরা সফর মাসকে অমঙ্গলের মাস হিসাবে বিবেচনা করত, এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : না, সফর মাস এরূপ নয়। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৯১৫]

অথচ এরপরও মুসলিম সমাজে অনেকের মধ্যে পূর্ববর্তী যুগের এ সকল কুসংস্কার থেকে যায়। শুধু তাই নয়, এ সকল কুসংস্কারকে উস্কে দেওয়ার জন্য অনেক বানোয়াট কথা বানিয়ে হাদীসের নামে  সমাজে প্রচার করছেন অসতর্ক কতিপয় বক্তা।

তারা জালিয়াতি করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামে বলছেন, এই মাস বালা মুসিবতের মাস। এই মাসে এত লক্ষ এত হাজার বালা নাযিল হয়। এই মাসেই আদম আলাইহিস সালাম ফল খেয়েছিলেন। এ মাসেই হাবীল নিহত হন। এ মাসেই নূহ আলাইহিস সালামের কওম ধ্বংস হয়। এ মাসেই ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে আগুনে ফেলা হয়। এ মাসের আগমনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যথিত হতেন। এই মাস চলে গেলে খুশি হতেন। তিনি বলতেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে সফর মাস অতিক্রান্ত হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করবে, আমি তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করার সুসংবাদ প্রদান করব।’ এরকম অনেক কথা তারা বানিয়েছে।

আর অনেক সরলপ্রাণ মুসলমান তাদের এ সকল জালিয়াতি বিশ্বাস করেছেন। মুহাদ্দিসগণ একমত যে, সফর মাসের অশুভত্ব ও বালা মুসিবত বিষয়ক সকল কথাই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

সফর মাসের ১ম রাতের নামাজ – ভিত্তিহীন ও বানোয়াট আমল

উপরোক্ত মিথ্যা কথাগুলোর ভিত্তিতেই একটি ভিত্তিহীন ‘নামাজের’ উদ্ভাবন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ যদি সফর মাসের ১ম রাতে মাগরিবের পরে বা ইশার পর চার রাকাত নামাজ আদায় করে, অমুক অমুক সূরা বা আয়াত এতবার পাঠ করে, তবে সে বিপদ থেকে রক্ষা পাবে, এত এত পুরস্কার পাবে ইত্যাদি। এগুলো সবই ভিত্তিহীন বানোয়াট কথা, যদিও অনেক সরলপ্রাণ মানুষ এগুলি বিশ্বাস করেছেন এবং কেউ কেউ নিজেদের বইয়ে ও ওয়াজে উল্লেখ করেছেন।

সফর মাসের শেষ বুধবার

বিভিন্ন জাল হাদীসে বলা হয়েছে, বুধবার অশুভ এবং যেকোনো মাসের শেষ বুধবার সবচেয়ে অশুভ দিন। আর সফর মাস যেহেতু অশুভ, সেহেতু সফর মাসের শেষ বুধবার বছরের সবচেয়ে অশুভ দিন এবং এই দিনে সবচেয়ে বেশি বালা মুসিবত নাযিল হয়। এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা অনেক সরলপ্রাণ মুসলমান বিশ্বাস করেছেন।

একজন লিখেছেন, “সফর মাসে এক লাখ বিশ হাজার ‘বালা’ নাজিল হয় এবং সবদিনের চেয়ে বেশি আখেরি চাহার সোম্বা (সফর মাসের শেষ বুধবার) তে নাযিল হয়। সুতরাং ঐ দিনে যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত নিয়মে চার রাকআত নামাজ পড়বে আল্লাহ তাআলা তাঁকে ঐ বালা হতে রক্ষা করবেন এবং পরবর্তী বছর পর্যন্ত তাঁকে হেফাজত রাখবেন…। [রাহাতুল কুলুব- পৃষ্ঠা ১৩৯] এগুলি সবই ভিত্তিহীন কথা।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, সফর মাসের শেষ বুধবারের কোনো প্রকার বিশেষত্ব হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। এই দিনে ইবাদত, বন্দেগি, নামাজ, রোজা, জিকির, দোয়া, দান, সাদাকা ইত্যাদি পালন করলে অন্য দিনের চেয়ে বেশি বা বিশেষ কোনো সওয়াব ও বরকত লাভ করা যাবে বলে ধারণা করা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। আল্লাহ আমাদের সকলকে সর্বপ্রকার বিদআত থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।

সফর মাসের ফজিলত ও আমল

মুহাদ্দিসীনে কেরামের মতে, সফর মাস কেন্দ্রিক বিশেষ কোনো ফজিলত সম্বলিত হাদীস পাওয়া যায় না। সফর মাস উপলক্ষ্যে বিশেষ কোনো আমলের বর্ণনাও কোনো গ্রহনযোগ্য বিশুদ্ধ হাদীস থেকে পাওয়া যায় না। তাই আমরা সফর মাসের জন্য স্পেশাল কোনো আমল বা ফজিলতের ব্যাপারে বিশ্বাস রাখব না। সফর মাস অশুভ বা বালা-মুসিবতের মাস হিসাবে যে কুসংস্কার আছে সেগুলোও বিশ্বাস করব না।

অন্যান্য মাসের মত নিচের আমলগুলো আমরা সফর মাসেও আদায় করার চেষ্টা করব:

  1. আইয়ামে বীজের ৩টি নফল রোজা রাখা (বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)
  2. প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার নফল রোজা রাখা (বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)
  3. জুমআর দিনের মাসনূন আমলগুলো করা (বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)
  4. ঘুমাতে যাওয়ার আগের দুআ ও আমল করা (বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)
  5. অন্যান্য যিকির আযকার ও সুন্নাহের উপর আমল করা

তবে মনে রাখতে হবে যে, এই আমলগুলো মোটেও সফর মাসের বিশেষ আমল নয়। বরং অন্যান্য সকল মাসের জন্য এই আমলগুলোর যেই ফজিলত ও সওয়াব, সফর মাসের জন্যও সেই একই ফজিলত ও সওয়াব। কোনো আমলকেই সফর মাসের জন্য খাস বা বিশেষায়িত মনে করব না।

তথ্যসূত্র

  1. একটি ভিত্তিহীন রসম – আখেরি চাহার শোম্বা কি উদযাপনের দিবস? – মাসিক আলকাউসার
  2. হাদীসের নামে জালিয়াতি (পৃঃ ৫১২-৫১৮) – ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহিমাহুল্লাহ)
  3. একটি ভিত্তিহীন আমল – আখেরি চাহার শোম্বাহের নামাজ – মাসিক আলকাউসার
  4. ফজিলতপূর্ণ দিবস রজনী – মাওলানা মুহাম্মাদ ফজলুল বারী – মাসিক আলকাউসার

Comments (27)

  • Mustagfirsays:

    August 25, 2023 at 2:57 PM

    মাশাআল্লাহ
    এ বিষয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা ছিল যা মূলত সমাজের প্রচলনের কারণে আমরা মনে করেছিলাম আসলে এই দিবসটি সত্য। তবে মুসলিম ডে এর এই আর্টিকেলটি পরে আমার ধারণা ক্লিয়ার হল।জাঝাকুমুল্লাহু খাইরান ফিদদারইনি 🌸

  • Roksanasays:

    September 12, 2023 at 8:02 AM

    আসসালামু আলাইকুম।
    সত্যটা সবার সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ মুসলিম ডে ফাউন্ডেশনকে।

  • Md Ahsansays:

    September 12, 2023 at 9:21 AM

    সত্যটা তুলে ধরার জন্য মুসলিম ডে ফাউন্ডেশন কে ধন্যবাদ।

  • মোঃ শামছুল ইসলামsays:

    September 12, 2023 at 4:33 PM

    ইমামের পেছনে নামাজ পড়ার সময় ইমাম সাহেবদের মধ্যে অনেক মতোভদ দেখা যায়, যেমন –

    ১) ইমাম সাহেব প্রত্যেক রা-আকাতে সূরা ফাতেহা পাঠ করলে আমাদেরকেউ কি পাঠ করতে হবে? তা সহি হাদীসের আলোকে বিস্তারীত ভাবে আলোকপাত করুন। আমরা আপনার তথ্যের উপর আমল করবো ইনশাআল্লাহ, তবে ভুল তথ্য দিয়ে থাকলে আল্লাহর নিকট আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে।

    ২) ফরজ নামাজ শেষে একত্রে বা সমেবেত মুনাজাত।

    ৩) বুকে হাত বাঁধা এবং প্রত্যেক রা- আকাতে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে সেজদায় যাওয়া।

    ৪) বিবিধ :

    ৫) মতামত :
    আল্লাহর রহমতে স্ব-স্ত্রীক এবার ২০২৩ ইং সালে আমরা হজ্ব পালন করতে যাই। পবিত্র কাবাঘর অথবা মদিনায় ইমামের পেছনে নামাজ আদায়ের শেষে অনেক আকঙ্খা থাকা শর্তেও একটি বারও তাঁরা সমেবেত মুনাজাত দেন নাই যা থেকে আমরা বন্ছিত হয়েছি বলে নিজেকে মনে করি।

    ওখানে নিজের মুনাজাত নিজেকেই দিতে হয় যার যার ব্যাক্তি গত ব্যাপার।

    • মাওলানা শিব্বীর আহমদsays:

      September 16, 2023 at 8:24 AM

      বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

      আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর :

      ১. ইমামের পেছনে মুক্তাদি সূরা ফাতেহা পাঠ করবে না। এ মাসআলায় সবযুগেই গবেষক আলেমদের মধ্যে একাধিক মত ছিল। মতের ভিন্নতা ছিল সাহাবায়ে কেরামের মাঝেও। তবে দলিলপ্রমাণের আলোকে আমাদের হানাফী মাযহাবে গ্রহণযোগ্য ও অনুসৃত মত হলো- জামাতের নামাজে সূরা ফাতেহা ইমাম সাহেব একাই পাঠ করবেন। তার কেরাতই মুকতাদির কেরাত। ইমাম সাহেব যখন কেরাত পড়বেন, তখন মুকতাদিগণ মনোযোগ দিয়ে তা শুনবেন। আর যদি শোনা না যায় তবে চুপ করে থাকবেন। এটা কুরআনে কারীম থেকেও প্রমাণিত। আপনি নির্দ্বিধায় এ মতের ওপর আমল করতে পারেন।

      ২. ফরজ নামাজের শেষে দোয়া কবুল হওয়ার কথা হাদীসে আছে। তাই যদি বাধ্যতামূলক মনে না করে ইমাম সাহেব দোয়া করেন এবং মুক্তাদিগণও তার সঙ্গে শরিক হয়, তবে এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এতে মাসবুক নামাজিদের নামাজে যেন সমস্যা না হয়। আবার কেউ যদি এ দোয়াতে শরিক না হয়, তবে তাকে সমালোচনা করারও সুযোগ নেই।

      ৩. বুকে হাত বাঁধা সুন্নত নয়। সিজদায় যাওয়ার সময় কান পর্যন্ত হাত ওঠানোও সুন্নত নয়।

      বি.দ্র. সংক্ষেপে উত্তরগুলো দেয়া হলো। বিস্তারিত উত্তর দেয়ার সুযোগ এখানে নেই। সুযোগমতো ইনশাআল্লাহ ব্লগে এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা হবে।

  • সুমাইয়াsays:

    September 13, 2023 at 4:50 AM

    আপনাদের আল্লাহ জান্নাতবাসী করুক। জেনে অনেক উপকার হলো। এরকম ভালো কাজ আপনারা চালিয়ে যেতে থাকেন।

  • MD ARIFUR REZAsays:

    September 13, 2023 at 7:30 AM

    বর্তমানে মানুষ তো এবাদত ই করতে চায় না, এতে যদি নিদৃষ্ট দিন মনে করে এবাদত করে তাহলে অসুবিধের তো কিছু দেখতেছি না। এত বেদাত না খুজে মানুষ কে বিভিন্ন ছোট ছোট আমল, প্রতিদিনের আমল এগুলো সম্পর্কে ধারণা দিন এবং উৎসাহিত করুন।

    • Muslims Day Desksays:

      September 13, 2023 at 9:38 AM

      আপনার নিয়তটি সুন্দর। মানুষকে ভালো কাজের জন্য উৎসাহিত করা উচিত। তবে কোন কাজটি ভালো আর কোন কাজটি মন্দ এট মানদন্ড হচ্ছে ইসলাম। ভালো-মন্দের মানদন্ড কুরআন-হাদীস। আমার কাছে কোনো একটা বিষয়কে ভালো মনে হলেই সেটি ভালো হয়ে যাবে – বিষয়টি এমন নয়। আমার চোখে একটি কাজকে সওয়াবের মনে হলে বা বিশেষ ফজিলতের মনে হলেই সেটি সওয়াব বা ফজিলতের হয়ে যাবে না। তখনই হবে যখন সেই কাজের পিছনে রাসূলের সা. সুন্নাহ থাকবে। সাহাবীগণের আমল থাকবে।

      আপনি জেনে থাকবেন আমরা প্রতি মাসে ৩ দিন রোজা রাখার জন্য প্রায়ই নোটিফিকেশন বা পোস্ট দিয়ে থাকি। প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার জন্য রিমাইন্ডার দিয়ে থাকি। হালাল-হারাম মেনে চলা, গাছ লাগানো, অপচয় রোধ করা বিভিন্ন ছোট বড় আমলের জন্য উৎসাহ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি বিদআতের বিরুদ্ধে বলে থাকি। যে কাজ রাসূল সা. করে যান নি, সাহাবীগণ করেন নি। সেই কাজকে আমি-আপনি কিভাবে “বিশেঅ ফজিলত” বলে আখ্যা দেই? আখেরি চাহার সোম্বা সংশ্লিষ্ট যেই কাহিনীটি বলা হয়, তার আবিষ্কার হয়েছে রাসূলের সা. ইন্তেকালের প্রায় ১ হাজার বছর পরে। এ সম্পর্কিত বিভিন্ন আমলের আবিষ্কার হয়েছে রাসূলের সা. ইন্তেকালের প্রায় ১ হাজার বছর পরে। আমাদের কি উচিত এই ভিত্তিহীন বানোয়াট একটা দিবসকে উদযাপন করতে উৎসাহিত করা? ছোট ছোট ভিত্তিহীন আপাতদৃষ্টিতে ভালো কাজের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বড় বড় খারাপ কাজের সৃষ্টি হয়।

      শয়তান মানুষকে ১ দিনে শিরক করতে বা মূর্তি পূজা করতে বলে না। আরবের মুশরিকরা ১ দিনে মূর্তি পূজা শুরু করে নি। কাবা ঘরের প্রতি তাদের ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা থেকে তারা কাবা ঘরের পাথরের টুকরা সাথে করে সফরে নিয়ে যেত। এরপর এক পর্যায়ে তারা সেই পাথরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করত। দেখেন, আস্তে আস্তে শয়তান কিভাবে গোমরাহ করে। আরবের এক ব্যক্তি অন্য এক দেশ থেকে (সম্ভবত কোন একজন বুজুর্গ ব্যক্তির) একটি মূর্তি নিয়ে আসে। প্রথমে সেটিকে ভালো মানুষের মূর্তি হিসাবে এমনিই দেখা হত। পর্যায়ক্রমে মূর্তির প্রতি শ্রদ্ধা বাড়তে থাকে। মূর্তির স্থান হয় কাবা ঘরে। এক পর্যায়ে সেই মূর্তি হয়ে যায় ইবাদতের বস্তু! এই ঘটনাগুলো বছরের পর বছর ধরে ঘটেছে। শয়তান একটু একটু করে মানুষকে গোমরাহীর দিকে নিয়ে যায়। তাই সুন্নাহের বিকল্প নাই।

      মানুষ বর্তমানে ইবাদত করতে চায় না। কিন্তু এমন ইবাদত করলে কী লাভ যে ইবাদতের পিছনে নবীজির সা. রিকমেন্ডেশন নাই? আমাদের এক জীবনে সহীহ হাদীসের উপর আমল করে শেষ করতে পারব না। সেখানে আমাদের কী প্রয়োজন নতুন আবিষ্কৃত ভিত্তিহীন বিষয় উদযাপন করা? বিদআতের আমলে বারাকাহ থাকে না। ইবাদত সেটিই যেটি আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশনা অনুযায়ী করা হয়। তাই আমরা নব আবিষ্কৃত দিবস ও রেওয়াজ রসমের পিছনে মূল্যবান সময় নষ্ট না করে সুন্নাহর অনুসরণ করব। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্নাহ মোতাবেক জীবন চালানোর তাওফিক দান করুন। আমীন।

  • Md.Alif Islam Emonsays:

    September 18, 2023 at 6:26 AM

    আল্লাহ আমাদের সকলকে এসকল ফিতনা থেকে হেফাজত করুন আমিন,,

  • Kaniz Fatemasays:

    September 19, 2023 at 2:22 PM

    মাশাআল্লাহ আর্টিকেলটি অনেক উপকারী ছিলো। জাযাকুমুল্লাহু খায়ের।

  • আইয়ামে বীজ এর রোজা - ফজিলত, বিধান ও মাসআলা - Muslims Daysays:

    August 22, 2024 at 9:18 AM

    […] সফর মাসের বহুল প্রচলিত একটি বিদআত হচ্ছে আখেরি চাহার সোম্বা। দেশব্যাপী এই বিদআতটি প্রায় জাতীয় ভাবে পালিত হয়। যদিও এই রেওয়াজটি সম্পর্কে বিশুদ্ধ সূত্রে কোনো হাদীস পাওয়া যায় না। এই বানোয়াট রেওয়াজ ও সফর মাসের অন্যান্য বিদআত ও কুধারণা সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন। […]

  • umme faiyazsays:

    September 5, 2024 at 5:01 PM

    আসসালামু আলাইকুম।
    আত্মীয় স্বজনের শরিয়ত সম্মত হক কি কি?
    এই বিষয়ে তথ্যবহুল কোনো আর্টিকেল কি আপনাদের ওয়েবসাইট এ আছে?
    আর যদি না থাকে তবে এই বিষয়ে একটা আর্টিকেল তৈরী করার অনুরোধ করছি।
    এতে আমরা আরও সচেতন হতে পারবো আর আপনারা ও আল্লাহর দরবারে দামী হবেন
    ইংশা-আল্লাহ।
    খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা আমল হওয়া সত্ত্বেও আমরা সাধারন মুসলমান রা এই বিষয়ে খুবই অজ্ঞ।

    [জনাব মাওলানা শিব্বির আহমদ সাহেব এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি]

    • মাওলানা শিব্বীর আহমদsays:

      September 9, 2024 at 11:13 AM

      ওয়াআলাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
      আমাদের ওয়েবসাইটে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ক কোনো লেখা পাবলিশড হয়নি। ইনশাআল্লাহ, শীঘ্রই আমরা এ বিষয়ের ওপর লেখা প্রকাশ করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ১,৯৬৭,০৬৪

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন