Press ESC to close

সূরা কাহফ তিলাওয়াত ও মুখস্থের ফজিলত

Post Updated at 8 Aug, 2025 – 8:54 PM

জুমআর দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের অনেক ফজিলত রয়েছে। এছাড়াও সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত ও শেষ দশ আয়াত মুখস্থ করলে দাজ্জালের ফিতনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে বলে হাদীসে উল্লেখ আছে। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত সূরা কাহাফ পড়া ও মুখস্থ করা। বিশুদ্ধ তেলাওয়াতের পাশাপাশি এর অনুবাদ ও তাফসীরও পড়া উচিত। তাহলে আমাদের বোধগম্য হবে, ঠিক কী কারণে এর এত ফজিলত। এর অর্থ ও ব্যাখ্যা জানলেই বুঝা যাবে কী কারণে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য এই সূরা কার্যকরী। তাই চলুন, প্রতি জুমআর দিন (বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে) সূরা কাহাফ পড়ি।

যারা নিজেরা তেলাওয়াত করতে পারেন না, তারা অন্য কারও তেলাওয়াত শুনতে পারেন। সরাসরি কারও তেলাওয়াত শোনা সম্ভব না হলে ইউটিউব বা কোনো অ্যাপের মাধ্যমে সূরাটির তিলাওয়াত শুনুন। আমাদের অ্যাপের অডিও কুরআন অপশন থেকে আপনার পছন্দের ক্বারীর কন্ঠে সূরা কাহাফ শুনতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, শোনা কখনোই নিজে তেলাওয়াত করার বিকল্প নয়, রেকর্ডেড তেলাওয়াত তো নয়ই। আমরা আশা করতে পারি, যারা নিজেরা তেলাওয়াত করতে পারে না, তারা এভাবে তেলাওয়াত শুনলেও আল্লাহ তায়ালা এর জন্যে পুরস্কৃত করবেন। তবে আমাদের অবশ্যই উচিত, এর ওপর ক্ষ্যান্ত না থেকে নিজেরা তেলাওয়াত শেখার চেষ্টা করা।

আল্লাহ আমাদেরকে সূরা কাহাফের সকল ফজিলত হাসিল করার তাওফিক দান করুন।

নিচে সূরা কাহাফের ফজিলত বর্ণনা করে এমন কিছু হাদীস তুলে ধরা হলো।

এক.

ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর (আলো) হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।

(আত তারগীব ওয়া তারহীব: ১/২৯৮)

দুই.

আবু সাঈদ খুদরী রাযি. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পড়বে তার এবং বায়তুল আতীক তথা ক্বাবা পর্যন্ত আলোকোজ্জ্বল হবে।

(দারেমী, ৩৪০৭)

তিন.

আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়বে তার জন্য এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত আলোকোজ্জ্বল হবে।

(মুসতাদারেক হাকিম: ২/৩৯৯, বায়হাকী: ৩/২৪৯, ফয়জুল ক্বাদীর: ৬/১৯৮)

চার.

আবু দারদা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দজ্জালের (ফিতনা) থেকে পরিত্রাণ পাবে।

(সহীহ মুসলিম)

পাঁচ.

হজরত নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করলেন। তিনি আওয়াজকে উঁচু-নিচু করছিলেন, ফলে আমরা মনে করলাম দাজ্জাল খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে। অতঃপর যখন আমরা উনার কাছে গেলাম তখন তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে ফেললেন।

 

তিনি বললেন, তোমাদের কী হলো। আমরা বললাম, আল্লাহর রাসূল! আপনি সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করেছিলেন, আওয়াজকে উঁচু-নিচু করেছিলেন- তাই আমরা মনে করলাম দাজ্জাল হয়তো খেজুর বাগানেই আছে।

 

তিনি বললেন, তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়া অন্য কিছুতে এত বেশি ভয় আমাকে দেখানো হয়নি। যদি আমি তোমাদের মাঝে থাকা অবস্থায় সে বের হয়, তাহলে তোমাদের পরিবর্তে আমিই সর্বপ্রথম তার প্রতিরোধ করব। আর যদি তোমাদের মাঝে না থাকা অবস্থায় সে বের হয়, তাহলে প্রত্যেকে নিজেই তার প্রতিরোধ করবে।

 

আল্লাহর শপথ! প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আমার খলিফা রয়েছে। নিশ্চয় দাজ্জাল কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট যুবক হবে এবং তার চোখ কানা হবে। যেন আমি আবদুল ওযযা ইবনে কাতালের মতো তাকে দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে যে তাকে পাবে সে যেন সূরা কাহাফের শুরু অংশ পড়ে।

 

(সহিহ মুসলিম: ২৯৩৭, সুনানে আবু দাউদ: ৪৩২১, তিরমিজি: ২২৪১)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ৩,৮২১,৭৬৩

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন