Press ESC to close

বর্ষবরণ ও অন্যদের অনুসরণ : ইসলাম কী বলে?

Post Updated at 20 Dec, 2024 – 11:05 AM

ডিসেম্বর মাসটি শুরু হয়ে খুব দ্রুতই যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিদায় নিচ্ছে আরেকটি বছর। এগিয়ে আসছে নতুন আরেকটি বছর। এর সঙ্গে সঙ্গে আসছে ৩১শে ডিসেম্বর এবং থার্টি ফার্স্ট নাইট। ৩১শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে, বিশেষত যখন ঠিক বারোটা বাজে এবং নতুন বছরের প্রথম দিনটি শুরু হয়, তখন আতশবাজি-ফানুস জাতীয় নানা আয়োজন চলতে থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। কিন্তু ভাববার বিষয় হলো—একজন মুসলিম হিসেবে আমি বা আমরা বর্ষবরণের এ জাতীয় আয়োজনে শরিক হতে পারি কিনা। আরেকটি বিষয় হলো, বর্ষবরণের এ আয়োজন যৌক্তিকভাবেও কতটা গ্রহণযোগ্য?

সংস্কৃতিটা আমাদের নয়

বর্ষবরণের এ সংস্কৃতি মুসলমানদের সংস্কৃতি নয়—এটা বলাবাহুল্য। একে তো খ্রিষ্টিয় এ ক্যালেন্ডারের নানা ক্ষেত্রে জড়িয়ে আছে খ্রিষ্ট ধর্ম। সে হিসেবে এ ক্যালেন্ডার তো প্রকৃত বিবেচনায় মুসলমানদের ক্যালেন্ডারই নয়। সময়ের প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে হচ্ছে, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। তাই এ ক্যালেন্ডার কেন্দ্রিক নববর্ষ উৎসব— সেও খ্রিষ্টানদেরই উৎসব, আমাদের নয়। দ্বিতীয় কথা হলো, আতশবাজি-ফানুস ইত্যাদির মাধ্যমে আনন্দ উদযাপন—তাও আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ সংস্কৃতি আমাদের নয়।

 

আমাদের উৎসবের স্বরূপ

মুসলিম হিসেবে আমাদের জাতীয় উৎসব দুটি—ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আযহা। একটি টানা এক মাস কঠোর সিয়াম সাধনার পর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নগদ পুরস্কার, আরেকটি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের একটি সুন্নাহর অনুসরণ। আল্লাহ তাআলার হুকুমের সামনে তিনি নিজের ছেলেকে কুরবানি করার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। জাতি হিসেবে আমাদের উৎসব এ দুটিই, অন্য কোনো উৎসব নেই।

আবার এ দুটি উৎসবেও রয়েছে আল্লাহ তাআলার প্রতি বিনীত প্রার্থনা, তাঁর নেয়ামতের জন্যে কৃতজ্ঞতা, তাঁর বিধানের সামনে নিজেকে সঁপে দেয়া, সমাজের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সহমর্মিতার বাঁধন ইত্যাদির পাঠ। জাতি হিসেবে আমাদের যেমন অন্য কোনো উৎসব নেই, তেমনি অন্যদের কোনো উৎসব পালন করার সুযোগও আমাদের নেই। ভিন্ন ধর্মীয় লোকদের উৎসবে নিজেদের বিলীন করে দেয়া, তাদের উৎসবে শরিক হওয়া কিংবা তাদের মতো করে নিজেরা সে উৎসবের আয়োজন করা—এতটা উদারতা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। হাদীসের ভাষ্য এখানে সুস্পষ্ট। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

من تشبه بقوم فهو منهم

যে ব্যক্তি কোনো জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪০৩১]

অন্যদের উৎসব পালনে ইসলামের নির্দেশনা

অন্যদের উৎসব, তা যত সুন্দর ও চিত্তাকর্ষকই হোক, এমনকি সবধরনের শরিয়তবিরোধী ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত হোক, সে উৎসব পালন করার সুযোগ আমাদের নেই। হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত হাদীস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় আগমন করলেন, তিনি দেখলেন, মদীনাবাসীরা দুটি বিশেষ দিনে খেলাধুলা করে। তিনি জানতে চাইলেন : এ দুটি দিনের কী রহস্য? তারা বলল : জাহেলি যুগে আমরা এ দুটি দিনে খেলাধুলা করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন :

إنَّ الله قَدْ أبدَلَكُم بهما خَيرًا مِنهما: يَوم الأضحى، ويَوم الفِطرِ

সন্দেহ নেই, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটির পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন—ঈদুল আযহার দিন এবং ঈদুল ফিতরের দিন। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১১৩৪]

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, জাহেলি যুগ থেকে দুটি বিশেষ দিনে খেলাধুলার যে ধারা চলে আসছিল, তাতে তো আপত্তিকর বা শরিয়তের দৃষ্টিতে বর্জনীয় তেমন কিছু ছিল না। তা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়োজন থেকে বারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ঐ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। আর স্বাভাবিক কথা, যা পরিবর্তন করা হয় এবং পরিবর্তন করে যা কিছু দেয়া হয়, এ দুটি একত্রিত হতে পারে না। জাহেলি যুগের পুরোনো প্রথা ও উৎসবকে পরিবর্তন করে যখন শরিয়ত আমাদেরকে নতুন দুটি উৎসবের দিন ধার্য করে দিয়েছে, এখন আমরা আর সে জাহেলি উৎসব পালন করতে পারি না। পালন করার সুযোগ নেই জাহেলি যুগের সেসব উৎসবের মতো করে আয়োজিত পরবর্তী কালের কোনো উৎসবও।

এ হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনেক ব্যাখ্যাকারই বলেছেন : যে দুটি দিনে মদীনার লোকেরা জাহেলি যুগে খেলাধুলা বা আনন্দ করত, সে দুটি ছিল ‘নায়রুয’ ও ‘মেহেরজান’এর দিন। এর মধ্যে নায়রুয হচ্ছে তৎকালে প্রচলিত একটি সৌরবর্ষের প্রথম দিন। এ দিনে তারা উৎসব করত। হযরত আলী রা.কে একবার এ নববর্ষের দিন কিছু মিষ্টিদ্রব্য হাদিয়া দেয়া হয়েছিল। তিনি এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাকে বলা হলো : এটা নায়রুয অর্থাৎ নববর্ষ উপলক্ষে। তিনি উত্তরে বললেন : আমাদের নববর্ষ তো প্রতিদিনই। [মোল্লা আলী কারী রহ. কৃত ‘মিরকাতুল মাফাতীহ’ দ্রষ্টব্য, হাদীস : ১৪৩৯]

অমুসলিমদের বিরুদ্ধাচরণে সাধারণ নির্দেশনা

শুধু উৎসব নয়, স্বাভাবিক জীবনাচারের নানা ক্ষেত্রেও অমুসলিমদের, বিশেষত ইহুদি-খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধাচরণের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। এমনকি তাদের কাজটি ইসলামি শরিয়তে বৈধ হলেও তাদের বিপরীত কর্মপন্থা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। কয়েকটি উদাহরণ দিই—রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

إِنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى لَا يَصْبُغُونَ فَخَالِفُوهُمْ

ইহুদি-খ্রিষ্টানরা তো খেযাব ব্যবহার করে না। তাই তোমরা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করো। (অর্থাৎ তোমরা খেযাব ব্যবহার করো।) [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৪৬২, ৫৮৯৯]

আরেক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

خالِفُوا اليهودَ فإنَّهم لا يُصَلُّون في نِعالِهم ولا خِفافِهم

তোমরা ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করো। তারা তো তাদের জুতা ও মোজা পরে নামাজ আদায় করে না। ( তোমরা এ দুটি পায়ে দিয়েই নামাজ পড়ো।) [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৬৫২]

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহ. লিখেছেন : স্বাভাবিকভাবে জুতা-মোজা যখন পবিত্র থাকবে, তখন এ দুটি পায়ে নিয়ে নামাজ পড়াই উত্তম। তবে যদি এ কারণে মসজিদ নোংরা হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে তা না করা উচিত। আর মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রহ. লিখেছেন : বর্তমান সময়ে যেহেতু ইহুদি-খ্রিষ্টানরা তাদের জুতা খোলে না, তাই তাদের বিরুদ্ধাচরণ করে আমাদের খালি পায়েই নামাজ আদায় করা উচিত। [দ্র. শায়খ শুআইব আরনাউতের টীকা]

হাদীসের ব্যাখ্যা নিয়ে বাহ্যত বিরোধ দেখা গেলেও ইহুদি-খ্রিষ্টানদের বিরোধিতার বিষয়টি সকলের কথাতেই ফুটে উঠেছে। আরেক হাদীসের বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এক জানাযা ও দাফনে উপস্থিত ছিলেন। দাফনের জন্যে কবরে লাশ রাখা হলো। তখন সেখান দিয়ে এক ইহুদি আলেম যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন : আমরাও এভাবেই দাফন করি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : থামো, ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করো। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩১৭৬] [সূত্র বিবেচনায় এ হাদীসটি যঈফ। কিন্তু আমাদের আলোচ্য বিষয়টি প্রমাণে এতে কোনো অসুবিধা নেই।]

আরেকবারের ঘটনা। হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত হাদীস—ইহুদিদের রীতি ছিল, তারা তাদের নারীদেরকে ঋতুস্রাবের সময় ঘর থেকে বাইরে বের করে দিত। এক ঘরে তারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে এ অবস্থায় থাকত না, এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করত না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে এ মর্মে পবিত্র কুরআনের আয়াত নাযিল হলো—ঋতুস্রাবের সময় নারীদের থেকে দূরে থাকতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন এভাবে— তোমরা একসঙ্গে থাকবে, সবকিছুই করতে পারবে, তবে শারীরিক সম্পর্ক করবে না। ইহুদিরা তখন বলেই ফেলল :

ما يريدُ هذا الرجلُ أن يدع شيئًا مِن أمرِنا إلا خالَفَنا فيه

কী আশ্চর্য! এ লোকটি প্রতিটি বিষয়েই আমাদের বিরোধিতা করে!

দুজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল—ইয়া রাসূলুল্লাহ! ইহুদিরা তো এমন কথা বলেছে! আমরা কি তাহলে আমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ঋতুস্রাবের সময় মেলামেশাও শুরু করব? এ প্রশ্ন শুনে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৫৮]

এ বর্ণনাটি থেকে যদিও প্রতিভাত হয়—ওদের বিরুদ্ধাচরণ করতে গিয়ে আমাদের শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করা যাবে না, তবে এ কথাও স্পষ্ট—রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক বৈধ বিষয়েও ওদের বিরুদ্ধাচরণ করতে বলেছেন। ওদের বিরুদ্ধাচরণ করাই আমাদের জন্যে সাধারণ নির্দেশনা। এটাই যখন শরিয়তের বিধান, সেখানে ওদের অনুসরণের সুযোগ কোথায়! স্পষ্ট কথা, খ্রিষ্টানদের দেখাদেখি নববর্ষ উদযাপনের অবকাশ ইসলামি শরিয়তে অন্তত নেই।

বিজাতীয়দের অনুসরণ এবং দুটি হুশিয়ারি বার্তা

ইহুদি-খ্রিষ্টান কিংবা অন্য ধর্মীয় লোকদের আমরা অনুসরণ করি কেন? একটু ‘জাতে’ ওঠার জন্যে? না আভিজাত্য প্রমাণের জন্যে? না তাদের প্রতি ভালোবাসায়? অথবা তাদের সন্তুষ্টি কামনায়? যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, এর জন্যে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে উচ্চারিত হয়েছে কঠোর হুশিয়ারি বার্তা। এর পাশাপাশি জানিয়ে দেয়া হয়েছে এ কথাও—বিশ্বাস বিসর্জন দিতে না পারলে, দীন-ধর্ম ও আদর্শের ক্ষেত্রে তাদের দলে ভিড়তে না পারলে এ অনুসরণ নিষ্ফল। পবিত্র কুরআনের আয়াতটি লক্ষ করুন—

وَ لَنْ تَرْضٰی عَنْكَ الْیَهُوْدُ وَ لَا النَّصٰرٰی حَتّٰی تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ

ইহুদি-খ্রিষ্টানরা কখনোই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। [সূরা বাকারা, আয়াত : ১১৯]

এটাই বাস্তবতা—অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সর্বকালেই। ‘সুদৃষ্টি’ লাভের আশায় আমরা যতই ওদের অনুসরণ করি না কেন, দিন শেষে ওরা আমাদের শত্রুই, সন্দেহ নেই। আর মুসলিম হিসেবে এও তো অনস্বীকার্য—আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে, তাঁর বিধান লঙ্ঘন করে অন্য কারও সন্তুষ্টির পেছনে ছুটে কোনো মুসলিম দীন-দুনিয়ার কল্যাণ লাভের আশা করতে পারে না।

দ্বিতীয় হুশিয়ারি—রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

المرأ مع من أحب

মানুষ যাকে ভালোবাসে, (কিয়ামতের দিন) সে তার সঙ্গেই থাকবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬১৬৮]

মুমিন হিসেবে কিয়ামতের ময়দানে আমরা কার সঙ্গ চাই—এ প্রসঙ্গে ছোট একটি ঘটনা বলি। এক গ্রাম্য সাহাবী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এলো। সে জানতে চাইল—ইয়া রাসূলুল্লাহ! কিয়ামত কবে হবে? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন : কিয়ামতে জন্যে তুমি কী প্রস্তুতি নিয়েছ? লোকটি উত্তর দিল : আমি তো তেমন একটা প্রস্তুতি নিতে পারিনি, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে আমি ভালোবাসি। নবীজি তাকে বললেন :

فأنت مع من أحببت

তাহলে শোনো, তুমি যাকে ভালোবাস, (কিয়ামতের দিন) তুমি তার সঙ্গেই থাকবে।

এ হাদীসের বর্ণনাকারী সাহাবী হযরত আনাস রা. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথায় আমরা যতটা খুশি হয়েছি, ইসলাম গ্রহণ করার অন্য কোনো সময় আর এতটা খুশি হইনি! [সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৬৩৯]

এই হচ্ছে সামান্য ভালোবাসার অসামান্য পুরস্কার। কথায়-কাজে, ঘরে-বাইরে, উৎসব-আয়োজনে, গোপনে-প্রকাশ্যে এ ভালোবাসাটুকুকেই আমাদের ধারণ করতে হবে। তবেই আমরা আশা করতে পারি অসামান্য এ পুরস্কারের—কিয়ামতের কঠিন মুহূর্তে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সান্নিধ্য!

আমরা বিশ্বাস করি, ইহুদি-খ্রিষ্টান কিংবা মুশরিক নয়, প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা ও অনুসরণই আমাদের পুঁজি; পরকালের সফরে এটাই আমাদের সম্বল।

মাওলানা শিব্বীর আহমদ

উসতাযুল হাদীস, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মোহাম্মদপুর। মাসিক আলকাউসারসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর লিখিত বইও পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। তিনি মুসলিমস ডে অ্যাপের শরয়ী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

Comments (3)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ২,০৪১,১৮২

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন