Press ESC to close

কাযা নামাযের ধারাবাহিকতা রক্ষার বিধান

Post Updated at 30 Jan, 2025 – 11:14 AM

কাযা ও ওয়াক্তিয়া নামাযের ধারাবাহিকতা

কারও যদি এক, দুই, তিন, চার কিংবা পাঁচ ওয়াক্ত নামায কাযা হয় এবং এর পূর্বে তার কোনো কাযা না থাকে, তাহলে তাকে দুই ধরনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

সাহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচীর জন্য ডাউনলোড করুন মুসলিমস ডে অ্যাপ

  1. প্রথমে কাযা নামাযগুলো পড়ার পর ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করতে হবে।
  2. কাযা নামাযগুলোর ধারাবাহিকতাও রক্ষা করতে হবে। যে নামাযটি আগে কাযা হয়েছে সেটি আগে আদায় করতে হবে। এরপর পরেরটি। এভাবে সবগুলো কাযা নামায আদায় করে শেষ করতে হবে।  [ফাতাওয়া আলমগীরী, ১/১২১]

সর্বোচ্চ পাঁচ ওয়াক্ত পর্যন্ত যদি কারও কাযা নামায থাকে আর সে উপরোক্ত ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে প্রথমে ওয়াক্তিয়া নামায পড়ে, এরপর কাযা আদায় করে, তাহলে তার ওয়াক্তিয়া নামায আদায় হবে না। কাযা আদায়ের পর পুনরায় ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করতে হবে।

একাধিক কাযা নামাযের ক্ষেত্রে যদি ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে, যেমন, কারও ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত চার ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে গেল, আর সে প্রথমে জোহর পড়ে, এরপর আসর পড়ে, এরপর ফজর এবং সবশেষে মাগরিব পড়ে, তাহলে ধারাবাহিকতা ভঙ্গের কারণে তার জোহর ও আসরের নামায আদায় হবে না, শুধু ফজর আদায় হবে, এরপর আবার ধারাবাহিকতা ভঙ্গের কারণে মাগরিব আদায় হবে না, জোহর ও আসর আবার আদায় করার পর মাগরিব আদায় করতে হবে। 

অবশ্য এ ধারাবাহিকতার মাসয়ালা জানার পূর্বে ধারাবাহিকতা লঙ্ঘন করে কেউ কোনো নামায আদায় করলে তা পরবর্তীতে আর আদায় করতে হবে না।  [আদদুররুল ‍মুখতার, ২/৫২৯]

 

তবে যদি কারও এক-দুই বা সর্বোচ্চ পাঁচ ওয়াক্ত পর্যন্ত কাযা হয়, আর সে এগুলো আদায় না করে ওয়াক্তিয়া নামায পড়ে নেয় এবং পরে কাযা নামাযও আদায় না করে, এভাবে যদি কাযা নামাযগুলোসহ মোট ছয় ওয়াক্ত নামাযের সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তাহলে ওয়াক্তিয়া নামাযগুলো আদায় হয়ে যাবে।  [রদ্দুল মুহতার, ২/৫৩১]

ধারাবাহিকতার এ মাসআলা ঐ ব্যক্তির জন্যে, যার কাযা নামাযের সংখ্যা ছয়ের কম। কিন্তু যদি কেউ বালেগ হওয়ার পর একনাগাড়ে ছয় ওয়াক্ত নামায কাযা করে ফেলে তাহলে তার জন্যে এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি নয়। 

ছয় বা তার অধিক ওয়াক্ত নামায কাযা করার ফলে কারও এ ধারাবাহিকতা রহিত হয়ে যাওয়ার পর সে যদি কাযা নামায আদায় করতে শুরু করে এবং কাযা নামাযের সংখ্যা ছয়ের কমে চলে আসে, তাহলে ধারাবাহিকতার মাসআলাটিও আবার ফিরে আসবে। তাই পরবর্তীতে কোনো নামায কাযা হলে তাকে নতুন করে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। [রদ্দুল মুহতার, ২/৫২৯]

ধারাবাহিকতা কখন রহিত হয় 

ধারাবাহিকতা রহিত হওয়ার একটি কারণ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলো- কাযা নামাযের সংখ্যা ছয় বা তার বেশি হওয়া। এছাড়া আরও দুটি কারণে ধারাবাহিকতা রহিত হতে পারে। ১. যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় এত কম থাকে যে, কাযা নামায পড়তে গেলে ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় থাকে না, তাহলে প্রথমে ওয়াক্তিয়া নামায পড়বে, এরপর কাযা পড়বে। এ ক্ষেত্রে ওয়াক্তিয়া ও কাযার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে না। ২. যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের পূর্বে কাযা নামায আদায়ের কথা ভুলে যায়, তাহলেও ওয়াক্তিয়া নামায আদায় হয়ে যাবে, পুনরায় পড়তে হবে না।  অবশ্য যখনই কাযা নামাযের কথা মনে পড়বে, তখন আগে কাযা নামায পড়তে হবে, এরপর পরবর্তী ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করবে। [আদ্দুররুল মুখতার ও রদ্দুল মুহতার, ২/৫২৪, ৫২৬]

মাওলানা শিব্বীর আহমদ

উসতাযুল হাদীস, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মোহাম্মদপুর। মাসিক আলকাউসারসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর লিখিত বইও পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। তিনি মুসলিমস ডে অ্যাপের শরয়ী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ২,২১২,০৪৮

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন