Post Updated at 3 May, 2024 – 10:50 AM

[আগের লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন]

আবার মিনায়

হজ ও ওমরা আদায়ের ধারাবাহিক ও বিস্তারিত বর্ণনার লেখাগুলোকে একত্রে পিডিএফ আকারে পড়তে পারেন। PDF ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।

১০ তারিখ সূর্যোদয়ের পূর্বক্ষণে মুযদালিফা থেকে মিনায় রওয়ানা হোন। এখান থেকে হেঁটেই যেতে হবে। এ দিনের আরও তিনটি আমল :

১. বড় জামারায় কংকর নিক্ষেপ করা

মুযদালিফা থেকে মিনায় গিয়ে প্রথমে পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। কেউ চাইলে মিনার তাবুতে যাওয়ার আগেও পাথর মেরে যেতে পারেন। আবার চাইলে তাবুতে গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করেও পাথর নিক্ষেপ করতে পারেন। এদিন শুধুই বড় জামারায় পাথর মারতে হয়।

পাথর মারার নিয়ম : জামারায় কংকর বা ছোট পাথর মারতে হয়। এগুলো ছোলাবুটের মতো হলে ভালো। সর্বোচ্চ খেজুরের বিচির মতো হতে পারে। বড় পাথর মারা মাকরুহ। কংকরটি ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনি দিয়ে ধরে একটি একটি করে সাতবারে সাতটি কংকর নিক্ষেপ করুন। সবগুলো কংকর একবারে মারলে সবগুলো মিলে একটি কংকর বলেই ধর্তব্য হবে। তখন আরও ছয়টি কংকর মারতে হবে। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা সুন্নত। সম্ভব হলে এ দোয়াটিও পড়ুন—

اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهٗ حَجًّا مَبْرُوْرًا وَذَنْبًا مَغْفُوْرَا

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি এ হজ কবুল করুন এবং গোনাহসমূহ মাফ করুন।

এদিন পাথর মারার সময়

১০ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর থেকে জোহরের সময়ের আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পাথর মারা উত্তম। এরপর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মারা জায়েয। অতিরিক্ত ভিড়, অসুস্থতার কারণে কিংবা দুর্বল ও মহিলাদের জন্যে সূর্যাস্তের পর থেকে পরবর্তী সুবহে সাদিক পর্যন্তও সময়েও কংকর মারা যাবে।

বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করার পর সেখানে দোয়া করতে হয় না। তাই পাথর মেরে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসুন।

অন্যকে দিয়ে কংকর নিক্ষেপ করানো : শুধু ভিড়ের অজুহাতে অন্য কাউকে দিয়ে কংকর নিক্ষেপ করানো জায়েয নয়। তবে কেউ যদি এতটাই মাজুর হন, যে কারণে বসে নামাজ আদায় করা তার জন্যে বৈধ কিংবা অসুস্থতার কারণে জামারায় পৌঁছা তার জন্যে খুবই কষ্টকর, তবে তার অনুমতিক্রমে অন্য কেউ তার পক্ষ থেকে কংকর মারতে পারবেন।

২. কুরবানি করা

বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপের পর কুরবানি করতে হবে। যারা তামাত্তু বা কিরান হজ করবেন, তাদের জন্যে এ কুরবানি ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকলে হজে একাধিক কুরবানি করা উত্তম। এ কুরবানি হারামের সীমার ভেতরে করতে হবে। তবে মিনায় করা সুন্নত।

সম্ভব হলে নিজে কুরবানি করুন। কিংবা বিশ্বস্ত কারও মাধ্যমে কুরবানি করিয়ে নিন। সেখানে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েও কুরবানি করানো যায়। এতেও অসুবিধা নেই। তবে ব্যাংকে টাকা জমা দিলে যতটা সম্ভব আগে কংকর মেরে নিন।

কুরবানির সামর্থ্য যদি কারও না থাকে, তবে তিনি ১০টি রোজা রাখবেন। হজের ইহরাম করার পর হজের আগে তিনটি রোজা রাখতে হবে। ৬, ৭, ৮ জিলহজ—এ তিনদিন রাখতে পারলে ভালো। প্রয়োজনে ৯ তারিখেও রাখা যাবে। কিন্তু ৯ তারিখের মধ্যে তিনটি রোজা রাখতে না পারলে কুরবানিই করতে হবে। অবশিষ্ট ৭টি রোজা হজের পর রাখতে হবে। হজের সফরে কিংবা বাড়িতে এসেও তা রাখা যাবে।

৩. মাথা মুণ্ডানো

কুরবানি করার পর মাথা মু-িয়ে হালাল হতে হবে। এ তিনটি কাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি। প্রথমে কংকর নিক্ষেপ, এরপর কুরবানি, সবশেষে মাথা মু-ানো। ব্যাংকে টাকা জমা দিলে মাথা মু-ানোর জন্যে সতর্কতামূলক সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

আর যারা কুরবানি করবেন না, তারা কংকর নিক্ষেপের পরই মাথা মুন্ডিয়ে হালাল হয়ে যাবেন।

মিনায় মাথা মু-ানো সুন্নত। তবে হেরেমের সীমার ভেতরে অন্য কোথাও করলেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু হেরেমের সীমার বাইরে করলে দম ওয়াজিব হবে।

মাথা মু-ানোর পর থেকে আপনি ইহরাম-মুক্ত। তাই তখন স্বাভাবিক কাপড় পরুন। ইহরামের কারণে আরও যা কিছু আপনার জন্যে নিষিদ্ধ ছিল, তন্মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা ছাড়া অন্য সবই এখন থেকে বৈধ। আর তাওয়াফে যিয়ারতের পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা বৈধ হবে।

[পরের লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন]

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ