Post Updated at 20 Mar, 2023 – 10:14 AM

মানব-ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মানুষের নিকট শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থটি অবতীর্ণ হওয়ার বরকতময় ধারা যে সময় শুরু হয়েছে, সে সময়টি অন্যান্য সময়ের তুলনায় মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ হবে—এটাই তো স্বাভাবিক। হ্যাঁ, কুরআনে কারীমের কথাই বলছি। পৃথিবীর ইতিহাসে এ এক অদ্বিতীয় গ্রন্থ, যা সম্পূর্ণ নির্ভুল এবং হাজার বছরের পরিক্রমায়ও তা সম্পূর্ণ অবিকৃত। যখন এ গ্রন্থের অবতারণ শুরু হয়, তখন থেকেই কতজন তা আল্লাহর কালাম হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে! তাদেরকে কুরআনে কারীম চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে বিভিন্ন ভাষায়—যদি বিশ্বাস না করো তাহলে এর মতো একটি আয়াত বানিয়ে নিয়ে এসো। কোথাও বলা হয়েছে—একটি সুরা রচনা করে নিয়ে এসো। সেই চ্যালেঞ্জ তারা গ্রহণ করার সাহসও দেখিয়েছে। কিন্তু নিজেরাই নিজেদের ব্যর্থতার স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। এই হচ্ছে আমাদের গর্বের ধন মহাগ্রন্থ আলকুরআন। এ পবিত্র গ্রন্থটি অবতীর্ণ হওয়ার অনন্য বৈশিষ্ট্য বুকে ধারণ করে আছে এই শবে কদর।

ইমাম বায়হাকী রহ. তাঁর সুবিখ্যাত হাদীসগ্রন্থ ‘শুআবুল ঈমান’-এ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি ভাষণ সংকলন করেছেন। একবার পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগের দিন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই ভাষণ প্রদান করেছিলেন। রমজান মাসের ফজিলত ও গুরুত্ব তিনি সবিস্তারে সেখানে তুলে ধরেন। ভাষণের শুরুটা ছিল এমন—‘এক মহান ও বরকতময় মাস তোমাদের সামনে আসন্ন। এ মাসে একটি রাত এমন রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। …’[হযরত সালমান ফার্সী রা. এর সূত্রে বর্ণিত। শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৩৩৩৬, সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস : ১৮৮৭]

 

বছরের বার মাসের মধ্যে রমজান মাস অনন্য মর্যাদায় ভাস্বর। সে মাসটি আগমনের পূর্বমুহূর্তে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সাহাবায়ে কেরামকে সতর্ক ও অবহিত করছেন এর ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে, তখন প্রথমেই বলছেন শবে কদরের কথা। রাতটিকে তিনি বলেছেন হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। হুবহু একই ভাষ্য পবিত্র কুরআনেও রয়েছে। এই রাতটি এমনই এক রাত, যে রাত নিয়ে কুরআনে কারীমে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল হয়েছে। পুরো সুরাটিতে এ রাতের মাহাত্ম্য ও ফজিলতের কথাই বলা হয়েছে। শবে কদরের ফজিলত বোঝার জন্যে এই একটি বিষয়ই যথেষ্ট।

পবিত্র কুরআনের উপস্থাপন দেখুন—‘আমি এ কুরআন অবতীর্ণ করেছি লায়লাতুল কদরে। আপনি কি জানেন, লায়লাতুল কদর কী? লায়লাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।…’ [সুরা কদর, আয়াত : ১-৩] যেন শবে কদরের প্রথম পরিচয়ই হচ্ছে, তা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।

ইমাম মালিক রহ. তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থ ‘মুআত্তা’য় বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একবার পূর্ববর্তী উম্মতের বয়সের বিষয়টি অবহিত করা হলো। তাঁর উম্মতের বয়স তখন তাঁর কাছে খুব কম মনে হলো—অন্যরা দীর্ঘ জীবন লাভ করার কারণে যে নেকি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, তারা তো তা পারবে না। এ পরিপ্রেক্ষিতেই আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এ লায়লাতুল কদর দান করেন, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। [মুআত্তা, হাদীস : ৬৯৮] এ হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এ মর্যাদাপূর্ণ রাতটি এ উম্মতের জন্যে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক বিশেষ উপহার। এমন হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোনো রাত পূর্ববর্তী কোনো উম্মতেরই ছিল না।

একটি রাত হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ—বিষয়টি অবশ্যই বিশ্লেষণসাপেক্ষ। এক হাজার মাসে প্রায় ত্রিশ হাজার রাত। বছরের হিসেবে তা তিরাশি বছর চার মাস। হযরত মাওলানা মনযুর নুমানী রহ. এ শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে—আল্লাহ তায়ালার যে বান্দারা তাঁর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে এবং তাঁর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য প্রত্যাশা করে, তারা এই এক রাতে এতদূর এগিয়ে যেতে পারে, যা অন্য হাজার হাজার রাতেও সম্ভব নয়। এই পার্থিব জগতেও আমরা দেখি, দ্রুতগামী উড়োজাহাজ কিংবা রকেটের মাধ্যমে একদিন বা একঘণ্টায় যতদূর অতিক্রম করা যায়, প্রাচীনকালে কয়েক বছরেও ততটুকু দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব হতো না। একইভাবে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যের অন্বেষায় থাকে, তারা এ শবে কদরে দ্রুততার সাথে এত অধিক পথ পাড়ি দেয়, যা তাদের পক্ষেও অন্য অনেক মাসেও অতিক্রম করা সম্ভব নয়। [মাআরিফুল হাদীস, খ. ৪, পৃ. ১০২] আল্লামা শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. বলেছেন, ‘এ রাত যে ইবাদতে কাটায় সে যেন এক হাজার মাস ইবাদতে কাটাল, বরং তার চেয়েও বেশি।’ [তাফসীরে উসমানী, পৃ. ৭৯৭]

আরবী ভাষায় সাধারণত এক হাজারই সর্বোচ্চ সংখ্যানির্দেশক শব্দ। আরবীতে বলা হয় ‘আলফ্’। এক লক্ষ বলতে হলে আরবীতে ‘মিআতু আলফ’ বা একশ হাজার বলে বোঝানো হয়। এজন্যে কোনো কোনো মুফাসসির এ এক হাজার মাসকে বাস্তবিক অর্থের পরিবর্তে রূপক অর্থে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে, এখানে এক হাজার মাস নয়, বরং হাজার হাজার মাস তথা মহাকাল উদ্দেশ্য। [তাফসীরে কুরতুবী, সুরাতুল কদর] এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়। বলা হচ্ছে—শবে কদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। হাজার মাসের মূল অর্থ হোক কিংবা রূপক অর্থ হোক, এ রাতটি হাজার মাসের তুলনায় কতগুণ শ্রেষ্ঠ তা কিন্তু এ আয়াতে বলা হয়নি। দ্বিগুণ চারগুণ দশগুণ একশগুণ—সবকিছুই তো হতে পারে। [তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন, খ. ৮, পৃ. ৭৯৩]

আরবিতে ‘কদর’ শব্দটি মর্যাদা ও সম্মান অর্থেও ব্যবহৃত হয়, আবার ‘ভাগ্য’ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। সে হিসেবে শবে কদর অর্থ মর্যাদার রাত কিংবা ভাগ্যের রাত। রাতটি যেহেতু অতুলনীয় মর্যাদার অধিকারী, সেই অর্থেই এর নাম ‘মর্যাদার রাত—শবে কদর’। কেউ কেউ এমনও বলেছেন, এ রাতে ইবাদত ও তওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে যে কোনো সাধারণ বান্দা মহান প্রভুর দরবারে প্রভূত মর্যাদার অধিকারী হতে পারে। তাই এ রাতটি মর্যাদার রাত। আর যারা একে ভাগ্যরজনী বলেছেন তাদের ব্যাখ্যা হচ্ছে, পরবর্তী এক বছরে যা কিছু আল্লাহ তায়ালা পুরো সৃষ্টিজগতের জন্যে নির্ধারিত করে রেখেছেন, তা ফেরেশতাদেরকে এ রাতে বুঝিয়ে দেন। সেই অর্থেই রাতটি ভাগ্যের রাত।

শবে কদরে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার এক অর্থ আমরা শুরুতেই বলে এসেছি—এ রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর কুরআন অবতারণের বরকতময় ধারা শুরু হয়। তবে কেউ কেউ বলেছেন, এ রাতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, পুরো কুরআন একসাথে এ রাতে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আকাশে অবতীর্ণ হয়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রেক্ষিতে পুরো কুরআন সুদীর্ঘ তেইশ বছরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ হয়।
এত মর্যাদা ও ফজিলতের রাতটি অবশ্য পুরোপুরি নির্দিষ্ট নয়। কুরআনে কারীমের ভাষ্য থেকে এতটুকু বোঝা যায়—শবে কদর রমজানের কোনো এক রাতেই হবে। সুরা বাকারায় বলা হয়েছে, ‘রমজান মাসে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে।’ আবার সুরা কদরে বলা হয়েছে, ‘আমি তা শবে কদরে অবতীর্ণ করেছি।’ কিন্তু রমজান মাসের কোন রাতটি শবে কদর তা আর নির্দিষ্ট করা হয়নি। হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর তালাশ করো। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ২০১৭] এ হাদীস অনুযায়ী ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯—রমজানের এ পাঁচ রাতের যে কোনো এক রাতে শবে কদর হতে পারে। আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত উবাদা ইবনে সামেত রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন শবে কদরের খবর দেওয়ার জন্যে (যে তা কোন দিন হবে) বের হয়ে এলেন। কিন্তু তখন দুজন মুসলমান ঝগড়া-কলহে লিপ্ত হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, আমি তোমাদেরকে শবে কদরের খবর দেওয়ার জন্যে বের হয়েছিলাম। কিন্তু অমুক অমুক তখন ঝগড়া করছিল। ফলে তা তুলে নেওয়া হয়। হয়তো তা-ই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর হবে। এখন তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম (অর্থাৎ ২৯, ২৭ ও ২৫ তারিখের) রাতে তা তালাশ করো। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ২০২৩] তবে ব্যাপকভাবে রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত (অর্থাৎ ২৭ রমজানের রাত)টিকেই শবে কদর হিসেবে পালন করা হয়। হাদীসের কিতাবে শবে কদর হিসেবে এ রাতটির কথা বিশেষভাবে আলোচিতও হয়েছে। যেমন, বুখারী শরীফেরই বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুয়াজ্জিন হযরত বিলাল রা. বলেছেন, শবে কদর ২৭ রমজানের রাতে। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৪৪৭০] হাদীসের এ ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যের কারণে হাদীসবিশারদ উলামায়ে কেরাম বলেছেন, রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি বেজোড় রাতেই শবে কদর তালাশ করা উচিত।

আহলে দিল বুজুর্গগণ অনেক সময় বুঝতে পারেন—কোন রাতটি শবে কদর। এটা অবশ্য সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। কেউ কেউ শবে কদরের বিভিন্ন আলামতের কথাও বলেছেন। যেমন, রাত প্রস্ফুটিত উজ্জ্বল পরিচ্ছন্ন হবে, নিঝুম-নিথর হবে, অতি গরমও হবে না, অতি ঠা-াও হবে না, রাত শেষে সকাল বেলা সতেজ আলো ছাড়া সূর্য উদিত হবে, ইত্যাদি। [ফাযায়েলে আমল দেখুন ] তবে এসব আলামত প্রকাশিত হওয়া শবে কদরের কোনো অপরিহার্য বিষয় নয়। তাই যদি এসব কোনো আলামত প্রকাশ না-ও পায়, তবু আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশী যারা, তারা যেন শেষ দশকের প্রতিটি বেজোড় রাতই ইবাদত-বন্দেগিতে কাটায়।

যে একটি রাতের ইবাদত একজন বান্দাকে হাজার মাসের দূরত্ব এগিয়ে দিতে পারে, সে রাতের ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত তো ভিন্নভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না। তা সত্ত্বেও হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় শবে কদরের রাতে নামাজে দ-ায়মান থাকে, তার সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ [সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮০২]

পক্ষান্তরে এত এত ফজিলত ও মর্যাদা সত্ত্বেও যদি কেউ এ রাতটি গাফিলতির সাথে কাটিয়ে দেয়, তাহলে তার চেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত আর কে হতে পারে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টই বলেছেন, ‘এই রাত থেকে যে মাহরুম ও বঞ্চিত হলো, সে অবশ্যই সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। আর প্রকৃত মাহরুম ও বঞ্চিত যারা, তারাই কেবল এ রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকতে পারে।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৬৪৪]

হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আমি যদি জানতে পারি—এই রাতটি শবে কদর, তাহলে আমি কোন দোয়াটি পড়ব?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তখন দোয়া শিখিয়ে দিলেন, اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল, সম্মানিত, ক্ষমা করে দেওয়াকে তুমি খুবই পছন্দ কর, তাই তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। [জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৫১৩]

বলাবাহুল্য, দোয়াটি অতি ব্যাপক অর্থবোধক। আল্লাহ তায়ালা যদি নিজ দয়া ও অনুগ্রহে কোনো বান্দাকে ক্ষমা করে দিয়ে পরকালের হিসাব-নিকাশ ও জবাবদিহি থেকে রেহাই দেন, তাহলে আখেরাতে বিশ্বাসী বান্দার জন্যে এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!

যে কোনো নফল ইবাদত, বিশেষত নামাজ, তেলাওয়াত, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদির মাধ্যমে এ রাতটি কাটানো যেতে পারে। এ রাতে কোনো বিশেষ পদ্ধতির নামাজ নেই। বিশেষ বিশেষ সুরা মিলিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক রাকাত নামাজের কথারও কোনো ভিত্তি নেই। যার যত রাকাত ইচ্ছা, যে কোনো সুরা দিয়ে ইচ্ছা নামাজ পড়তে পারে। যতক্ষণ ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা, যে কোনো নফল ইবাদত করতে পারে। শবে কদরের পুরো রাতটিতেই কল্যাণ বিস্তৃত। কুরআনে কারীমে তাই বলা হয়েছে, ‘তা (অর্থাৎ এর কল্যাণ ও বরকত) ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত।’ [সুরা কদর, আয়াত : ৫]

তবে নফল ইবাদত যেন ফরজ ইবাদতে ব্যাঘাত না ঘটায়। এমন যেন না হয়, সারা রাত নফল ইবাদত করে কেউ ফজরের জামাতে উপস্থিত হতে পারল না। মুসলিম শরীফের হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ইশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত নফল নামাজ পড়ল, আর যে ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন পুরো রাতই নফল নামাজ পড়ল।’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৫২৩] তাই শবে কদরে যে এ দুটি নামাজ জামাতের সাথে আদায় করবে, সে পুরো রাত নফল নামাজ পড়ার সওয়াব পেয়ে যাবে। এর অতিরিক্ত যতটুকু ইবাদত-বন্দেগি করবে, ততটুকু অতিরিক্ত সওয়াবও সে পাবে।

Comments
  1. প্রত্যেক দেশের জন্য শবে কদর কি আলাদা আলাদা রাতে হবে?
    নাকি সারা দুনিয়ায় শবে কদর এক রাত্রেই হয়

    1. প্রত্যেক দেশের জন্য আলাদা। যদি একই রাতে একই সময়ে হতে হয়, তবে বাংলাদেশে যখন রাত শুরু হয়, সৌদি আরবে তখনো দিন থাকে, আবার সৌদিতে রাত কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকতেই বাংলাদেশে রাত শেষ হয়ে যায়। আমেরিকাতে যখন রাত বাংলাদেশে তখন দিন। একই সময়ে যদি হতে হয়, তবে কোন দেশের রাতের হিসাব হবে? এ প্রশ্নটি তাই অবান্তর। প্রত্যেক দেশের মুসলমানগণ সে দেশের হিসাবেই শবে কদর পালন করবেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এ লেখাটি পড়ুন-
      https://www.alkawsar.com/bn/article/2186/

  2. Good

  3. Very intaresting🥰

  4. Alhamdulillah, aato sundar kotha uposthapon korar joonno,muslim day app ke onek onek thanks….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ