Post Updated at 19 Mar, 2023 – 9:16 PM

দোয়া মানে ডাকা। দোয়া মানে মহান প্রভু আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বান্দার প্রার্থনা। ইহকালীন ও পরকালীন সুখ-শান্তির জন্যে বিপদ থেকে মুক্তির জন্যে এবং সার্বিক কল্যাণের জন্যে মানুষ আল্লাহর কাছে দোয়া করে থাকে। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই কুরআন শরীফে বলে দিয়েছেন, তোমরা আমাকে ডা, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। [মুমিন : ৬০]

দোয়া হচ্ছে বন্দেগি ও দাসত্ব প্রকাশের চূড়ান্ত মাধ্যম। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বিশেষ কিছু গুণাবলিতে গুণান্বিত ছিলেন, এর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ হচ্ছে তার গোলামি ও দাসত্ব। মানুষকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিই করেছেন তার ইবাদত ও দাসত্ব করার জন্যে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি মানুষ ও জিন জাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছি। [যারিয়াত : ৫৬]

 

সঙ্গত কারণেই যে যত বেশি আল্লাহর দাসত্ব করতে পারবে, তার ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির উদ্দেশ্য ততই পূর্ণতা পাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বকালের সকল মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতকারী। মহান সৃষ্টিকর্তার দাসত্ব তিনি সবচেয়ে বেশি পালন করেছেন। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। সর্বশেষ নবী ও রাসূল ছিলেন। সকল নবী ও রাসূলের সর্দার ছিলেন। কিন্তু এত সব বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে জায়গায় জায়গায় তাঁকে বান্দা ও দাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

যেমন, পুরো মানবজাতির মাঝে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ মেরাজের সম্মানে ভূষিত করেছিলেন। এক রাতে পবিত্র মক্কা নগরী থেকে বাইতুল মুকাদ্দাসে নিয়ে যাওয়া, সেখান থেকে সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে সরাসরি আল্লাহর দিদার লাভ করা এবং সবশেষে আবার সেই রাতেই নিজের ঘরে ফিরে আসার এমন কোনো ঘটনা মানব ইতিহাসে একমাত্র তাঁর জীবনেই ঘটেছিল। অথচ আল্লাহ তায়ালা এমন মহান ঘটনাটির বিবরণ দিচ্ছেন এভাবে মহান সেই সত্তা যিনি তাঁর বান্দাকে রাতের বেলা মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসায় নিয়ে গেলেন…। [সুরা বনি ইসরাইল : ১] এ থেকেই আন্দাজ করা যায়, মহান প্রভুর গোলামি ও দাসত্বের পূর্ণতার মধ্যেই নিহিত একজন মানুষের পরিপূর্ণ সফলতা।

নামাজ রোজা হজ জাকাত ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে মানুষ তার প্রভুর ইবাদত ও দাসত্ব করে থাকে। কিন্তু দাসত্বের পূর্ণ রূপ প্রকাশ পায় দোয়ার মধ্য দিয়েই। হয়তো নিজের কোনো প্রয়োজনে কিংবা পরকালীন মুক্তির আশায় সে যখন প্রভুর সামনে হাত তুলে দোয়া করতে থাকে, কান্নাকাটি করতে থাকে, তখন তার ভেতর বাহির সবটাই আল্লাহর গোলামিতে ডুবে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশির ভাগ সময়ই এ দোয়ার মধ্যে ডুবে থাকতেন। তাই বলা যায়, দোয়া মুমিনের দাসত্ব ও গোলামিতে পূর্ণতা বিধান করে।

হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, দোয়াই ইবাদত। [তিরমিযী, ২৯৬৯] অর্থাৎ নামাজ রোজা হজ জাকাতের মতো দোয়াও একটি এবাদত। তাই আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চেয়ে দোয়া করার পর সে দোয়া কবুল হলে তো ভালো। কিন্তু যদি কবুল নাও হয়, তাহলেও এর সওয়াব পাওয়া যাবে। যেহেতু দোয়া একটি স্বতন্ত্র এবাদত। এর সওয়াব ও প্রতিদানের সাথে তা কবুল হওয়া বা না হওয়ার কোনোই সম্পর্ক নেই।

কেউ যদি কোনো মানুষের কাছে কিছু চায়, তাহলে সে বিরক্ত হয়, নাখোশ হয়। কিংবা প্রথম এক দুই বার খুশিমনে দিলেও পরে তার অবস্থা পাল্টে যায়। কিন্তু আল্লাহর কাছে কিছু না চাইলে বরং তিনি অসন্তুষ্ট হন। বান্দা তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে, চাইবে। আর তিনি বান্দার প্রার্থনা শুনবেন। সে প্রার্থনায় সাড়া দেবেন। এতেই তিনি সন্তুষ্ট। বরং তাঁর কাছে যে বান্দা যত বেশি চায় তার ওপর তিনি তত বেশি খুশি হন।

হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে প্রিয় কোনো কিছু নেই। [তিরমিযী, ৩৩৭০]

আরেক হাদীসে আছে, যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না, আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট হন। [প্রাগুক্ত, ৩৩৭৩] আরেকটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আল্লাহর কাছে তার অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। কেননা তিনি তার কাছে কিছু চাওয়াকে পছন্দ করেন। [প্রাগুক্ত, ৩৫৭১]

Comments
  1. (১) কুরআন মাজীদ (শরীফ)
    (২) নামাজ, যাকাত, হজ্ব ও রোজা।

  2. Ma sha Allah.
    Khub darun.

  3. খুব ভালো

  4. খুব ভালো হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ