Post Updated at 11 Mar, 2023 – 8:36 PM

আমাদের সমাজে একটা ভুল আমলের প্রচলন রয়েছে। তা হচ্ছে মসজিদে প্রবেশ করে আগে বসা। এরপর উঠে নামায আদায় করা। এই কাজটা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনার বিপরীত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করে অন্তত দুই রাকাত নামায আদায় না করে বসতে নিষেধ করেছেন। অথচ আমরা অনেকেই এর বিপরীত কাজটা করে থাকি।

দুখুলুল মসজিদ সালাত কখন পড়তে হয়?

মসজিদের হক্ব হচ্ছে সেখানে প্রবেশের পর নামায আদায় করা। একে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায নামে অভিহিত করা হয়। এ নামাযের জন্য বিশেষ কোনো সূরা বা পদ্ধতি নাই। স্বাভাবিক দুই রাকাত সুন্নত বা নফল নামাযের মতোই এ নামায। শুধু মনে মনে নিয়ত থাকবে যে, মসজিদে প্রবেশ করার পর নবী (সা) অন্তত ২ রাকাত নামায আদায় করতে বলেছেন। সেই নামাযটি আদায় করছি। অন্তরের intention-ই নিয়ত।

যেসব ফরয নামাযের আগে দুই বা চার রাকাত সুন্নত পড়তে হয় সেসব নামাযের আগে মসজিদে প্রবেশ করলে ঐ সুন্নতগুলো আদায় করলেই তা তাহিয়্যাতুল মাসজিদ হিসাবে গণ্য হবে। আর যদি তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আর ফরজের আগের সুন্নত আলাদা করে পড়ার সুযোগ থাকে তাহলে সেটা আরও ভালো। কারণ এতে বেশি পরিমাণ নামায আদায়ের সুযোগ হয়।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতের উপর নিয়মিত আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সম্পর্কে দুটি প্রসিদ্ধ হাদীস নিচে তুলে ধরা হলো।

তাহিয়্যাতুল মসজিদ – হাদীসঃ ১

আবূ কাতাদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ

“তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন দু’রাক’আত নামায (তাহিয়্যাতুল–মসজিদ ) আদায় করার পূর্বে না বসে।”

(বুখারী ১১৬৭)

তাহিয়্যাতুল মসজিদ – হাদীসঃ ২

আবূ কাতাদাহ্‌ সালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

“তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকা’আত নামায আদায় করে নেয়।”

(বুখারী ৪৪৪)

তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ কখন পড়া যাবে না?

তবে যখন নফল নামায পড়া যায় তখনই কেবল তাহিয়্যাতুল মাসজিদ পড়া যাবে। যে সময় নফল বা সুন্নত নামায পড়া নিষিদ্ধ, তখন যদি কেউ মসজিদে যায় তবুও সে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায পড়তে পারবে না। যেমন, ফজরের ফরজ নামায পড়ার পর থেকে সূর্যোদয়ের পর পর্যন্ত এবং আসরের ফরজের পর থেকে মাগরিবের ফরজ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোনো নফল বা সুন্নত পড়া যায় না। একইভাবে সূর্য যখন মধ্য আকাশে থাকে তখনও কোনো প্রকার নামাযই পড়া যায় না।

আর ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পর থেকে ফজরের ফরজ পড়ার আগ পর্যন্ত সময়টাতে কেবল দুই রাকাত ফজরের সুন্নত পড়া যায়। অন্য কোনো সুন্নত বা নফল পড়া যায় না। তাই এ সময়গুলোতে তাহিয়্যাতুল মাসজিদের নিয়তে কোনো নামায পড়া যাবে না।

তথ্যসূত্র

  1. একটি ভুল মাসআলাঃ আযানের আগে কি সুন্নত পড়া নিষেধ? – মাসিক আলকাউসার
  2. একটি ভুল মাসআলাঃ মসজিদে গিয়ে কি আগে বসতে হয় তারপর নামাজ পড়তে হয়? – মাসিক আলকাউসার
Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ