Press ESC to close

রুকু-সিজদা-শেষ বৈঠকের মাসায়েল

Post Updated at 30 Jan, 2025 – 12:05 PM

রুকুর মাসায়েল

প্রত্যেক রাকাতের কিয়াম শেষে একবার রুকু করা ফরয। [সূরা হজ : ২২ : ৭৭; রদদুল মুহতার, ২/১৩৪]

সাহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচীর জন্য ডাউনলোড করুন মুসলিমস ডে অ্যাপ

কেরাত শেষ করার পর তাকবির বলে রুকুুতে যাবে। রুকুতে দুই হাত দিয়ে দুই হাঁটু ধরবে এবং কোমর পিঠ ও মাথা এক বরাবর রাখবে। রুকুতে অন্তত তিনবার তাসবিহ পড়া সুন্নত। 

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো জরুরি

রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো ওয়াজিব। যদি কেউ রুকু থেকে সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে, বরং সামান্য একটু মাথা তুলে সিজদায় চলে যায়, তাহলে একটি ওয়াজিব ছুটে যাবে। তখন তার এ নামায আবার পড়া ওয়াজিব হবে।

সিজদার মাসায়েল

সকল নামাযের প্রত্যেক রাকাতে দুটি করে সিজদা করা ফরয। [সূরা হজ : ২২ : ৭৭; ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১/৭০; রদদুল মুহতার, ২/১৩৪]

 

দাঁড়ানো থেকে তাকবির বলে সিজদায় যাবে। সিজদায় দুই হাত এমনভাবে মাটিতে রাখবে, যেন চেহারা দুই হাতের মাঝে থাকে। দুই বাহু দুই পার্শ্ব থেকে, কনুই জমিন ও হাঁটু থেকে  এবং উরু পেট থেকে পৃথক রাখবে। প্রতি সিজদায় অন্তত তিনবার তাসবিহ পড়া সুন্নত। 

নামাযে কিয়াম-রুকু-সিজদার মধ্যকার ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও ফরয। এ বিষয়ে সামনে আলোচনা করা হবে।

সিজদায় যদি মাটিতে নাক না লাগায়

সিজদার সময় মাটিতে কপাল ও নাক লাগিয়ে রাখাই নিয়ম। কিন্তু কেউ যদি শুধু কপাল মাটিতে লাগিয়ে রাখে, নাক না লাগায়, তাহলে অবশ্য সিজদা আদায় হয়ে যাবে। তবে যদি কেউ শুধু নাক মাটিতে লাগায় এবং কপাল না লাগায় তাহলে সিজদা আদায় হবে না। আর সিজদা না হলে নামাযও হবে না। এ নামায পুনরায় পড়া ফরয। অবশ্য ওজরবশত হলে ভিন্ন কথা। 

দুই সিজদার মাঝে বসা

দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। প্রথম সিজদা থেকে মাথা যদি সামান্য একটু তুলে আবার দ্বিতীয় সিজদায় চলে যায়, তাহলে ওয়াজিব ছেড়ে দেয়ার কারণে নামায পুনরায় পড়া ওয়াজিব হবে। 

নরম বিছানায় সিজদা

ফোম বা এ জাতীয় নরম বিছানায় যদি নামায আদায় করা হয়, তাহলে সিজদার সময় মাথা খুব চেপে রাখতে হবে, যেন কপালটা এক স্থানে স্থির থাকে। জায়গা যদি এত নরম হয় যে, সেখানে কপাল স্থির করা সম্ভব নয়, কিংবা সম্ভব হলেও নামাযী চাপ দিয়ে যদি স্থির না করে, তবে সিজদা আদায় হবে না। ফলে নামাযও হবে না।

ভিড়ের কারণে কারও পিঠে সিজদা করা

যদি জুমা ঈদ কিংবা অন্য কোনো নামাযে প্রচণ্ড ভিড় হয় এবং স্থান সংকুলান না হয়, তাহলে প্রয়োজনে পেছনের কাতারের মুসল্লি সামনের কাতারের মুসল্লির পিঠের ওপরও সিজদা করতে পারবেন। সাহাবী-তাবেয়ীদের আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত। [ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/৭০] তবে স্বাভাবিক সময়ে, যখন স্থানসংকুলান জাতীয় কোনো সংকট থাকবে না, তখন পায়ের জায়গা থেকে সিজদার জায়গা আধাহাতের (অর্থাৎ নয় ইঞ্চির) চেয়ে অধিক উচু হলে নামায শুদ্ধ হবে না। 

রুকু-সিজদার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা

রুকু-সিজদার ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও ফরয। অর্থাৎ আগে রুকু, এরপর সিজদা করতে হবে। কেউ যদি ভুলে কেরাত পড়া শেষে সোজা সিজদায় চলে যায়, তাহলে তার এ সিজদা আদায় হবে না। বরং ফিরে এসে আগে রুকু করবে, এরপর পুনরায় সিজদা আদায় করতে হবে। 

শেষ বৈঠক

নামাযের শেষ রাকাতে সালাম ফেরানোর পূর্বে বসাকে শেষ বৈঠক বলে। শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাসূরা পড়ে সালাম ফেরাতে হয়। তবে শেষ বৈঠকে আততাহিয়্যাতু পড়তে যতক্ষণ সময় লাগে ততক্ষণ বসা ফরয। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৯৭২; রদদুল মুহতার, ২/১৩৭] 

মাওলানা শিব্বীর আহমদ

উসতাযুল হাদীস, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মোহাম্মদপুর। মাসিক আলকাউসারসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর লিখিত বইও পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। তিনি মুসলিমস ডে অ্যাপের শরয়ী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ২,২১০,১৯২

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন