Post Updated at 22 Apr, 2023 – 8:59 AM

ঈদের দিন জামাআতের সাথে ২ রাকাত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। এই নামাজে অতিরিক্ত ৬টি তাকবীর দেয়া হয়ে থাকে। প্রতি বছর ২ বার আমাদের জীবনে ঈদ আসে। তাই ঈদের সালাতের নিয়মটি ভুলে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। আসন্ন ঈদের দিন যেন আমরা জেনে বুঝে ঈদের সালাত আদায় করতে পারি এজন্য ঈদের ২ রাকাত সালাতের নিয়মটি ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হলো।

নিয়ত করা

অন্যান্য নামাজের ন্যায় এই নামাজের জন্যও নিয়ত করা ফরজ। আমি ইমামের পেছনে ঈদুল ফিতরের (কিংবা আযহার) ২ রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি- মনে মনে এই সংকল্প বা intention থাকাই যথেষ্ট। আরবি বা বাংলায় নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্যে মুখে উচ্চারণ করে “নিয়ত পড়া” জরুরি নয়।

 

তাকবীরে তাহরিমা বলে নামাজ শুরু করা

ইমাম সাহেব তাকবীরে তাহরিমা “আল্লাহু আকবার” বলে নামাজ শুরু করবেন। উপস্থিত সকল মুক্তাদি তার সঙ্গে তাকবিরে তাহরিমা বলে নামাজ শুরু করবেন।েএরপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় ইমাম সাহেবসহ সকলেই মনে মনে “সানা” পড়বেন।

১ম রাকাত : অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর

  1. “সানা” পড়া শেষ হলে ইমাম সাহেব ৩ বার “”আল্লাহু আকবার”” বলে তাকবীর দিবেন। মুক্তাদিরাও সকলে তার সঙ্গে তাকবীর বলবেন। অন্য সকল নামাজের মতোই এখানেও ইমাম সাহেব জোরে তাকবীর বলবেন আর মুক্তাদিরা আস্তে তাকবীর বলবেন।
  2. প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিতে হবে।
  3. দ্বিতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিতে হবে।
  4. তৃতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত নাভির নিচে বেঁধে নিতে হবে। (প্রথম ২ তাকবীরের মত হাত ছেড়ে দেয়া যাবে না)
  5. এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং অন্য কোনো সূরা মিলাবেন। এরপর অন্যান্য সালাতের ন্যায় রুকু-সিজদা আদায় করে ইমাম সাহেব ১ম রাকাত শেষ করে ২য় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে মুক্তাদিরা যথারীতি ইমামের অনুসরণ করবেন।

২য় রাকাতঃ অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর

  1. ২য় রাকাতের শুরুতে ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পড়বেন। এরপর অন্য কোনো সূরা বা সূরার অংশ তিলাওয়াত করবেন। রুকুতে যাওয়ার আগে ইমাম সাহেব ৩টি অতিরিক্ত তাকবীর দেবেন। মুক্তাদিরাও তার সঙ্গে তাকবীর দেবেন।
  2. প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দেবেন।
  3. দ্বিতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দেবেন।
  4. তৃতীয় তাকবীরের সময়েও কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দেবেন।
  5. এরপর ইমাম সাহেব চতুর্থ তাকবীর বলবেন। এটি হচ্ছে মূলত রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর। এ তাকবীর শুনে আমরা রুকুতে চলে যাব। এরপর বাকি সকল নিয়মকানুন অন্যান্য নামাজের মতোই। সকলেই ইমামকে অনুসরণ করে ২ রাকাত নামাজ শেষ করবেন।
  6. সালতের পরে ইমাম সাহেব ২টি খুতবা দিবেন। খুতবা শোনা ওয়াজিব। অনেককেই দেখা যায় সালাত শেষে উঠে চলে যান। এটি গর্হিত অন্যায় একটি কাজ।

ঈদের সালাতে আমরা মূলত অতিরিক্ত তাকবীর নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকি। অতিরিক্ত তাকবীরের সময় দেখা যায় কেউ হাত তুলে হাত ছেড়ে দেন, কেউ বা আবার বেঁধে ফেলেন। কেউ বা আবার ভুলে রুকুতে চলে যান। আশা করি আসন্ন ঈদের সালাতে আমাদের এই ভুলগুলো হবে না।

সংক্ষেপে তাকবীরের নিয়মটা বলা যায় এভাবেঃ

প্রথম রাকাতের সানার পরে ২ বার কান পর্যন্ত হাত তুলে ছেড়ে দিব। ৩য় তাকবীরে হাত বেঁধে ফেলব। আর ২য় রাকাতে রুকুর আগে ৩বার তাকবীরের সময়ই কান পর্যন্ত হাত তুলে হাত ছেড়ে দিব। চতুর্থ তাকবীরের সময় রুকুতে যাব। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ভাবে ঈদের সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

তথ্যসূত্রঃ
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
পৃষ্ঠাঃ ২৫৮
প্রকাশকালঃ জুন ২০০০

বিঃ দ্রঃ
ঈদের সালাতে অতিরিক্ত তাকবীর কয়টি হবে বা এর নিয়ম কী হবে এ বিষয়ে হাদীসের মাঝে ভিন্নতা রয়েছে। সুন্নাহের আলোকে হানাফী মাযহাবের মত অনুসারে উপরের পদ্ধতিটি লিখা হয়েছে। আপনি যদি ভিন্ন মাযহাবের অনুসারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মাযহাবের আলেমদের থেকে জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী আমল করতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার বা আলোচনার প্রয়োজন হলে অনুগ্রহ পূর্বক আলেমদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো। জাযাকাল্লাহু খাইর।

আরো জানতে

  1. শাস্ত্রীয় আলোচনা: ঈদের নামাযে ছয় তাকবীরের সহীহ হাদীস – মাসিক আলকাউসার
Comments
  1. ২ য় রাকাতে ২ বার হাত ছেড়ে দিয়ে ৩ য় বার হাত বেধে ৪ বার এর স্হানে রুকু তে গেলে হবে কি?

    1. নামাজ হয়ে যাবে। তবে নিয়মের একটু ব্যতিক্রম হলো।

  2. আসসালামু ওয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

  3. Mashallah khub sundor ekta app

  4. Subhanalla khub sundor

  5. Mashallah

  6. This is what we needed to know

  7. Nice topic

  8. মাশা-আল্লাহ

  9. Nc ap

  10. মহিলা দের কি ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব?

  11. মেয়েদের নামাজ এরকম কি পরব। না নিওম আলাদা। বল্লে খুবি বালউ হত। কস্ট করে বলেন যদি

    1. ঈদের নামাজ মেয়েদের জন্য পড়া ওয়াজিব নয়। কেউ যদি পর্দা রক্ষা করে ঈদগাহে মেয়েদের জন্য আলাদা স্থানে পড়তে পারে সেক্ষেত্রে তাকবীরগুলো একই নিয়মে দিবে। এক্ষেত্রে নারী-পুরুষের নামাজের যে পার্থক্য রয়েছে সেগুলো আগের মতই থাকবে। অর্থাৎ তাকবীর বলার জন্য হাত তোলা, বুকের উপর হাত বাধা এগুলো মেয়েরা মেয়েদের মত করবে।

  12. আলহামদুলিল্লাহ।

    অনেক অজানা বিষয় জানতে পারলাম। জাজাকাল্লাহ খাইরান ফা-ইন্নাল্লাহা শাকিরুণ 🥰🥰🥰🥰

  13. ZAZAKILLAH KHAIRAN.ami bujtay parram na kichu mono korben na… mosjiday to jawa jaby na..basha ki mayder eid ar namj pora ja..jaba bay onno namaj pori ow rokom..

    1. আমার জানা মতে বাসা থেকে পড়া যাবে না। আপনি বাসার পুরুষদেরকে নামাজে যেতে সহযোগিতা করা ও উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে সওয়াব পেতে পারেন।

  14. ৬তাকবীরের রেফারেন্স সহ দিবেন। রাসুল (সঃ) নিজে ৬তাকবীরে পড়েছেন অথবা পড়তে বলেছেন এরকম

  15. যাজাকাল্লাহ খাইরান

  16. আলহামদুলিল্লাহ

  17. আলহামদুলিল্লাহ।

  18. আমাদের এলাকায় ঈদের নামাজ বারো তাকবীরের সাথে আদায় করা হয়।প্রথম রাখাতে ছয় তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকাতে ছয় তাকবীরের সাথে।

  19. আলহামদুলিল্লাহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ