
Post Updated at 26 Jan, 2025 – 9:13 PM
১. প্রশ্রাব-পায়খানা বা বায়ুর চাপ নিয়ে নামায পড়া। তবে যদি কেউ অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে নামায পড়তে না পারে, বারবার তার ওজু ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়, তাহলে তার জন্যে অবশ্য এ অবস্থায় নামায পড়াও মাকরুহ হবে না।
একইভাবে যদি নামাযের সময় খুব সংকীর্ণ হয়ে পড়ে এবং প্রশ্রাব-পায়খানা সেরে নামায পড়তে গেলে নামায কাযা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, এমতাবস্থায় চাপ নিয়েও নামায পড়ে নেবে, কাযা করবে না। [ফাতাওয়া আলমগীরী, ১/১০৭]
২. বাইরের কোনো কিছুর দিকে তাকানো। তবে ঘাড় ঘুরিয়ে কোনো দিকে তাকালে মাকরুহে তাহরিমী হবে। আর ঘাড় না ঘুরিয়ে যদি শুধু চোখের কোনা দিয়ে ইমাম বা কাতারের ওঠাবসা দেখা হয় তাহলে তা মাকরূহ হবে না। অবশ্য অপ্রয়োজনে এতটুকু করাও অনুচিত।
৩. অপ্রয়োজনে মুখ ঢেকে নামায পড়া। [শারহুল মুনিয়া, ৩৪৫]
৩. কাতারে ফাঁকা রেখে দাঁড়ানো কিংবা সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও পেছনের কাতারে দাঁড়ানো।
৪. প্রাণীর দৃশ্যমান ছবিযুক্ত কোনো কাপড় পরে নামায আদায় করা। ছবিযুক্ত কাপড় পরা অবশ্য সবসময়ই মাকরুহে তাহরিমী, তাতে নামায পড়া হোক কিংবা না হোক। প্রাণীর ছবি ছাড়া অন্য কোনো ছবিতে অসুবিধা নেই। [রদ্দুল মুহতার, ২/৪১৬]
৫. সামনে কিংবা ডানে-বামে দৃশ্যমান প্রাণীর ছবি রেখে নামায পড়া। যদি পায়ের নিচে কিংবা বিছানায় অথবা সম্মানজনক নয় এমন কোথাও কোনো ছবি থাকে, এতে নামায মাকরুহ হবে না। [রদ্দুল মুহতার, ২/৪১৭]
৬. টাখনুর নিচে কাপড় থাকা। নামাযের বাইরেও এটি নিষিদ্ধ।
৬. খালি গায়ে কিংবা এমন অপরিচ্ছন্ন পোশাক, যা পরে সাধারণত ভদ্র সমাজে যাওয়া হয় না এমন পোশাকে নামায পড়া।
৭. নামাযে অধিকাংশ সময় চোখ বন্ধ রাখা।
৮. পুরুষের চুল বেঁধে রাখা। [শারহুল মুনিয়া, ৩৪৬]
৯. জামার হাতা গুটিয়ে নামায পড়া। নামাযে জামা-কাপড় স্বাভাবিক রাখতে হবে এবং নামায শুরু করার আগেই তা স্বাভাবিক করে নিতে হবে। কখনো তাড়াহুড়ো করে ভুলবশত হাতা গুটানো অবস্থায় নামায শুরু করে দিলে নামাযের ভেতরেই ধীরে ধীরে তা ঠিক করে নেয়া উচিত।
১০. নামাযে আঙ্গুল ফোটানো। এমনকি মসজিদে অবস্থানের পুরো সময়ই আঙ্গুল ফোটানো মাকরূহ। [শারহুল মুনিয়া, ৩৪৯]
১১. অপ্রয়োজনে শরীর কাপড় কিংবা নারীদের অলঙ্কার নাড়াচাড়া করা।
১২. ইশারায় কাউকে সালাম দেয়া বা সালামের জবাব দেয়া। মুখে উচ্চারণ করে দিলে অবশ্য নামায ভেঙ্গে যাবে।
১৩. যেখানে এমন আশঙ্কা রয়েছে- অন্য কেউ নামাযের মধ্যে হাসাবে, কিংবা অন্যদের কথায় নামাযে ভুল হতে পারে, সেখানে নামায পড়া।
১৪. কারও মুখের দিকে মুখ করে নামায পড়া।
১৫. আয়াত বা তাসবিহ আঙ্গুলে গণনা করা। তবে যদি আঙ্গুল টিপে টিপে হিসাব ঠিক রাখে, তাহলে মাকরুহ হবে না।
১৬. দ্বিতীয় রাকাতের কেরাত প্রথম রাকাতের কেরাতের দেড় গুণ বা এর চেয়ে বেশি হওয়া।
১৭. কোনো নামাযের জন্যে কোনো সূরাকে এমনভাবে নির্দিষ্ট করে নেয়া যে, কখনোই সে সূরা ছাড়া অন্য সূরা পড়া হয় না।
১৮. মাথায় বা কাঁধে চাদর দুদিক দিয়ে নিচে ঝুলিয়ে দেয়া। একইভাবে শরীরের জামা স্বাভাবিকভাবে না পরে কাঁধের ওপর জড়িয়ে রাখা।
১৯. খাবার প্রস্তুত থাকাবস্থায় প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে নামায পড়া। অবশ্য যদি নামাযের সময় এতটাই কম থাকে যে, খাবার খেতে গেলে সময় শেষ হয়ে যাবে, তাহলে অবশ্য আগেই নামায পড়ে নিতে হবে। এরপর খাবার খাবে।
২০. ফরয নামাযে অপ্রয়োজনে কোনো কিছুতে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো।
২১. তাড়াহুড়োর কারণে কেরাত পড়তে পড়তে রুকুতে চলে যাওয়া।
২২. অপ্রয়োজনে খোলা মাথায় নামায পড়া।
২৩. (পুরুষের জন্যে) কনুই পর্যন্ত মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে সিজদা করা।
২৪. জামাতের নামাযে ইমামের আগে মুক্তাদির রুকু-সিজদা ইত্যাদিতে চলে যাওয়া। আর তাকবিরে তাহরিমা যদি মুক্তাদি ইমামের আগে বলে তাহলে নামাযই হবে না।
২৫. জামাতের নামাযে মুক্তাদির সূরা ফাতেহা কিংবা অন্য কোনো সূরা পড়া।
Leave a Reply